গাজীপুর: গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে দুই কাউন্সিলরের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এতে এক কাউন্সিলরসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
একটি রাস্তা নির্মাণ ও মামলা দায়েরের জেরে শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কামারজুড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চারটি গুলির খোসা উদ্ধার ও সাতজনকে আটক করেছে।
স্থানীয়রা জানান, ৩৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মামুন মণ্ডল ও ৩৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সানাউর রহমানের সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেছে। এ সময় সানাউর আহত হন। তাকে গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অন্যান্যদের বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
কাউন্সিলর মো. সানাউর রহমান জানান, ৩৬নং ওয়ার্ডের সাহেববাড়ি এলাকায় সড়কের কাজ করার সময় স্থানীয় সোহরাব তাতে বাধা দেন ও তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মামুন মণ্ডলের একজন সমর্থক তিনি। এ ঘটনায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সোহরাবসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে জয়দেবপুvর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন সানাউর।
বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সোহরাব ছাড়া বাকি ২১ আসামি গাজীপুরের আদালতে জামিনের আবেদন করেন। এসময় তিনজন ছাড়া বাকিদের আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। ওইদিন সন্ধ্যায়ই সোহরাবের নেতৃত্বে অন্য সহযোগীরা সানাউরের কার্যালয়ে হামলা চালান ও অফিসের আসবাবপত্র, ল্যাপটপ ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ ঘটনায় শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জয়দেবপুর থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন সানাউর।
তিনি আরও জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিনি অফিস থেকে বের হয়ে পাশের কাথোরা এলাকায় যাচ্ছিলেন। পথে কামারজুরি এলাকায় পৌঁছালে কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মামুন মণ্ডলের উপস্থিতিতে সোহরাবসহ তার সমর্থকরা সানাউরের মাইক্রোবাসের গতিরোধ করে হকিস্টিক ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। এতে তিনিসহ তার নাতি মোর্শেদ আলম ও গাড়ির চালক বকুল আহত হন। এসময় হামলাকারীরা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিও ছোড়ে বলে অভিযোগ করেন সানাউর।
তবে সানাউরের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মামুন মণ্ডল পাল্টা অভিযোগ বলেন, রাস্তাটি একপাশ দিয়ে বাড়ানো হচ্ছিল। ক্ষতিগ্রস্তরা এতে বাধা দিলে স্থানীয় কাউন্সিলরের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডা হয় তাদের। পরে এই ক্ষতিগ্রস্তরা আমার কাছে আসে। আমি বিষয়টা মিমাংসার আশ্বাস দেই তাদের।
তিনি আরও জানান, স্থানীয় উজারপাড়ার একটি স্কুলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান শেষে ফেরার পথে সন্ধ্যায় কামারজুড়ি পৌঁছালে কাউন্সিলর মো. সানাউর রহমানের সমর্থকরা তার সঙ্গে থাকা লোকজনের উপর হামলা করে ও তিনটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করেন। হামলায় তার সমর্থক লিটন, রুহুল, ফেরদৌস, বাবু, নবীন ও জসিম আহত হন।
জয়দেবপুর থানার ভোগড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (এসআই) মো. জাকির হোসেন জানান, দুই কাউন্সিলরের সমর্থকদের মধ্যে যে স্থানে সংঘর্ষ হয়েছে, সেখান থেকে চার রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় সাতজনকে আটক করা হয়েছে।