ঢাকা: সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক ও হোমস শহরে রোববার ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলায় কমপক্ষে ১৪০ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এমন এক সময় এই হামলার ঘটনা ঘটল যখন দেশটিতে একটি অস্ত্রবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরে তৎপর রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ রাশিয়া।
ইরাক ও সিরিয়ায় প্রভাব বিস্তারকারী জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
হামলা সম্পর্কে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা জানিয়েছে, রাজধানী দামেস্কের শহরতলি সাঈদা জয়নব এলাকায় পরপর চারটি বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয়েছে কমপক্ষে ৮৩ জনের বেশি মানুষ। এর আগে হোমস শহরে জোড়া গাড়িবোমা হামলায় মারা গেছে আরো ৫৭ জন। ব্রিটেন ভিত্তিক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউমেন রাইটস জানিয়েছে, হোমসে হতাহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।
ওই দুই শহরেই হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস। মূলত সংখ্যালঘু শিয়া মুসলিমদেরকে লক্ষ্য করেই রোববারের ওই হামলাগুলো চালান হয়েছিল। সিরিয়ার শিয়া মুসলিমদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র বলে বিবেচিত সাঈদা জয়নবের পবিত্র মাজারকে কেন্দ্র করে দিনের প্রথম হামলাটি চালান হয়। সাঈদা জয়নব ছিলেন মহানবী হজরত মোহাম্মদ (স.)য়ের নাতনি এবং হজরত আলীর (রা.) ও বিবি ফাতেমার কন্যা। সেখানে কমপক্ষে চারটি বিস্ফোরণের খবর দিয়েছে বিবিসি। সাঈদ জয়নবে আইএসের আত্মঘাতী বোমা হামলায় গতমাসেও ৭১ জন নিহত হয়েছিল।
হোমসে হামলার পর বিস্ফোরণ ঘটে দামেস্কে। আক্রান্ত ও আহতের আর্তচিৎকারে ভারী হয়ে উঠে রাজধানীর আকাশ। সংবাদ সংস্থা সানা বলছে, দামেস্কে হামলার ঘটনায় কমপক্ষে ৮৩ জন নিহত এবং আরো ১৭৮ জন আহত হয়েছে।
হামলা সম্পর্কে আইএসের সঙ্গে সম্পৃক্ত ‘দি আমাক’ নামের সংবাদ সংস্থাটি বলছে, আইএস জঙ্গিরা প্রথমে গাড়ি বোমা বিস্ফোরণ এবং পরে বিস্ফোরক বেল্টের বিস্ফোরণ ঘটায়।
সিরিয়ায় এমন এক সময়ে এ ভয়াবহ হামলার ঘটনাগুলো ঘটলো যখন মার্কিন পররাষ্টমন্ত্রী জন কেরি দেশটিতে যুদ্ধ বন্ধে বিবাদমান পক্ষগুলোর মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। শনিবার আম্মানে রাশিয়া ও জর্দানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক শেষে তিনি আরো বলেছিলেন, সিরিয়ায় আংশিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া।
এদিকে রোববারের ওই হামলার আগে সিরিয়ার আলেপ্পোতে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের প্রায় ৬০ জন জিহাদি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।