ঢাকা : জেলখানায় বসে কোনো কোনো সন্ত্রাসী আওয়ামী মেয়র প্রার্থীদের সঙ্গে চুক্তি করছে। আবার রাজধানীর বেশ কয়েকটি পেশাদার সন্ত্রাসী গ্রুপ নির্বাচনী এলাকাগুলোতে তাদের পক্ষে ভাড়ায় নিয়োজিত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন কথা দিয়ে চিড়া ভেজাতে চেয়েছেন কিন্তু চিড়া ভিজছে না। নির্বাচনী এলাকাগুলোতে নির্দেশনা মানছেন না ওসি/ডিসিরা। কারণ সরকারের স্নেহমাখা সন্ত্রাসীদের তাণ্ডব নিয়ন্ত্রণ করতে সাহস পাচ্ছে না স্থানীয় প্রশাসন।’
রিজভী বলেন, ‘আমরা আবারো নির্বাচন কমিশনকে দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই- সরকারদলীয় প্রার্থীর পক্ষে পক্ষপাতিত্ব না করার জন্য, প্রশাসন যন্ত্রকে নিরপেক্ষ রাখতে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়ে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করুন।’
তিনি বলেন, ‘ভোটের দিন নির্বাচনী কেন্দ্রে বিরোধী প্রার্থীর এজেন্টদের নিরাপত্তা দিতে হবে। ভোটাররা যাতে তাদের ইচ্ছামতো ভোট দিতে পারে তার গ্যারান্টি দিতে হবে। অন্যথায় মিরজাফরের মতো বিশ্বাসঘাতকতার তকমা সুদীর্ঘকাল ধরে বয়ে বেড়াতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তীব্রতম করা হয়েছে সন্ত্রাস। ধানের শীষের প্রার্থীর প্রচারে লিপ্ত মাইক ভেঙে দেয়া হচ্ছে, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে, পথসভার স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ করে হামলা চালানো হচ্ছে, মুখোশ পরে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী ও তার কর্মীদেরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা বা হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর জখম করা হচ্ছে। বিভিন্ন পৌর এলাকায় শাসকদলের নেতারা বলে বেড়াচ্ছেন, যে ভোট গ্রহণই হোক না কেন গণনা হবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে, পাশাপাশি ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক ভীতি সৃষ্টি করার জন্য নানা ধরনের হুমকি ও উস্কানিমূলক কথাবার্তাও বলা হচ্ছে।’
রিজভী আহমেদ বলেন, ‘সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া পৌরসভা নির্বাচনে বর্তমান মেয়র ও ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী আখতারুল হকের ভাই হোসেন আলী বাবু এবং পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রসুলসহ দলের নয়জন নেতাকর্মী ও সমর্থককে গতরাতে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আজ সকালে যশোরের বর্তমান পৌর মেয়র ও ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী মারুফের নির্বাচনী প্রচারণায় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বন্দুক, দা, কুড়াল দিয়ে তার ওপর আক্রমণ চালালে মারুফ এবং নেতাকর্মীরা প্রাণভয়ে দৌড়ে পার্শ্ববর্তী একটি ক্লিনিকে আশ্রয় নিয়ে জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করে। কিন্তু সন্ত্রাসীরা গোটা ক্লিনিকটিকে ঘিরে রেখে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে সেখানে কি পরিনতি হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘ফরিদপুরের নগরকান্দা পৌরসভা নির্বাচনে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালানোর সময় জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাদা মিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক মোদাছের আলী ঈসাসহ নেতাকর্মীদের ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা চালালে তারা প্রাণভয়ে পালিয়ে যায়। এভাবে আমাদের সব জায়গায় মেয়র প্রার্থীদের উপর হামলা করা হচ্ছে। তারা প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারছে না। এমন কি সাধারণ ভোটাররা ভয়-ভীতির মধ্যে আছে, তারা কি ভোট দিতে পারবে কি না।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের যুববিষয়ক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, মোহাম্মদ শাহাজান মিয়া সম্রাট প্রমুখ।