উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় রপ্তানি বাড়াতে হবে

অর্থ ও বাণিজ্য
2015_12_28_16_16_15_2PnPcMta6O3UtRhvAHOp5204FCKCq3_original

 

 

 

 

ঢাকা: দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে ব্যবসায়ীদের রপ্তানি বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর তার জন্য পণ্য উৎপাদনে বহুমুখিতা নিশ্চিতের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দিন দিন বাংলাদেশর প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আগ্রহ বেড়ে চলছে। তাই ব্যবসায়ীদের একটা পণ্য ধরে বসে থাকলে চলবে না। পণ্য উৎপাদনে বহুমুখিতা নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কী ধরনের পণ্যের চাহিদা আছে, সেদিকে খেয়াল রেখে পণ্য উৎপাদন করতে হবে।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এটি মেলার ২১তম আসর।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা আয়োজনের ফলে দেশি-বিদেশি ক্রেতারা বিভিন্ন নতুন নতুন পণ্যের সঙ্গে পরিচিত হতে পারে। বিদেশিদের অংশগ্রহনের ফলে আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা নতুন অভিজ্ঞতা পাবেন। আর এই মেলার মাধ্যমে রপ্তানি আদেশ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা, বিশেষ করে আমি ব্যবসা করতে আসিনি, দেশের উন্নয়নে কাজ করতে এসেছি। ব্যবসায়ীদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়ার জন্য এসেছি।

তিনি বলেন, বর্তমানে বিশ্বের ১৯২টি দেশে ৭২৯টি পণ্য রপ্তানি করছি। কিন্তু সমস্যা হলো কোনো কোনো ব্যবসায়ী একটা পণ্য নিয়েই বসে থাকেন। এই পণ্যই তিনি রপ্তানি করছেন। তিনি মনে করেন, এটাই সব সময় রপ্তানি করতে হবে। তা না করে পণ্য উৎপাদনে ব্যবসায়ীদের বহুমুখি হতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন বাজারে কী ধরনের পণ্য চায়, সে অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন করতে হবে। তাহলে রপ্তানি বাড়বে।

ব্যবসায়ীদের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক সময় আমাদের দেশের জাহাজ রপ্তানি হতো। মাঝখানে এ শিল্পের রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু সরকার তাদের প্রণোদনা দিয়েছে। এতে দেশ থেকে পুনরায় জাহাজ শিল্পের রপ্তানি বাড়ছে।

তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নে শিল্প কারখানায় একটি জিনিস উৎপাদন করলে চলবে না। দেশের ইন্ডাস্ট্রিগুলোকে বহুমুখিকরণ করতে হবে। তাদের ভাবতে হবে কী কী জিনিস রপ্তানি করা যায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রপ্তানি বাড়াতে রপ্তানি বিষয়ক গবেষণার জন্য ২৫ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পোশাক শিল্পের জন্য গার্মেন্ট শিল্প পার্ক স্থাপন করছি। অনেক আগেই জায়গা দিয়েছি। কিন্তু এখনো গার্মেন্ট মালিকরা বসে আছে। বসে থাকলে চলবে না। গার্মেন্ট পল্লী হলে রপ্তানি আরো বাড়বে। এক্ষেত্রে বেসরকারি সেক্টরকে আরো এগিয়ে আসতে হবে। একই সঙ্গে পণ্যের মান উন্নয়ন ও ব্র্যান্ডিংয়ের দিকে খেয়াল রাখার আহ্বান জানান তিনি।

দেশের উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এবার ৬ দশমিক ৫ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি; যা অনেক উন্নত দেশ করতে পারেনি। মূল্যস্ফিতী ২০০৯ সালে ডাবল ডিজিটে চলে গিয়েছিল আমরা তা সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে এনেছি। আগে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ৪৩ মার্কিন ডলার, কিন্তু এখন ১৩১৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। ৫ কোটি মানুষ নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তে উঠে এসেছে।

রিজার্ভের বিষয় উল্লেখ করে শেখ হাসিন বলেন, দেশের রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। দেশের উন্নয়ন প্রকল্পের ৯০ ভাগ স্বঅর্থায়নে করছি। কারো কাছে ভিক্ষা করি না। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে রপ্তানি বাড়াতে হবে। তাই আমাদের পণ্যের কোথায় বাজার আছে তা খুঁজে বের করতে হবে।

মেলার উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ছাড়াও দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *