সূত্র জানায়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতায় আসবে বেরাইদ, বাড্ডা, ভাটারা, সাঁতারকুল, হরিরামপুর, উত্তরখান, দক্ষিণখান ও ডুমনী ইউনিয়নের সব মৌজা। এ ছাড়া চাকুলী, চকদ্বিগুণ ও শৈলপুর মৌজার ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড অধিকৃত ভূমি এবং এর আগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত এলাকা ছাড়া এসব মৌজার অবশিষ্ট জমিও সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশনের আওতায় আসবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতায় আসবে শ্যামপুর, মাতুয়াইল, ডেমরা, দনিয়া, সারুলিয়া, দক্ষিণগাঁও, নাসিরাবাদ ও মাণ্ডা ইউনিয়নের সব মৌজা। ১৯৭৮ সালে ঢাকা সিটি করপোরেশন গঠিত হলেও এর আশপাশে থাকা ১৬টি ইউনিয়ন সিটি করপোরেশন কিংবা কোনো উপজেলার আওতায় না আনায় রয়ে যায় তেজগাঁও সার্কেলের অধীনে। এসব ইউনিয়নের জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এগুলোকে সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবদুল মালেক সমকালকে বলেন, ওই এলাকাগুলোর কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ লোক অকৃষিজীবী। এলাকাগুলোতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিল্পকারখানা গড়ে উঠেছে। এলাকাগুলোর মানুষও দীর্ঘদিন ধরে সিটি করপোরেশনের আওতায় আসতে চান। দীর্ঘদিন পরে হলেও তাদের দাবি পূরণ হচ্ছে।
সরকারের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. সাঈদ খোকন বলেন, সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত হওয়ার পর তিনি ওই সব এলাকায় নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করবেন। এলাকার উন্নয়নে বিশেষ নজর দেবেন বলে জানান তিনি।
কিছু বিরোধিতা থাকলেও এসব ইউনিয়নের বেশির ভাগ জনপ্রতিনিধি মনে করেন, সিটি করপোরেশনের অধীনে এলে উন্নয়ন বৈষম্য কমবে। ইউনিয়নগুলো সিটি করপোরেশনভুক্ত হলে এসব এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মান আরও উন্নত হবে ।
স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীসংলগ্ন এলাকায় ক্রমে নগরায়ন হচ্ছে। তেজগাঁও সার্কেলের ১৬টি ইউনিয়নে এরই মধ্যে বড় বড় আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন, শিল্পপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানা গড়ে উঠেছে। বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি সরবরাহের মতো সুযোগ-সুবিধাও রয়েছে এলাকাগুলোতে। এলাকার পরিকল্পিত নগরায়ন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, রাস্তাঘাট নির্মাণ, সড়কবাতি স্থাপন, পানিনিষ্কাশন, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, কবরস্থান, শ্মশান ব্যবস্থাপনা তথা সার্বিক উন্নয়ন ইউনিয়ন কাঠামোতে থেকে সম্ভব নয়। তাই এসব ইউনিয়নকে সিটি করপোরেশনে অন্তর্ভুক্তির প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯-এর ৪ ধারায় সিটি করপোরেশনকে সম্প্রসারণের বিধান রয়েছে। এ অনুযায়ী গণবিজ্ঞপ্তি ও জনসাধারণের শুনানির পরিপ্রেক্ষিতে প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে এক কর্মকর্তা জানান।
জানা গেছে, ইউনিয়নগুলো সিটি করপোরেশনে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর সীমানা চিহ্নিত করবে স্থানীয় সরকার বিভাগ। ইউনিয়নগুলোকে বিলুপ্ত করে কয়েকটি ওয়ার্ড গঠন করা হবে। পরে নির্বাচন কমিশন সুবিধাজনক সময়ে নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। নির্বাচনের আগে সরকারি কর্মকর্তা দিয়েই চলবে এসব ওয়ার্ডের উন্নয়ন কাজ।