ঢাকা : আইন ও বিচার বিভাগের জন্য সরকারের উন্নয়ন বাজেটে কম বরাদ্দ থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সুপ্রিমকোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক। তিনি বলেছেন, আইন ও বিচারের উন্নয়নের চেয়ে দেশে মৎস্য ও পশুর উন্নয়নের জন্য প্রায় আড়াই গুণ বেশি খরচ হচ্ছে। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জাতীয় বাজেটে আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও কার্যাকারিতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও সুজনের নির্বাহী সদস্য ড. শাহদীন মালিক।
তিনি বলেন, ‘গত অর্থবছরে উন্নয়ন বাজেটে আইন বিচার মন্ত্রণালয়েল বরাদ্দ ছিল ৩২৯ কোটি টাকা। আপরদিকে মৎস্য ও পশু মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন বাজেটে বরাদ্দ ছিল ৭৯৭ কোটি টাকা। অর্থ্যৎ আইন ও বিচারের উন্নয়নের চেয়ে দেশে মাৎস ও পশুর উন্নয়নের জন্য প্রায় আড়াই গুণ বেশি খরচ হচ্ছে।’
রাজধানীর মগবাজার-মালিবাগ ফ্লাইওভারের কিছু বাড়তি কাজ করার জন্য অতিরিক্ত ৪৩০ কোটি টাকার বর্ধিত ব্যয় অনুমোদিত হয়েছে। অর্থ্যাৎ এক কিলোমিটার বর্ধিত ফ্লাইওভারের খরচ সারা বছরের আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের সব উন্নয়ন কাজের বরাদ্দের চেয়ে ঢের বেশি- যোগ করেন তিনি।
এই সংবিধান বিশেষজ্ঞ বলেন, বড়দাগে আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ হয়ে থাকে মোট বাজেটের ০.৩-০.৪ শতাংশ। অপরদিকে তুলনামূলকভাবে মৱস্য ও পশু মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ০.৫-০.৬ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ ১ হাজার ৪৬ কোটি টাকা। অপরদিকে তুলনামূলকভাবে মৱস্য ও পশু মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ১ হাজার ৪৬৯ কোটি। অর্থাৱ মাছ ও পশু খাতের বাজেট বিচারক, কোর্ট-কর্মচারী ও আইনজীবীদের চেয়ে প্রায় দেড়গুণ বেশি।
তিনি দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জাতীয় বাজেটে আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বান জানান।
শাহদীন মালিক বলেন, বর্তমান বাস্তবতা হচ্ছে নির্বাচন কমিশন তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনে ব্যর্থ। দুদক সরকারি দলের দুর্নীতি দেখতে পায়না। সংসদ আছে তবে তার কার্যকর পদক্ষেপ নেই। আর আইনের শাসন না থাকলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা জনগণের কল্যাণ আনতে পারে না।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি হাফিজ উদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে আরো বক্তব্য রাখেন, সুপ্রিমকোর্টের সাবেক বিচারপতি আবদুল মতিন, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও গণফোরাম সভাপতি ড.কামাল হোসেন, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ,সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ প্রমুখ।