ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মুখে কালি ছুঁড়ে আলোচনায় ভাবনা অরোরা। ঘটনার পর থেকেই অনেকের মনে মানুষের প্রশ্ন কে এই ভাবনা অরোরা?
প্রথমে অনেকেই হয়ত ভেবেছিলেন বিজেপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ওই নারী। তবে তা উড়িয়ে দিয়ে নিজেকে আম আদমি পার্টির বিদ্রোহী সংগঠন আম আদমি পার্টি সেনার (এএপিএস) সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করেন ২৬ বছর বয়সী ভাবনা।
গত বছরের এপ্রিলের কেজরিওয়ালের বাসভবনের সামনে প্রতিবাদও করেছিল এএপিএস। সে সময় ভাবনা এএপিএস দিল্লি মহিলা মঞ্চের প্রধান ছিলেন। বর্তমানে এএপিএসের পাঞ্জাব শাখার সদস্য তিনি। থাকেন দিল্লির রোহিনীতে রামবিহারে নিজের পরিবারের সঙ্গে।
ভাবনা জানান, ‘দিল্লির দূষণ রোধে গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে কেজরিওয়ালের জোড়-বিজোড় তত্ত্ব ইতিবাচক। তবে এর পেছনে বড় ধরনের সিএনজি দুর্নীতি রয়েছে। তার প্রমাণও রয়েছে।’
এ বিষয়ে ভাবনা কথা বলতে দিল্লির মুখমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও পরিবহনমন্ত্রী গোপাল রাইয়ের সঙ্গে দেখা করতেও চেয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। সেই থেকেই নাকি ক্ষোভের দানা বাঁধতে শুরু করে ভাবনার মনে। যার বহিঃপ্রকাশ ঘটে রোববার।
সোমবার এক সাক্ষাৎকারে ভাবনা বলেন, ‘এ নিয়ে আমি আদালতে দ্বারস্থ হব।’
দিল্লির দূষণ রোধে গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে কেজরিওয়ালের ‘জোড়-বিজোড়’ তত্ত্ব নিয়ে চলছে দ্বন্দ্ব। তবে দিল্লি সরকারের দাবি করে আসছে, ‘জোড়-বিজোড়’ ফর্মুলা চলাকালীন দিল্লির দূষণ কমেছে ৫০ শতাংশ। এহেন পরিস্থিতিতে ‘জোড়-বিজোড়’ তত্ত্ব বাস্তবায়ন করায় দিল্লিবাসীকে ধন্যবাদ জানাতে রোববার এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আম আদমি পার্টির ওই অনুষ্ঠানে মঞ্চে উঠে বক্তব্য দেয়ার সময়ই হঠাৎ নিরাপত্তাবলয় ভেদ করে মুখ্যমন্ত্রীর মুখে কলমের কালি ছোড়েন ভাবনা অরোরা। কিন্তু চিরাচরিত ‘গান্ধীগিরি’ পন্থায় কেজরিওয়াল নিরাপত্তারক্ষীদের বলেন, ‘ওকে ছেড়ে দিন। যখনই দিল্লিতে ভালো কিছু হয়, এই রকম ঘটনা ঘটে।’
পরে অবশ্য রোববার রাতে ছেড়ে দেওয়া হয় ভাবনাকে।
এর আগেও কেজরিওয়ালকে লক্ষ্য করে কালি ছোড়া হয়। ট্যাক্সিচালকের চড়ও খেতে হয়েছে তাকে। ২০১৪ সালের ৪ এপ্রিলের ঘটনাতেও একই রকম ‘গান্ধীগিরি’ করেছিলেন কেজরিওয়াল। সে বার দক্ষিণ দিল্লিতে দলীয় একটি শোভাযাত্রা চলাকালীন তাকে থাপ্পড় মারেন ওই ব্যক্তি। পরে তার বাড়িতে পৌঁছে যান কেজরিওয়াল। বাড়ির দাওয়ায় বসে মন দিয়ে শোনেন, তার বিরুদ্ধে ওই ব্যক্তির অভিযোগ। কেজরিওয়ালের কাছে শেষপর্যন্ত ক্ষমাও চেয়ে নেন ওই ট্যাক্সিচালক।
এছাড়া আম আদমি প্রধানের গাড়ি লক্ষ্য করে একবার ডিমও ছুড়েছিল বিজেপি সমর্থকরা। তবে সেই সব ঘটনাই ছিল নির্বাচনী প্রচারণার সময়। মুখমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে এবারই প্রথম এ ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হলেন কেজরিওয়াল। সূত্র: জিনিউজ, টাইমস অব ইন্ডিয়া