ঢাকা : ব্যাংকের অভ্যন্তরে সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বেসিকের পর রাষ্ট্রায়ত্ত চারটি ও একটি বিশেষায়িত ব্যাংকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদের কর্মকর্তাদের অধিকাংশই রাজনৈতিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত সাবেক আমলা ও রাজনীতিক। ফলে সেখানে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় পর্যবেক্ষকরা কতটুকু সফল হবে, এসব ব্যাংকের অবস্থার পরিবর্তন আনতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়াটাও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্য কতোটা সহজ হবে- পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে তা নিয়ে অনেকের মনেই সংশয় দেখা দিয়েছে।
ঋণ কেলেঙ্কারি, খেলাপি ঋণের উচ্চ হার, মূলধন ঘাটতি ও সুশাসনের অভাব ছাড়াও বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো। ব্যাংকগুলোর অবস্থার উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি এমওইউ (সমঝোতা চুক্তি) করেছে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী আর্থিক সূচকের উন্নতি করতে পারছে না ব্যাংকগুলো। এসব কারণে ও আইএমএফের (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) চাপেই ব্যাংকগুলোতে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। পর্যবেক্ষকরা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ, অডিট কমিটি ও ক্রেডিট কমিটির বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। এসব বৈঠকে উপস্থাপিত বিষয় দেখে মতামত দেবেন। আইনবিরোধী ও আপত্তিকর কিছু থাকলে সেটা সংশোধনের পরামর্শের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রিপোর্ট করবেন তারা।
রাজনৈতিক চাপ ও পর্ষদের বিভিন্ন সদস্যদের চাপে পড়ে অনেকসময় ঋণ বিতরণ করা হয়ে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। যেগুলো পরবর্তীতে ঝুঁকির মধ্যে পড়ে এবং খেলাপিতে পরিণত হয়। অনেক অসাধু কর্মকর্তা এদের সঙ্গে যোগসাজশ করে নানা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। যে কারণে ব্যাংকগুলো মূলধন ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে পারছে না। প্রতিবছর বাজেটে ব্যাংকগুলোর ঘাটতি পূরণে টাকা দেয়া হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ঘাটতি পূরণে ৫ হাজার কোটি টাকা দেয়া হয়েছে।
কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যান, ব্যাবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালকদের বেশিরভাগই হয় সাবেক কোন বড় আমলা বা রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী। আর ঋণ খেলাপিদের মধ্যে এ ধরনের প্রভাবশালীরাই বেশি।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদে আমলা ও রাজনীতিবিদ থাকায় তা কতটা কার্যকরী হবে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন বাংলামেইলকে বলেন, ‘এখন রাজনৈতিকভাবে নিয়োগ পেয়ে কেউ যদি নিয়োগদাতাদের স্বার্থ এবং তার নিজের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কাজ করতে তাকে তার প্রভাব কতটা তা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে দেখলেই বুঝা যায়। আর রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতার প্রবাব প্রত্যক্ষভাবে না হলেও পরোক্ষভাবে পাইভেট ব্যাংকগুলোতেও পড়তে শুরু করেছে। রাজনীতি এবং কিছু ভেস্টেট গ্রুপ আছে ইনফ্লুয়েন্স করে। এগুলো থাকলে সব বিষয়ের উপর একটা অস্বচ্ছতা চলে আসে। আর অস্বচ্ছতা আসলেই অসৎ লোকজন সামনের দিকে চলে আসে। আর ভালো লোকজন আস্তে করে পিছনের দিকে চলে যায়।’
এ অর্থনীতিবিদ আরো বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতে অনেক ভাল এবং দক্ষ লোক রয়েছে। তাদের সামনের দিকে নিয়ে আসতে হবে। তাদের কাজের মূল্যায়ন করতে হবে। ভাল কাজের জন্য পুরস্কৃত করতে হবে। যারা অদক্ষ লোক তাদের বাদ দিতে হবে। আর এজন্য সরকারের সদিচ্ছা থাকতে হবে।’
