ঢাকা : বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ আ্যকাউন্ট থেকে চুরি যাওয়া টাকা দ্রুততার সঙ্গে হস্তান্তরে ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকের মাকাতি সিটির জুপিটার স্ট্রিট শাখা ম্যানেজার মাইয়া সানতোস দেগুইতো অভিযুক্ত। গত ৫ ফেব্রুয়ারি বড় অংকের এ অর্থ অন্য অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরে শাখা সহকর্মীদেরও সহায়তা নেন দেগুইতো। পরে নিজের ব্যক্তিগত গাড়িতেও দুই কোটি পেসো নিয়ে যান তিনি।
বৃহস্পতিবার সিনেটের শুনানিতে সাক্ষ্য দেয়ার সময় চাঞ্চল্যকর এ তথ্য দিয়েছেন আরসিবিসির মাকাতি শাখার কাস্টমার সার্ভিস শাখার সাবেক প্রধান রুমায়াদো আগার্দো। তিনি জানান, গত ৫ ফেব্রুয়ারি ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন- আরসিবিসির জুপিটার শাখার ম্যানেজার মাইয়া সানতোস দেগুইতোর ব্যক্তিগত গাড়িতে কাগজের প্যাকেটে দুই কোটি পেসো নিয়ে যাওয়া হয়।
আগার্দো জানান, ওইদিন দুপুরে সহকারী ম্যানেজার অ্যাঞ্জেলা তোরেস ব্রাঞ্চের ক্যাশ বিভাগে ২ কোটি পেসো দেয়ার অনুরোধ জানান। সাড়ে ৫টায় ক্যাশ বিভাগে ট্রলি আসে। পরে ক্যাশ বিভাগ এ অর্থ বুঝিয়ে দেয়।
বিকেল সাড়ে ৬টা থেকে পৌনে ৭টার মধ্যে ট্রলি দিয়ে সব অর্থ ম্যানেজার দেগুইতোর রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। ওইসময় দেগুইতো তার রুমের বাইরে ছিলেন। সম্ভবত তিনি টেলিফোনে কারো সঙ্গে কথা বলছিলেন বলে সিনেট কমিটিকে জানান রুমায়াদো আগার্দো।
সিনেট কমিটির শুনানিতে রুমায়াদো আগার্দো আরো জানান, ব্যাংকের ম্যাসেঞ্জার জভি মোরেলস ওই অর্থ ট্রলিবক্স থেকে বের করে একটি পেপারব্যাগে ঢুকান। পরে তা ব্রাঞ্চের সহকারী ম্যানেজার অ্যাঞ্জেলা তোরেসের সহায়তায় ম্যানেজার দেগুইতোর গাড়িতে তোলেন।
রুমায়াদো আগার্দো বলেন, ‘ব্রাঞ্চের মূল দরজার সামনের টেবিলে বসে থেকে টাকা তোলা, ম্যানেজারের রুমে নিয়ে যাওয়া, গুণে পেপারব্যাগে ঢুকানো এবং সর্বশেষ ম্যানেজার দেগুইতোর গাড়িতে তোলা পর্যন্ত সবকিছু ভালোভাবেই লক্ষ্য করেছি। সন্ধ্যা হলেও ব্রাঞ্চের ভেতরে পর্যাপ্ত আলো থাকায় বিষয়গুলো আমার দেখতে অসুবিধে হয়নি।’
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে গচ্ছিত বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজার্ভ অ্যাকাউন্ট থেকে ১০১ মিলিয়ন ডলার অর্থ লোপাট হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের গোপন সুইফট কোর্ড ব্যবহার করে বিপুল অংকের এ লোপাট হয় গত ৫ ফেব্রুয়ারি। তবে এ ঘটনা তদন্তে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের মতে, অর্থ লোপাট হয়েছে ২৪ জানুয়ারি।
লোপাটের এ অর্থের ৮১ মিলিয়ন পাঠানো হয় ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকের মাকাতি সিটির জুপিটার স্ট্রিট শাখার চার অ্যাকাউন্টে। এ টাকা দ্রুততার সঙ্গে তুলে নিতে সহায়তা করেন ওই শাখার ম্যানেজার দেগুইতো।
চুরি যাওয়া বাকি ২০ মিলিয়ন ডলার পাঠানো হয় শ্রীলংকার একটি ব্যাংকে। অবশ্য প্রাপকের নামের বানানে ভুল থাকায় ওই অর্থ আটকে দেন সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কর্মকর্তারা।