শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার প্যারাভাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
রাজধানীর বনশ্রী এলাকায় নুসরাত আমান অরণী ও আলভী আমানকে হত্যার কথা র্যাবের কাছে স্বীকার করার পর মা মাহফুজা মালেক জেসমিনকে নিয়ে যখন দেশে তোলপাড় চলছে, ঠিক সেই সময়ে কিশোরগঞ্জে এ ঘটনা ঘটলো।
কিশোরগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ) মীর মোশাররফ হোসেন জানান, প্রাথমিকভাবে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নিজ সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে সালমা আক্তার। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা বটি ও দা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
তিনি আরও জানান, এরআগেও শিশুটিকে হত্যার জন্য মা পানিতে ডুবিয়ে ছিল বলে তারা জানতে পেরেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় মানসিক বিকারগ্রস্ত সালমা আক্তার ঘরে থাকা বটি দা, দিয়ে জবাই করে শিশুটি হত্যা করে। পরে রক্তমাখা শরীর নিয়ে পুকুর পাড়ে হাত ধুতে গেলে প্রতিবেশিদের চোখে পড়ে। পরে ঘরে এসে শিশুর লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয় তারা।
প্রতিবেশিরা জানায়, পনের দিন আগে স্বামীর বাড়ি জেলার করিমগঞ্জ উপজেলা থেকে মাহাদীকে নিয়ে বাবার বাড়িতে আসেন সালমা আক্তার। শনিবার বাড়িতে কেউ না থাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। ভাই-বোনের মধ্যে মাহাদী ছিল সবার ছোট। খবর পেয়ে স্বামী আবুল কালাম দুপুরে ঘটনাস্থলে আসে।
এদিকে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন খানসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এ সময় কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিশুটির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে সালমা আক্তার। তারপরও ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
হত্যার পিছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে কী না তা তদন্তে মাঠে নেমেছে গোয়েন্দা পুলিশ বলেও জানান তিনি।
ওসি মীর মোশাররফ হোসেন জানান, এ ব্যাপারে শিশুটির বাবা আবুল কালাম বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। আসামি করা হয়েছে শিশুটির মা সালমা আক্তারকে। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।