কক্সবাজার: বঙ্গোপসাগরের বাকঁখালী মোহনায় বেসরকারি পরিবহন সংস্থার একটি কার্গো বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় নিখোঁজ দুই ক্রুর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে পাইলটসহ তিন জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হলো। এছাড়াও গুরুতর অবস্থায় আরও এক বিদেশিকে উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে, সকাল সোয়া ৯টার দিকে রানওয়ে থেকে উড্ডয়নের কয়েক মিনিট পর ক্রুসহ চার আরোহী নিয়ে উড়োজাহাজটি সাগরের বাকঁখালীর মোহনার নাজিরারটেক পয়েন্টে বিধ্বস্ত হয়।
নিহতরা হলেন- বিমানটির ক্রু মুরাদ কাপারত ও কো-ক্রু ইভান ডেমান।
কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন জানান, ট্রু এভিয়েশনের আন্তনভ-২৬ মডেলের ওই উড়োজাহাজটি কক্সবাজার ও যশোরের মধ্যে চিংড়ি পোনা পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হতো।
দুর্ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে বিমানের চার আরোহীর সবাই রাশিয়ার নাগরিক বলে দাবি করা হলেও কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানিয়েছেন, তারা ইউক্রেনের নাগরিক।
তিনি জানান, বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর এক জনের মৃতদেহ ও আরেক জনকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ সময় নিখোঁজ ছিলেন আরও দুই জন। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নিখোঁজ দুই জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
দুর্ঘটনা কবলিত বিমানটির পরিচালন সংস্থা ট্রু এভিয়েশনের স্টেশন ম্যানেজার এস এম হাসনাত জাহান জানান, বিমান আরোহীরা সবাই ইউক্রেনের নাগরিক। প্রথমে বিমানটির ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার কুলিশ আন্দ্রের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় আহত কো-ক্রু ডলোয়াডায়ম্যারকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সর্বশেষ বিমানটির ক্রু মুরাদ কাপারত ও কো-ক্রু ইভান ডেমানের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
সৈকত থেকে আধা কিলোমিটার দূরে সাগরে বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই বিমান বাহিনীর একটি টহল বিমান, কোস্টগার্ডের নৌযান ও স্থানীয় জেলেরা উদ্ধার কাজ শুরু করে। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরাও যোগ দেন।
কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের অপারেশন আব্দুল মজিদ জানান, সকাল ১০টার দিকে প্রথমে দুই জনকে স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে নিখোঁজ আরও দুই জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাগরে ভাটা শুরু হওয়ার কারণে দুর্ঘটনা কবলিত বিমানটি ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ২-৩ কিলোমিটার দূরে সরে গেছে। ফলে বিধ্বস্ত বিমানটি উদ্ধার কাজ ব্যহত হচ্ছে। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আবারও জোয়ার শুরু হলে বিমানটি সৈকতের অনেকটা কাছাকাছি চলে আসবে। তখন উদ্ধার করা সহজ হবে।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নোবেল কুমার বড়ুয়া জানান, প্রথমে হাসপাতালে আনা দুই জনের মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। আরেকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পরে আরও দুই জনের মৃতদেহ আনা হয়েছে।
কক্সবাজার বিমানবন্দরের ম্যানেজার সাধন কুমার মোহন্ত জানান, দুর্ঘটনা কবলিত বিমানটিতে ৯৭২টি চিংড়ি পোনা ভর্তি বক্স ছিল। সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে রানওয়ে থেকে উড্ডয়নের কয়েক মিনিট পরই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে কি কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।