এশিয়া কাপ ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। রোববার মিরপুরে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ভারত ৮ উইকেটে পরাজিত করেছে বাংলাদেশকে। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ করেছিল ৫ উইকেটে ১২০ রান। জবাবে ভারত ৭ বল বাকি থাকতে জয় তুলে নেয় ২ উইকেট হারিয়ে। তারা অপরাজিতভাবেই শিরোপা জয় করল।
আল আমিন হোসেন দ্বিতীয় ওভারেই রোহিত শর্মাকে আউট করে বাংলাদেশের আশা জাগিয়েছিলেন। কিন্তু শিখর ধাওয়ান (৬০), বিরাট কোহলি (৪১ অপ.), মহেন্দ্র সিং ধোনি (২০ অপ.) ভারতকে জয়ের পথে নিয়ে যান।
বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জিং স্কোর
এর আগে এশিয়া কাপ টুয়েন্টি টুয়েন্টি ক্রিকেটের ফাইনালে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ১৫ ওভারে ৫ উইকেটে ১২০ রান করে স্বাগতিক বাংলাদেশ। ফাইনাল জিততে ১২১ রান করতে হবে ভারতকে। সন্ধ্যায় বৃষ্টির কারণে ২ ঘন্টা পর শুরু হয় ফাইনাল ম্যাচটি। ফলে ১৫ ওভারে নামিয়ে আনা হয় শিরোপা লড়াইয়ের গুরুত্বপূর্ণ এ ম্যাচটি।
ফাইনাল ম্যাচ, তার মধ্যে আবার ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমে যাওয়া। তাই বাংলাদেশের উপর শুরুতে চাপ সৃষ্টি করতেই টস জিতেই প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্বান্ত নেন ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। দলপতির সিদ্বান্তটা সঠিক করতেই প্রথম ওভারে লাইন-লেন্থ দুর্দান্ত বজায় রাখেন টিম ইন্ডিয়ার স্পিনার রবীচন্দ্রন অশ্বিন। প্রথম চার বল সামলাতেই হিমশিম খান ওপেনার তামিম ইকবাল। পঞ্চম বলে ১ রান নিয়ে হাফ ছেড়ে একরকম বাঁেচন তামিম। তবে চাপ যে ছিলো না তা বুঝিয়ে দেন সৌম্য। ওভারের শেষ বলে দুর্দান্ত এক বাউন্ডারি হাকাঁন তিনি।
সৌম্যর বাউন্ডারিতে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন তামিম। তাতেই পরবর্তীতে দু’টি বাউন্ডারি আসে তামিমের ব্যাট থেকে। থেমে থাকেননি সৌম্য। এরপর আরও দু’টি বাউন্ডারি মারেন তিনি। দু’জনের রান তোলার চিত্র দেখে মনে হচ্ছিলো- স্বপ্ল দৈর্ঘ্যর ম্যাচে বড়সড় স্কোরই করবে বাংলাদেশ।
কিন্তু ৫ বলের ব্যবধানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে চিন্তায় পড়ে যায় বাংলাদেশ। এই অবস্থায় দলের চিন্তা দূর করার কাজটা ভালোভাবেই সাড়েন সাব্বির রহমান ও সাকিব আল হাসান। ভারতীয় বোলারদের উপর চড়াও হন তারা। তাতে কিছুটা লাইন-লেন্থহীন হয়ে পড়ে টিম ইন্ডিয়ার বোলিং। এই সুযোগে স্কোর বোর্ডে রানটা ভালোই তুলেছেন সাব্বির ও সাকিব।
রান তোলায় বেশি এগিয়ে ছিলেন সাকিব। দ্রুত রান তুলতে থাকেন তিনি। তবে অশ্বিনকে আবারো আক্রমণে এনে সাকিবের ইনিংসের ইতি ঘটান ধোনি। ৩টি চারে ১৬ বলে ২১ রান করেন সাকিব। আর সাব্বিরের সাথে ২৭ বলে ৩৪ রান যোগ করেন সাকিব। এই জুটিতে সাব্বিরের অবদান ছিলো ১২ রান।
সাকিবের পরপরই প্যাভিলিয়নে ফিরেন মুশফিকুর রহিম। রান আউট হবার আগে ৫ বলে ৪ রান করেন মুশফিকুর। এরপর উইকেটে এসেই ১ বলের বেশি থাকতে পারেননি টাইগার দলপতি মাশরাফি। ১ বলে শুন্য হাতে বিদায় নিতে হয় তাকে। তখন বাংলাদেশের রান ছিলো ১১.৪ ওভারে ৫ উইকেটে ৭৫ রান।
ফলে বাংলাদেশের স্কোর শক্তপোক্ত অবস্থায় পৌছায় কি-না বা তিন অংক স্পর্শ করতে পারে কি-না, এই নিয়ে জল্পনা-কল্পনা তৈরি হয়ে মিরপুর স্টেডিয়ামে। তবে সেই জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটান মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। চলমান টুর্নামেন্টে শেষদিকে নেমে বহুবারই বাংলাদেশের রানকে পাহাড়ে বসিয়ে ছিলেন রিয়াদ। আর ফাইনাল ম্যাচে এই কাজটি তিনি করবেন না, তা কি-হয়!!
উত্তর ব্যাট হাতেই দিয়েছেন রিয়াদ। সাত নম্বরে নেমে মাত্র ১৩ বলে অপরাজিত ৩৩ রান করেন রিয়াদ। তার ইনিংসে ২টি করে চার ও ছক্কা ছিলো। অন্যপ্রান্তে ২৯ বলে ৩২ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন সাব্বির। আর বাংলাদেশের স্কোর গিয়ে দাড়ায় ১৫ ওভারে ৫ উইকেটে ১২০ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ : ১২০/৫, ২০ ওভার (মাহমুদুল্লাহ ৩৩*, সাব্বির ৩২*, সাকিব ২১, বুমরাহ ১/১৩)।
বাংলাদেশ একাদশ : মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, নাসির হোসেন, আল-আমিন হোসেন, আবু হায়দার
ভারত একাদশ : মহেন্দ্র সিং ধোনি (অধিনায়ক), রবীচন্দ্রন অশ্বিন, জাসপ্রিরাত বুমরাহ, শিখর ধাওয়ান, রবীন্দ্র জাদেজা, বিরাট কোহলি, আশিষ নেহরা, হার্ডিক পান্ডে, সুরেশ রায়না, রোহিত শর্মা ও যুবরাজ সিং।