গাজীপুর : গাজীপুরে টঙ্গী হিমারদিঘী এলাকায় মোজাম্মেল হোসেন মজু (১৪) নামে এক কিশোরকে চোর সাব্যস্ত করে শিকলে বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে ওই এলাকার সুমনের ভাঙ্গারির দোকানে। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীরা হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ধামাচাঁপা দেওয়ার চেষ্টা করলেও মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তা প্রকাশ পায়।
হত্যাকান্ডের বিচারের দাবীতে এলাকাবাসি নিহতের লাশ নিয়ে মিছিল করে স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেলের সঙ্গে দেখা করতে গেলে পুরো ঘটনা সর্বত্র প্রকাশ পায়।
নিহত মজু নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার উত্তর তারার চর গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে এবং বাবা-মায়ের সাথে টঙ্গীর তিস্তার গেট এলাকায় হাবিবুর রহমানের বাড়ীতে ভাড়া থাকতো।
এলাকাবাসি জানায়, টঙ্গীর কলেজ গেট এলাকার কলমিলতা হোটেলের মালিক সুমনের ভাঙ্গারী দোকানে কাজ করতো মোজাম্মেল। সম্প্রতি সে ওই দোকানের কাজ বাদ দিয়ে অন্য দোকানে কাজ নেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয় সুমন ও তার লোকজন।
সোমবার সুমনের ভাঙ্গারী দোকানের পাশ দিয়ে মোজাম্মেল বাসায় যাচ্ছিল। এসময় সুমন ও তার লোকজন চোর সাব্যস্ত করে মোজাম্মেলকে ধরে ভাঙ্গারির দোকানে নিয়ে যায়। পরে তাকে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। এক পর্যায়ে তার মৃত্যু হলে গলায় রশি পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচারের চেষ্টা করে। রাতে এলাকাবাসি আটকের ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশকে জানালে রাত পৌণে একটার দিকে টঙ্গী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আবুল খায়ের ওই দোকান থেকে মোজাম্মেলের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, হত্যার ঘটনা ধামাচাঁপা দেওয়ার জন্য ভাঙ্গারী দোকানের মালিকের সঙ্গে আপোস রফার প্রক্রিয়ায় টঙ্গী মডেল থানা পুলিশ অংশ নেয়। এতে ঘটনার একদিন পার হলেও থানা পুলিশ মামলা নেয়নি। উল্টো হত্যার ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছিল দিনভর। কিন্তু এলাকাবাসির দৃঢ় পদক্ষেপ ও মিছিলসহ লাশ নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যের বাসায় গেলে ঘটনাটি সর্বত্র প্রকাশ পায়।
এব্যাপারে টঙ্গী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আবুল খায়ের জানান, ঘটনাটির ব্যাপারে একটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর প্রকৃত রহস্য জানা যাবে।