ঢাকা : সুখ, স্বাচ্ছন্দ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে সবাই নতুন বছরকে স্বাগত জানায়। আর পুরনো বছরের ব্যর্থতা, তিক্ততা, গ্লানী ও হতাশাকে দেয়া হয় বিদায়। গেলো বছরটায় সবচেয়ে বেদনায় ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
২০১৫ সালকে বরণ করে নিতে না নিতেই আঘাতটা আসে খালেদা জিয়ার জীবনে। গত ২৪ জানুয়ারি গুলশানে নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায় তার কাছে সংবাদ আসে ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো মালয়েশিয়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন। মুদ্রা পাচারের মামলায় ছয় বছর কারাদণ্ডের সাজা নিয়ে বিদেশে পালিয়ে ছিলেন তিনি।
আর সেই বেদনার কথা স্মরণ করেই সবাইকে খ্রিস্টীয় নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এ উপলক্ষে বেগম খালেদা জিয়া এক বাণীতে বলেন, ‘খ্রিস্টীয় নববর্ষ উপলক্ষে আমি দেশবাসী এবং বিশ্ববাসী সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। কামনা করি সকলের অব্যাহত সুখ, স্বাচ্ছন্দ, শান্তি ও সমৃদ্ধি। শুভ নববর্ষ।’
‘১ জানুয়ারি প্রতিবছর নতুন বার্তা নিয়ে আমাদের দ্বারে উপস্থিত হয়। পুরনো বছরের ব্যর্থতা, তিক্ততা, গ্লানী ও হতাশাকে ঝেড়ে ফেলে নবউদ্যোমে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায় নববর্ষ। পাশাপাশি অতীতের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে তৎপর হতে হবে বছরের প্রথমদিন থেকেই’, বললেন খালেদা জিয়া।
তিনি বলেন, ‘গেলো বছরটি এখন আমাদের মনে স্মৃতি হয়ে থাকবে। গত বৎসরের বেশকিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা, স্বজন হারানোর বেদনা এবং অধিকার হারানোর যন্ত্রণা আগামী বৎসরে আমাদের একদিকে যেমন বেদনার্ত করবে আবার অন্যদিকে নুতন উদ্যোমে এগিয়ে যেতে তাগিদ সৃষ্টি করবে। বাংলাদেশে দুরভিসন্ধিমূলক পরিকল্পনায় গণতন্ত্রকে বিপন্ন করা হয়েছে। বৈচিত্রের মধ্যে অন্তর্নিহিত ঐক্য গণতন্ত্রের সারাৎসার, কিন্তু বাংলাদেশে চিরন্তন গণতন্ত্রের বহুত্ত্ববাদী বৈচিত্রকে অবসন্ন করে মহলবিশেষ ক্রমাগতভাবে রাষ্ট্রের একচ্ছত্র একমাত্রিক চরিত্র দান করতে এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছিয়েছে।’
নতুন বছরে আহ্বান জানিয়ে বিএনপি নেত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশসহ বিশ্বময় সংঘাত আর অশান্তির ঘটনা প্রবাহে নতুন বছরটিকে গণতন্ত্র, শান্তি ও অগ্রগতির বছরে পরিণত করতে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশে অজস্র রক্তঋণে অর্জিত গণতন্ত্র অপহৃত হয়েছে। গণবিরোধী শক্তি জনগণের সকল অধিকারকে বন্দী করে রেখেছে। এমতাবস্থায় সকল গণতান্ত্রিক শক্তির মিলিত সংগ্রামে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘নতুন বছরটি সবার জীবনে বয়ে আনুক বিজয়, অনাবিল সুখ ও শান্তি, বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে প্রবাহিত হোক শান্তির অমিয় ধারা, দূর হয়ে যাক সব অন্যায়-উৎপীড়ণ, নির্যাতন। বন্ধ হউক হত্যা, গুম, খুন, যুদ্ধ বিগ্রহ ও অমানবিকতাসহ সকল ধরণের দমনমূলক নৃশংসতা- নববর্ষের শুরতে আমি এই কামনা করছি। হৃত গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য বাংলাদেশের সংগ্রামী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানাই।’