সম্পাদকীয়: বিশ্বাস সাসপেন্ড, অশান্তি সেলিব্রেট!

Slider জাতীয় ফুলজান বিবির বাংলা বাধ ভাঙ্গা মত সম্পাদকীয়

IMG_20151014_151636

 

 

ড. এ কে এম রিপন আনসারী

এডিটর ইন চীফ
গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ঢাকা: বিশ্বাসে ঘাটতি হলে অশান্তি দেখা দেয়। বিশ্বাস ভেঙ্গে গেলে শান্তি চলে যায়। এই অবস্থা এতদিন ছিল অনেকটাই বাড়ির বাইরে। কিন্তু বিশ্বাস সাসপেন্ডেন্ট হয়ে যাওয়ায় এখন সামাজিক ও পারিবারিক জঘন্যতম অপরাধ মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। এই অবস্থা বলে দেয় আমরা এখন অশান্তিকেই সেলিব্রেট করছি মনে হয়।

খুব কাছাকাছি সময় পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, কিশোরীর হাতে বাবা-মা খুন। মায়ের হাতে সন্তান খুন। বাবার হাতে সন্তান খুন। স্ত্রীর হাতে স্বামী খুন। স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন। আবার তুচ্ছ কারণে শিশু অপহরণ, পিটিয়ে হত্যা, অপহরণ করে হত্যা। ছোট ছোট শিশু ধর্ষনের মত জঘন্যতম অপরাধও চলছে। এ গুলো ছাড়াও প্রতিনিয়ত নতুন নতুন অপরাধ সংঘটিত হচ্ছেই। নিত্য নতুন অপরাধের সংখ্যা বলে দেয় আমাদের নীতি ও নৈতিকতার কতটুকু অবক্ষয় হয়েছে।

অনুসন্ধান করলে দেখা যায়, ওই সব নারকীয় ঘটনার আসামীদের মধ্যে অনেকে আবার ধরাও পড়ছেন। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী অনেক মূল অপরাধীকে গ্রেফতার করতে সক্ষমও হচ্ছেন। এই সব ঘটনার বিচার হচ্ছে না এমন অভিযোগও সঠিক হবে না। কারণ সাধ্যমত বিচারও হচ্ছে। তাহলে কেন দিন দিন এই ধরণের জঘন্যতম অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে তা নিয়ে জল্পনা কল্পনা বেড়েই চলছে।

বর্তমান অবস্থা মূল্যায়নে দেখা যায়, মানুষের পারস্পরিক বিশ্বাস দিন দিন কমছে। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ হ্রাস পাচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত হারে। সম্মিলিত ভাবে চিন্তা ভাবনা করে মানুষ এখন কোন কাজই করছেন না। মানুষের মধ্যে একটি আত্মঅহংকারবোধ জন্ম নিচ্ছে। নিজের সকল কাজকে সঠিক মনে করে এগিয়ে যাচ্ছেন মানুষ। “মানুষ মাত্রই ভুল” ও “দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ” সহ অনেক চিরন্তন কথা এখন অকেজো হয়ে যাচ্ছে। কারণ ওই সব খনার বচন নিয়ে মানুষ এখন ঠাট্রা মশকারী করেন। ফলে অতীত থেকে নেয়া শিক্ষা বর্তমানে কোন প্রভাব ফেলছে না, যা সুন্দর ভবিষৎ তৈরী করতে বার বার অপারগতা প্রকাশ করছে।

এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে আমাদের মধ্যে যে পরিবর্তন দরকার তারও সম্ভাবনা ক্ষীন। কারণ রাষ্ট্রীয় উচ্চ পর্যায় থেকে জন্ম নেয়া আত্মঅহংকার বোধ এখন তৃনমূল পর্যায়ে ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে। বিশ্বাসকে সাসপেন্ড করে অশান্তিকে সেলিব্রেট করা হচ্ছে। বর্তমান অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে গোটা সমাজকে ঢেলে সাজাতে হবে। নৈতিক অধ;পতন রোধে নীতি নৈতিকতার মাত্রা নিয়ন্ত্রন করতে হবে শক্ত হাতে। এই কাজটি করার জন্য রাজনৈতিক দল, সরকার, প্রজাতেন্ত্রর কর্মচারী, সুশীল সমাজ ও জ্ঞানী গুনি লোকদের সম্মিলিত পদক্ষেপ এখন জরুরী হয়ে গেছে। না হয় নিকট ভবিষৎ আমাদেরকে এমন জাগায় নিয়ে যাবে যেখান থেকে বেরিয়ে আসার পথ থাকবে না।
তাং ০৫/০৩/১৬

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *