ড. এ কে এম রিপন আনসারী
এডিটর ইন চীফ
গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ঢাকা: এমন সময় ছিল যখন মানুষ পারস্পরিক ভালবাসার বন্ধনে এমন ভাবে আবদ্ধ ছিল যে, বড়দের কথায় জীবন চলে গেলেও বেয়াদবী করতেন না। ছাত্র/ছাত্রীরা শিক্ষকের সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতেন না। ছেলে মেয়ে বাবা-মায়ের অবাধ্য হওয়ার প্রশ্নই ছিল না। কেই কাউকে খারাপ ভাষায় কথাও বলতেন না। যদি কখনো একটি অপমান জনক কথা হতো তাহলে এলাকায় পাড়া মহল্লায় হৈ চৈ পড়ে যেত। যে উমুঘ বেয়াদবী করেছেন। তার বিচার হবে। আর নানা মুখরোচক কথার ভয়ে অভিযুক্ত ব্যাক্তি কয়েকদিন বাড়ির বাইরেও যেতেন না। আর ছেলে মেয়েদের প্রেমও ছিল কিন্তু দেখা সাক্ষাত আকাশ কুসুম কল্পনার মত। এক সাথে প্রেমিক প্রেমিকা চলাফেরা করার দৃশ্য সৃষ্টি হলে তো শিলাবৃষ্টি শুরু হতো।
আগের সময়ের সাথে এখনকার সময় তুলনা করলে কষ্ট হয়। কারণ গ্লোবালাইজেশনের যুগে ভালবাসা পরিপক্ক হওয়ার কথা ছিল। অন্ধ ভালবাসার চোখ অপরেশন করে চোখের আলো আনা হয়েছে। ভালবাসা এখন অন্ধ নয় চোখে দেখে। কিন্তু তুলনা করলে মনে হবে অন্ধ থাকাই ভাল ছিল। কারণ অন্ধ ভালবাসায় পবিত্রতা ছিল। শৃষ্টাচার ছিল। শৃঙ্খলা ছিল। এখন ভালবাসার চোখ খোলে দেয়ায় আর কিছুই নেই। ভালবাসা এখন কাউকে চেনে না। ভাবাসার মোহে মা বাবা ভাই বোন বন্ধু বান্ধব আত্মীয় স্বজন পরস্পর পরস্পরকে খুন করতে পারছেন। প্রেমের নামে প্রেমিকাকে গনধর্ষন করে মেরে ফেলা হচ্ছে।গর্ভধারীনি মা তার সন্তানকে মেরে ফেলছেন। ওরশজাত বাবা তার সন্তানকে খুন করছেন। স্বামী স্ত্রীকে স্ত্রী স্বামী খুন করছেন। মানুষ মানুষকে খুন করে ৭২ টুকরো পর্যন্ত করছেন। যারা জনগনের নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন তারা জনগনকে খুন করছেন বলে একাধিক ঘটনা ঘটে গেছে।
সাধারণ মানুষের পাশাপাশি যারা দেশে পরিচালনা করছেন তাদের ভালবাসায়ও চির ধরেছে। রাষ্ট্রীয় ভালবাসায় বিশ্বাস না থাকায় কর্তারা পরস্পরকে বকাবকি করছেন। জনগনের টাকা খরচ করে তারা বকাবকিকে সংস্কৃতিতে পরিণত করছেন। কোন কথা অশালীন বা মিথ্যা হলেই বলা হচ্ছে ওই কথা রাজনৈতিক ছিল। মানে রাজনীতিতে মিথ্যা ও ভালবাসার প্রতারণা চলে।ক্ষমতার প্রয়োজনে মানুষ জরগনের আমানতকে খিয়ানত করে ভালবাসার প্রতি অসম্মান করেই। ফলে জনগন ও সরকারের মাঝে ভালবাসায় ফাটল ধরে গেছে।
বেশ কিছু দিন আগে থেকেই বর্তমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীরা, মন্ত্রী, এমপি ও নেতারা নিজেদের বচন ভঙ্গীতে ও কথা বার্তায় যে সব শব্দ প্রয়োগ করছেন তা নিম্ন শ্রেনীর মানুষও ব্যবহার করেন না সচরাচর। নাম উচ্চারণেও বেয়াদবী হচ্ছে। শেখ হাসিনা কে হাসিনা খালেদা জিয়াকে খালেদা বলা হচ্ছে। কখনো কখনো ওই সকল নেতাদের চরিত্র নিয়েও কুৎসা রটনা হয় খোদ জাতীয় সংসদেও। কোন নেতার সন্তান বৈধ কারটা অবৈধ ওই আলোচনাও হয় জাতীয় সংসদে। জনগনের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অর্জিত টাকা খরচ হচ্ছে বকাবকি ও কুৎসা রটনা করে। অথচ জনগনের অধিকার জনগনই পাচ্ছেন না। কিন্তু জনগন যা পাচ্ছে তা উল্টো। সেটা হল মিথ্যা ও প্রতারণমূলক ভালবাসার খেসারত। মানে হল, অপারেশনের আগে ভালবাসা ভাল ছিল। এখন ভালবাসার চোখে অপারেশন হওয়ায় ভালবাসা মন্দ হয়ে গেছে! তাহলে আগেই ভাল ছিল? না গরীবের পেটে পোলাও মাংস হজম হচ্ছে না! কোনটা সঠিক জনগনই ভাল জানেন।