পাকিস্তানে সেন্সরের কবলে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস। পত্রিকাটি বাংলাদেশের ব্লগারদের নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনের স্থানটি ফাঁকা রাখা হয়। এ খবর দিয়েছে যুক্তরাজ্যের দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট। এতে বলা হয়, নিউ ইয়র্ক টাইমসের শনিবারের আন্তর্জাতিক সংস্করণে বাংলাদেশের ব্লগারদের নিয়ে প্রতিবেদন বেরিয়েছিল। কিন্তু তা ছিল হাওয়া হয়ে যায় পাকিস্তান থেকে প্রকাশিত পত্রিকাটির সংস্করণে। সেখানে প্রথম পৃষ্ঠার ওই অংশটি ফাঁকা রাখা হয়। এ ঘটনায় নিউ ইয়র্ক টাইমস বলেছে, প্রতিবেদনটি পাকিস্তানে আমাদের প্রকাশনার সহযোগী প্রতিষ্ঠানটি সরিয়ে ফেলেছে। সরিয়ে ফেলার বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং এর সম্পাদকীয় বিভাগের কোনো ভূমিকা নেই। ‘বাংলাদেশের ব্লগাররা বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে’ শিরোনামে নিউ ইয়র্ক টাইমসের অন্যতম ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক জশুয়া হ্যামারের প্রতিবেদনটি পত্রিকাটির আন্তর্জাতিক সংস্করণের প্রথম পৃষ্ঠার নিচের অংশে প্রকাশিত হয়। ইন্ডিপেন্ডেন্ট তাদের খবরের শিরোনাম করেছে, নিউ ইয়র্ক টাইমসের পাকিস্তান সংস্করণ ‘সেকুলার ব্লগারদের নৃশংস হত্যাকা-ের নিবন্ধটি সরিয়ে ফেলেছে; ফাঁকা রয়েছে পত্রিকাটির প্রথম ও দ্বিতীয় পৃষ্ঠা। নিউ ইয়র্ক টাইমসের পাকিস্তানি প্রতিনিধি নিবন্ধটি ছাড়া ও নিবন্ধটিসহ পত্রিকাটির দুটি কপির ছবি নিয়ে টুইট করেছে। প্রতিবেদনে হ্যামার বাংলাদেশে ব্লগারের ওপর নৃশংস হামলা ও তাদের কয়েকজনকে হত্যার উপর আলোকপাত করেন; যারা লিঙ্গ সমতা, মানবাধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতার পক্ষে লেখালেখি করছেন এবং ইসলামপন্থিদের সঙ্গে অনলাইনে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিবেদনে ব্লগার আসিফ মহীউদ্দীনকে তার মুক্ত চিন্তা, দৃষ্টিভঙ্গি ও সেকুলার ব্লগিংয়ের জন্য হুমকির মুখে দেশ ছাড়ার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। পাকিস্তানে ব্লাসফেমি আইন কার্যকর, ধর্ম নিন্দার যে কোনো ঘটনায় এই আইনে মৃত্যুদ-ের বিধান রয়েছে। আসিফ মহীউদ্দীনের উপর হামলার পর বাংলাদেশে ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় ২০১৩ সালে। এরপর দুই বছরে অভিজিৎ রায়, অনন্ত বিজয় দাশ, ওয়াশিকুর রহমান বাবু, নিলয় নীল এবং সবশেষ তিন মাস আগে প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই সব হত্যাকা-ে কট্টরপন্থিরা জড়িত বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে উঠে এসেছে। গ্রেপ্তার কয়েকজন স্বীকারোক্তিতে বলেছেন, ব্লগারদের ‘ইসলামবিরোধী’ হিসেবে বিবেচনা করে তারা হত্যাকা-ে প্ররোচিত হয়েছিলেন।