এদিকে প্রতিটি ব্যাংকের মতো রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোরও ভালো মন্দ দেখার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। এতদিন ব্যাংকগুলোর অবস্থা ভালো করার নানা পরামর্শ ও নির্দেশনা দিলেও পরিবর্তন খুব একটা অসেনি। এখন পর্যবেক্ষকরা এত এত চাপের মধ্যে কতটা কাজ করতে পারবে সেটাই দেখার বিষয়। এরপরও যদি দেখা যায় অবস্থা খুব একটা ভালোর দিকে যাচ্ছে না তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দিকেও সমালোচনার তীর ধেয়ে আসবে বলে জানান এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের আগে যেসব জায়গায় পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে সবাই ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের জিএম (মহাব্যবস্থাপক) সম-মর্যাদার। কিন্তু এসব ব্যাংকে যেসব পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে তারা সবাই নির্বাহী পরিচালক পদের। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক নওশাদ আলী চৌধুরীকে সোনালী ব্যাংকে, আহমেদ জামালকে জনতা ব্যাংকে, নির্মল চন্দ্র ভক্তকে অগ্রণী ব্যাংকে এবং আব্দুর রহীমকে রূপালী ব্যাংকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। বাধাধরা কোনো নিয়ম না থাকলেও কাজটা একটু কঠিন হবে ভেবেই একটু বড় পদের কর্মকর্তাদের এখানে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এখন পর্যন্ত যত বড় বড় দুর্নীতি হয়েছে তার সবগুলোর সঙ্গেই কোন না কোন পরিচালনা পর্ষদ সদস্যের নাম এসেছে। যদিও তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে পারেনি সরকার। কারণ তারা সবাই অনেক বেশি প্রভাবশালী। তারা হয়তো সরকারেরই বড় কোন পর্যায়ের ব্যক্তির স্বার্থ রক্ষা করেছে। যে কারণেই তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা।
বেসিক ব্যাংকের সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা কেলেঙ্কারির মূল হোতা ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু। তার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জালিয়াতি ও জালিয়াতিতে সহযোগীতা করতে যা যা করেছেন তার সমস্ত প্রমাণাদি অর্থ মন্ত্রণালয়, দুদক ও সংসদীয় কমিটির কাছে প্রেরণ করেছে। কিন্তু দুদক তাদের অনুসন্ধান শেষে এর সঙ্গে বাচ্চুর কোন সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়নি। অন্য অনেক কর্মকর্তার নামে মামলা হলেও বাচ্চু ও অন্যান্য পরিচালনা পর্ষদের কোন সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
২০১০-১২ সময়ে সোনলি ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখা থেকে নানাভাবে জালিয়াতির মধ্য দিয়ে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ অনিয়ম হয়; যা সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেঙ্কারি হিসেবে পরিচিত। সাধারণ মানুষের এতগুলো টাকার পুরোটাই হাতিয়ে নিয়েছে হলমার্ক গ্রুপ। সে সময় দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে সোনালীর এক কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ বিষক উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীর নাম শোনা যায় জোরেশোরে। এরপর দুদক সেসময়কার কয়েকজন পর্ষদের চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান কাজী বাহারুল ইসলাম সহ পরিচালনা পর্যদের সদস্য জান্নাত আরা হেনরী, আনোয়ার শহীদ, এ এস এম নায়েম, কে এম জামান রোমেল, অ্যাডভোকেট সত্যচন্দ্র ভক্ত, মো. শহিদুল্লাহ মিয়া, সাংবাদিক কাশেম হুমায়ুন, সাইমুম সরোয়ার কমল, সুভাস চন্দ্র সিংহ সহ অরো বেশ কয়জন কর্মকর্তার সম্পদের হিসেব খতিয়ে দেখতে চেয়েছিল দুদক। শেষ পর্যন্ত কাগজে কলমে থাকলেও বাস্তবে তা আর হয়ে ওঠেনি।
তবে পর্ষদ এত বড় দুর্নীতির দায় কোনভাবেই এড়াতে পারে না বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান অর্থমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছিল। চিঠিতে সুপারিশ করা হয়েছিল সোনালীর পর্ষদ পুনর্গঠন করার। গভর্নর দুর্নিতির চিত্র তুলে ধরে বলেছিলেন, এটা সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান যে, সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে বা সম্মতিতে জালিয়াতির মাধ্যমে এত বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাত্ করা হয়েছে। সোনালী ব্যাংকের সংঘবিধি অনুযায়ী যাবতীয় ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের। ফলে সংঘটিত সব অনিয়মের সামগ্রিক দায়দায়িত্ব ব্যাংকের পর্ষদের ওপরই বর্তায়। এ ক্ষেত্রে সোনালী ব্যাংকের পর্ষদ তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে সক্ষম হয়নি। দেশের বৃহত্তম এই রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক আমানতকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। কিন্তু সে সময় অর্থমন্ত্রণালয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুপারিশ কানে তোলেনি। পর্ষদও পুনর্গঠন করা হয়নি।
এছাড়া চলতি বছরেই সানমুন গ্রুপের কর্ণধার মিজানুর রহমান মিজান ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ঋণ প্রদানে অনিয়মের ঘটনায় অগ্রণী ব্যাংকের এমডি সৈয়দ আবদুল হামিদের জড়িত থাকার বিষয়ে বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরে অর্থ মন্ত্রণালয় ও অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যানকে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকায় এ এমডির মেয়াদ বৃদ্ধিতে অনুমোদন দেয়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কারণ সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১৫ (৪) ধারায় বলা হয়েছে, ‘বিশেষায়িত ব্যাংক ব্যতীত অন্য যেকোনো ব্যাংক-কোম্পানিকে এর পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিযুক্তি বা পদায়নের আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে। এসব কর্মকর্তাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ছাড়া তার পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া, বরখাস্ত করা বা অপসারণ করা যাবে না।’ অগ্রণী ব্যাংকের এমডি সৈয়দ আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তুলে ধরা হলেও তাকে আবার এমডি হিসেবে পুনঃনিয়োগ দিয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়।
সোনালী ব্যাংক রূপসী বাংলা শাখার যে ৩ কর্মকর্তার সম্পদের হিসাব চাওয়ার নোটিশ করা হচ্ছে তারা হলেন, সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক কে এম আজিজুর রহমান, এজিএম সাইফুল হাসান ও এক্সিকিউটিভ অফিসার মোহাম্মদ আবুল মতিন। এছাড়া হলমার্ক গ্রুপের এমডি তানভীর মাহমুদ ওরফে তফছীর, চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম ও জিএম তুষার আহমেদের সম্পদের হিসাব চেয়ে শিগগিরই নোটিশ পাঠাবে দুদক।
সেপ্টেম্বর ২০১৫ প্রান্তিক শেষে দেখা গেছে ৯টি ব্যাংকের ১৪ হাজার ৫৮১ কোটি টাকা মূলধন ঘাটতি রয়েছে। আর এ ঘাটতি প্রায় ৮০ শতাংশ রয়েছে সরকারি মালিকানার সোনালী, বেসিক ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের। ঘাটতিতে থাকা ব্যাংকগুলোর মধ্যে সরকারি মালিকানার রয়েছে ৬টি। সেপ্টেম্বরে সবচেয়ে বেশি ঘাটতি রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের; ব্যাংকটির ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা। সোনালীর দুই হাজার ১৫ কোটি, রূপালী ব্যাংকের ৩৭৪ কোটি, জনতার ৬৬৩ কোটি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ৫৩২ কোটি ও বেসিকের দুই হাজার ৯৯১ কোটি টাকা মূলধন ঘাটতি রয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) খেলাপি ঋণ ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা, যা ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ। যা এপ্রিল-জুন‘২০১৫ পর্যন্ত ছিল ৫২ হাজার ৫০৮ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতে বিতরণ করা মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ৫ লাখ ৫৩ হাজার ১৬৫ কোটি টাকা।
