দিল্লীর প্রেসক্রিপশন গ্রহণ করেছেন খালেদা জিয়া

Slider রাজনীতি

2015_11_26_15_01_05_UiDxXtNty04GvTCecz49FL48APiVI4_256xauto

 

 

 

 

ঢাকা : বিরোধী দলীয় নেতা হতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এখন দিল্লীর প্রেসক্রিপশন গ্রহণ করেছেন বলে দাবি ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (এনডিএফ) চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নিলুর।

শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ফ্রন্টের শরিক ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) জাতীয় কাউন্সিল সম্মেলন-২০১৬ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ দাবি করেন তিনি।

শেখ শওকত হোসেন নিলু বলেন, ‘দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনপূর্ব জোটের বৈঠকে আমি ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণের পক্ষে মতামত তুলে ধরি। তখন বিএনপির ‘অপদার্থ’ ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আমাকে ‘পাগল’ এবং বেগম খালেদা জিয়া আমাকে ‘গোপালী প্রেমিক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। অথচ মাত্র দুই বছরের মাথায় আমার বক্তব্যের যথার্থতা প্রমাণিত হয়েছে। নাকে খত দিয়ে খালেদা জিয়াকে নির্বাচনে আসতে হয়েছে। কারণ সংসদীয় গণতন্ত্রে নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোনো বিকল্প নেই।’

তিনি বলেন, ‘নিজের ভুল বুঝতে পেরে বেগম খালেদা জিয়া এখন সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা হতে চান। সেজন্য তিনি ২০ দলীয় জোট থেকে জামায়াতকে বাদ দেয়ার জন্য দিল্লীর প্রেসক্রিপশন গ্রহণ করেছেন। তিনি এখন সেকুলার সেকুলার ভাব গ্রহণ করেছেন। একই অঙ্গে এখন তার বহু রূপ।’

নিলু বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। মানুষ এই দুই জোটকেই প্রত্যাখ্যান করেছে। এখন তারা বিকল্প খুঁজছে। সুতরাং তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটবেই। আমি এ শক্তির গর্জন শুনতে পাচ্ছি। কেউ না কেউ এর নেতৃত্ব দেবে।’

এনডিপির একাংশের চেয়ারম্যান আলমগীর মজুমদারের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক কাজী আমান উল্লাহ মাহফুজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন- ফ্রন্টের শরিক ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান শেখ আনোয়ারুল হক, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিস, তৃণমূল ন্যাপের চেয়ারপারসন পারভীন নাসের খান ভাসানী প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে আলমগীর মজুমদার বলেন, ‘সমগ্র দেশ এখন সন্ত্রাসে ছেয়ে গেছে। গুম-খুন, রাহাজানি, ডাকাতি, লুট ও ছিনতাই এখন নিত্যকার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এভাবে একটি রাষ্ট্র চলতে পারে না। গণতান্ত্রিক বিধি ব্যবস্থার মাধ্যমে গঠিত এবং জনগণের কাছে দায়ভাগী একটি জাতীয়তাবাদী দেশপ্রেমিক সরকারই কেবল এই সঙ্কট থেকে দেশকে রক্ষা করতে পারে।’

কাউন্সিলে এনডিপির নতুন কমিটির নাম ঘোষণা করা হয়। এনডিপির চেয়ারম্যান হিসেবে আলমগীর মজুমদার এবং মহাসচিব হিসেবে আলী নূর রহমান খান সাজু পুনরায় নির্বাচিত হন। আলমগীর মজুমদার নতুন এই কমিটির নাম ঘোষণা করেন।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে কাউন্সিলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন এনডিপির একাংশের চেয়ারম্যান আলমগীর মজুমদার।

উল্লেখ্য, জোট শরিকদের অবমূল্যায়ন ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট অসন্তোষ ও মতবিরোধের জের ধরে বিএনপি জোট থেকে বেরিয়ে যান অবিভক্ত এনডিপির মহাসচিব আলমগীর মজুমদার। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি বহিষ্কারের মধ্য দিয়ে এনডিপি দ্বি-খণ্ডিত হয়ে যায়। ২০১৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নিজেকে চেয়ারম্যান ঘোষণা করে পৃথক এনডিপি গঠন করেন আলমগীর মজুমদার।

এরপর ২০১৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বিএনপি জোট ত্যাগকারী এনপিপির চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নিলুর নেতৃত্বে ‘এনডিএফ’ নামে নতুন রাজনৈতিক জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটে। আলমগীর মজুমদারের নেতৃত্বাধীন এনডিপির খণ্ডাংশ ওই ফ্রন্টে যোগদান করে মহাসচিব হন। বর্তমানে তিনি এনডিএফ’র মহাসচিব।

অন্যদিকে খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজার নেতৃত্বাধীন এনডিপির মূল অংশ বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে রয়ে গেছেছে। ১৯৮৯ সালে এনডিপি গঠিত হওয়ার পর থেকে দল ত্যাগ না করায় মোর্ত্তজার নেতৃত্বাধীন অংশই দলটির মূল স্রোতধারা হিসেবে রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *