নিজেদের শরীরের রক্ত ঢেলে শিবিরমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবি

Slider শিক্ষা

 

2016_01_02_13_31_53_5oLf9pd6SgndoKQbnE58cVVVCNrbxp_original

 

 

 

 

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ ও হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজকে শিবির মুক্ত করতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেয়া ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের ফ্লোরে নিজেদের শরীরের রক্ত ঢেলে দাবি আদায়ের চেষ্টা করছেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

দাবি আদায়ে শনিবার দুপুর ১২টার পর কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেছে ছাত্রলীগ।

সমাবেশ শেষে দুপুর ১টার দিকে ছাত্রলীগের ২৯ নেতাকর্মী নিজেদের রক্ত সিরিঞ্জ দিয়ে নিয়ে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের ফ্লোরে ঢেলে দেন। এ সময় ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিতে থাকেন তারা। সঙ্গে ছিল কলেজ ক্যাম্পাস শিবিরমুক্ত করার দৃঢ়চেতনা।

নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি  বলেন, ‘চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসীন কলেজে শিবিরের জঙ্গি তৎপরতা ও দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড ইতোমধ্যে দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে। এখান থেকে পুলিশ অনেকবার অস্ত্র উদ্ধার করেছে। তারা এ দুটি কলেজকে মিনি ক্যান্টনমেন্ট বানিয়ে রেখেছিল। আমরা ইতোমধ্যে তাদের বিতাড়িত করে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের অধিকার বাস্তাবায়নের কাজ শুরু করেছি। কলেজ সংসদে বঙ্গবন্ধু ও নেত্রীর ছবি টানিয়েছি। সংবাদ সম্মেলন করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ৮ দফা দাবি জানিয়েছি। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা আজ থেকে কলেজে আমাদের গণতান্ত্রিক সমাবেশ করছি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি আদায়ে আমরা নিজের শেষ রক্তবিন্দু দিতেও প্রস্তুত। যেটি প্রতীকী রূপে আমরা কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে রক্ত ঢেলে প্রমাণ দিয়েছি। যতদিন দাবি না মানা হবে ততদিন আন্দোলন চলবে।’

এরপর ছাত্রলীগের নেতারা কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের দাবি বাস্তবায়নের পক্ষে জোরালো যুক্তি তুলে ধরেন। কলেজ অধ্যক্ষও দাবিগুলো বাস্তাবায়নের আশ্বাস দেন।

এদিকে ছাত্রলীগের আন্দোলনের কারণে কলেজে বাড়তি পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। কলেজ খুললেও ক্লাস বা পরীক্ষা কোনটিই হয়নি। গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে কলেজের সব হোস্টেল বন্ধ রয়েছে। কলেজের ছয়টি হোস্টেলে গতকালও তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ।

এদিকে গত ৩১ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম কলেজ ও মহসীন কলেজে ‘শিবিরের জঙ্গি তৎপরতা ও দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের চিত্র’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করার লক্ষ্যে ৮ দফা দাবি জানিয়েছিল মহানগর ছাত্রলীগ।

ছাত্রলীগের আট দফা দাবি হলো : ১. কলেজ ক্যাম্পাসে স্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন ২. মূল ফটক ছাড়া বাকি ১৬টি প্রবেশপথ বন্ধ করে দেয়া ৩ .ক্যাম্পাসের ভেতরে সব ধরনের আবাসিক স্থাপনা বন্ধ করে দেয়া ৪. শিবির ক্যাডারদের পৃষ্ঠপোষক হোস্টেল সুপার-মসজিদের ইমাম ও খতিবকে অপসারণ করা ৫. অস্থায়ী ও খণ্ডকালীন কর্মচারীদের অপসারণ ও দোকান বন্ধ করে দেয়া ৬. তিন দশক ধরে ছাত্র সংসদের নামে আদায় করা অর্থের হিসাব সাধারণ শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থাপন ৭. ছাত্রাবাস ও ছাত্রী নিবাসের নামে মিনি ক্যান্টনমেন্টগুলো বন্ধ করে দেয়া এবং ৮. নাশকতা মামলার আসামি ছাত্রদের গ্রেপ্তার ও ছাত্রত্ব বাতিল।

 

চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রলীগের আজকের সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- নগর যুবলীগ নেতা নুরুল মোস্তাফা টিনু, নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল অজিম রনি, সহ-সভাপতি নাজমুল হোসেন রুমি, একরামুল হক রাসেল, যুগ্ম সম্পাদক গোলাম সামদান জনি, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুল করিম, আরিফুল ইসলাম প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *