ঢাকা : গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আগামী ১৩ এপ্রিলের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদার এ আদেশ দেন।
এর আগে ২০১৫ সালের ৫ আগস্ট মামলার বৈধতা চ্যলেঞ্জ করে বিএনপি চেয়ারপারসনের দুটি রিট আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ২ মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন আদালত। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের ওই রায় প্রকাশ হয়।
হাইকোর্টের ওই রায় মামলার বিচারিক আদালতে আসার পর আদালত হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী খালেদা জিয়ার আত্মসমর্পণের এই দিন ঠিক করেন।
হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি আব্দুর রবের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় প্রদান করেছিলেন।
২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মো. গোলাম শাহরিয়ার বাদি হয়ে তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ২০০৮ সালের ১৩ মে জোট সরকারের প্রভাবশালী ৯ সাবেক মন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রীসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের উপ-পরিচালক মো. জহিরুল হুদা চার্জশিট দাখিল করেন।
জরুরি বিধিমালা সংযুক্ত ওই মামলার চার্জশিটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদনের কারণে প্রায় ৮ বছর নিম্ন আদালতে বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
মামলার আসামিরা হলেন, সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত এম সাইফুর রহমান ও আব্দুল মান্নান ভুঁইয়া, সাবেক মন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক মন্ত্রী এম শামছুল ইসলাম, এমকে আনোয়ার, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) সাবেক চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আলী, প্রয়াত মন্ত্রী কর্নেল আকবর হোসেনের স্ত্রী জাহানারা আকবর, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন এবং একেএম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌ সচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) সাবেক সদস্য একে রশিদ উদ্দিন আহমেদ এবং গ্লোবাল এগ্রোট্রেড প্রাইভেট লি. (গ্যাটকো) এর পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রাহমান কোকো, সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন, গ্লোবাল এগ্রোট্রেড প্রাইভেট লি. (গ্যাটকো) এর পরিচালক সৈয়দ তানভির আহমেদ ও সৈয়দ গালিব আহমেদ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান এএসএম শাহাদত হোসেন, বন্দরের সাবেক পরিচালক (পরিবহন) এএম সানোয়ার হোসেন, বন্দরের প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আহমেদ আবুল কাশেম ও বন্দরের সাবেক সদস্য লুৎফুল কবীর।
চার্জশিটে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে দরপত্রের শর্ত ভঙ্গ এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনভিজ্ঞ ও অদক্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে সরকারের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া গ্যাটকোকে ঠিকাদারি কাজ পাইয়ে দেয়ার বিনিময়ে অবৈধভাবে আরাফাত রহমান কোকো ও ইসমাইল হোসেন সায়মন ২ কোটি ১৯ লাখ ৯৯ হাজার ৭৩৬ টাকার আর্থিক সুবিধা নেন।