খেলাপি ঋণের ভাড়ে জর্জরিত ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো। সোনালী, রূপালী, জনতা, অগ্রণী বেসিক ও বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের বিতরণকরা ঋনের ২১ দশমিক ৮২ শতাংশই খেলাপি। টাকার অংকে যা দাড়ায় ২২ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের বিতরণকৃত ঋণের ২৪ দশমিক ৬৮ শতাংশই খেলাপি। টাকার অংকে যা ৫ হাজার ২৮৭ কোটি টাকার বেশি। যেখানে বেসরকারী খাতের বিতরণকরা ঋণের ৬ দশমিক শূণ্য ৯ শতাংশ খেলাপি।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভংকর সাহা বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকের আমানত সুরক্ষার স্বার্থে যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছি তার আলোকেই একটি পর্যায়ে গিয়ে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়েছি। ব্যাংকগুলো এখানে দ্বিমত পোষণ করেনি, বরং আমাদের স্বাগত জানিয়েছে। সুতরাও আমরা মনে করছি এখানে কাজ করতে আমাদের অসুবিধা হবে না।‘
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে যেসব ক্ষমতাসীন পরিচালক রয়েছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য : অ্গ্রণী ব্যাংকের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আব্দুল হামিদ (যিনি নানা অনিয়মে জড়িত এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরোধীতার পরও এমডি হিসেবে পুন:নিয়োগ পান), পরিচালক- আরস্ত খান (অর্থমন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব), অ্যাড. বলরাম পোদ্দার (সরকারদলীয় রাজনীতিবিদ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা), আব্দুর রউফ সরদার (বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের সাবেক সহসভাপতি), শামীম আহসান (এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক ও বেসিসের সভাপতি)।
সোনালীর চেয়ারম্যান ফজলে কবীর (সাবেক সচিব), ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রদীপ কুমার দত্ত, পরিচালক রনজিত কুমার চক্রবর্তী (সাবেক অতিরিক্ত সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়), মো. নাজিবুর রহমান (এমডি- এডভান্সড কেয়ারের), শেখর দত্ত (প্রেসিডেন্ট মনি সিংহ-ফরহাদ স্মৃতি ট্রাষ্ট), সেলিমা আহমেদ (ভাইস চেয়ারম্যান নিটল নিলয় গ্রুপ- ওমেন চেম্বারের প্রতিষ্ঠাতা), এমডি মাহবুব হোসাইন (সাবেক যুগ্ম সচিব), মো. সাহেব আলী মৃধা (সাবেক যুগ্ম সচিব), কাজী তারিকুল ইসলাম (সাবেক যুগ্ম সচিব), এনামুল হক চৌধুরী (সাবেক এমডি- সোনালী, অগ্রণী, শিল্প ও ব্র্যাক ব্যাংকের), এ কে এম রেজাউর রহমান (সাবেক অতিরিক্ত সচিব)।
রুপালী ব্যাংক ব্যাবস্থাপনা পরিচালক ফরিদ উদ্দিন, চেয়ারম্যান মনজুর হোসাইন (এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব), পরিচালক অমলেন্দু মুখার্জি (অর্থমন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং পলিসির সাবেক যুগ্ম সচিব), মো. আশিকুল হক চৌধুরী (ইআরডির সাবেক উপসচিব), অ্যাড. সত্ত্যেন্দ্র চন্দ্র ভক্ত (সমাজকর্মী), মহউদ্দিন ফারুকী (সাবেক ব্যবসায়ী নেতা), আবু সুফিয়ান (সরকার দলীয় রাজনীতিবিদ) ও ব্যারিষ্টার জাকির আহমেদ (সরকারদলীয় রাজনীতিবিদ)। জনতার চেয়ারম্যান শেখ মো. ওয়াহিদ উজ জামান (প্রিন্সিপাল সচিব- গভ. পিউপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ), ব্যাবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সালাম (কৃষি ব্যাংকের সাবেক প্রিন্সিপাল অফিসার, অগ্রণী-জনতার ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর), পরিচালক এনামুল হক (অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব), নাজিবুল ইসলাম দিপু (পোলাক রিয়েল এস্টেট ও পোলাক পেইন্টস এনড কেমিকেল), আর এম দেবনাথ (মুক্তিযোদ্ধা ও ব্যাংকিং সেক্টরে বিশেষজ্ঞ), বজলুল করিম (পুলিশের সাবেক এআইজি), মোহাম্মদ মইনুদ্দিন (রিয়েল এস্টেট ব্যবসা ও অন্যান্য ব্যবসা), মো. আবু নাসের (ব্যবসায়ী ও রাজনীতির সঙ্গে জড়িত), সংগীতা আহমেদ (স্কাই রুম ডাইনিং লিমিটেডের এমডি), মো. মাহবুবুর রহমান হিরণ (মুক্তিযোদ্ধা, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ)।