যশোর: পেছনে ছিল সাফ ফুটবলের তিক্ত স্মৃতি। যেখানে গ্রুপ পর্বেই বিদায় নিয়েছিল বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবলের আগে কিছুটা দ্বিধান্বিত ছিল মামুনুল শিবির। তবে সব শঙ্কা আর হতাশা এক ফুতকারে উবে গেছে। যশোরে শুরু হওয়া বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে দুর্দান্ত সূচনাই করেছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। শুক্রবার শামস উল হুদা স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৪-২ গোলে পরাজিত করেছে মামুনুল শিবির।
ম্যাচে আধিপত্য ছিল বাংলাদেশেরই। প্রথমার্ধে বল পজিশনে বেশ এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয়ার্ধে লঙ্কান শিবিরও দাপট দেখিয়েছে। কিন্তু শেষ হাসি লাল-সবুজ জার্সিধারীদের। রনি করেছেন জোড়া গোল। ইয়াসিন ও জীবন করেছেন একটি করে গোল। সব মিলিয়ে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচেই দাপুটে জয় মারুফুল হক শিষ্যদের।
১৭ মিনিটে প্রথম লিড পায় বাংলাদেশ। জাহিদের ক্রসে শ্রীলংকার জাল কাঁপান সাখাওয়াত হোসেন রনি। তবে এর মিনিট তিনেক পরই সমতায় ফেরে সফরকারী শ্রীলংকা। সেটা পেনাল্টি থেকে। শ্রীলঙ্কার আক্রমণটা ভালো ছিল ঠিক, তবে সেটি ঠেকানোও খুব বেশি কঠিন ছিল না। সেই সহজ কাজটিই করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনলেন নাসির। বক্সে ফাউল করে উল্টো পেনাল্টি উপহার দিয়ে বসলেন লঙ্কানদের। ২০ মিনিটে প্রাপ্ত পেনাল্টিতে গোল করেন ৩৩ নম্বর জার্সিধারী ফিগুয়ার্দো।
স্কোর তখন ১-১। তবে এই ব্যবধান বেশীক্ষণ দেখতে হয়নি বাংলাদেশের ভক্ত-সমর্থকদের। মিনিট দুয়েক পরই অধিনায়ক মামুনুল ইসলামের কর্নারে দুর্দান্ত হেডে গোল করেন ইয়াসিন খান। ২-১ এ লিড নেয় বাংলাদেশ। ৩২ মিনিটে আরও একটি গোল পেতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু দুর্দান্ত দলীয় আক্রমণের পর মামুনুলের থ্রু পেয়ে গোলরক্ষককে কাটিয়েও গোল করতে পারলেন না নাসির।
তবে ৪৩ মিনিটে আবারো বাংলাদেশ শিবিরে উৎসবের আমেজ। এবার গোলের যোগানদাতা জাহিদ। তার ফ্রি কিকে লঙ্কান পোস্টে লক্ষ্যভেদ করেন তরুণ স্ট্রাইকার নাবীব নেওয়াজ জীবন। ৩-১ এ তখন এগিয়ে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত এই ব্যবধানেই ম্যাচের বিরতিতে যায় দুই দল।
তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে লঙ্কান শিবির। যার বদৌলতে একটি গোলের দেখাও পেয়ে যায় তারা। ৫২ মিনিটে শ্রীলঙ্কার হয়ে গোলটি করে ব্যবধান ৩-২ এ নামিয়ে আনেন সানজুয়া। শেষের দিকে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ হয়েছে বেশ। তবে শেষটা মধুর স্বাগতিকদেরই। বাংলাদেশের হয়ে শেষ গোলটি করে দলকে উৎসবে মাতান সাখাওয়াত হোসেন রনি।
গত আসরে এই টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছিল ছয়টি দল। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আটটিতে। বিদেশী দল ছয়টি হলো বাহরাইন, মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া, মালদ্বীপ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ থেকে দুটি টিম খেলছে এই টুর্নামেন্টে, বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল ও বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ ফুটবল দল।
এ গ্রুপে গতবারের চ্যাম্পিয়ন মালয়েশিয়ার সঙ্গে রয়েছে বাংলাদেশ, নেপাল ও শ্রীলংকা। অন্যদিকে বি গ্রুপে রয়েছে শক্তিশালী মালদ্বীপ, বাহরাইন, কম্বোডিয়া ও বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ ফুটবল দল। ভারতের শিলংয়ে অনুষ্ঠেয় এসএ গেমসের প্রস্তুতি নিতেই এবারের আসরে অনূর্ধ্ব-২৩ দলকে খেলানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।