১৫ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ মুক্ত দিবস

Slider টপ নিউজ

index

 

 

 

 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: ১৫ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে ১৯৭১ সালের এ দিনে দখলদার পাক হানাদার বাহিনীর কবল থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জকে মুক্ত করেছিলো বাংলার দামাল ছেলেরা। উড়িয়েছিলো স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সাত নম্বর সেক্টরের অধীন চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহকুমায় ছিল দু’টি সাব সেক্টর। একটি মহদিপুর সাব সেক্টর, অন্যটি দলদলী সাব সেক্টর। মহদিপুর সেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর এবং দলদলী সাব সেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন লেফটেন্যান্ট রফিক।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ৭ নভেম্বর লে. রফিকের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা মকরমপুর ও আলী নগরে অবস্থিত পাক বাহিনীর ঘাঁটিতে অতর্কিত আক্রমণ চালালে পাঁচ পাক সেনা নিহত হয়। এ সময় অন্যরা মহানন্দা নদী পার হয়ে পালিয়ে যায়।

অপরদিকে ১০ ডিসেম্বর চরবাগডাঙ্গা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর দখলের জন্য মুক্তিযোদ্ধারা অগ্রসর হন এবং পাক সেনাদের বাঙ্কার দখল করে নেন। এ সময় অন্যান্য এলাকা শত্রু মুক্ত হলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর থেকে যায় পাকিস্তানি সেনা ও তাদের অনুগত রাজাকারদের দখলে। ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা শহর দখলের জন্য মহানন্দা নদীর ওপারে বারঘরিয়ায় অবস্থান নেন।

১৪ ডিসেম্বর ভোর রাতে ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর তার বিশাল বাহিনীকে তিন ভাগে ভাগ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর দখলের জন্য আক্রমণ শুরু করেন। তিনি একটি ছোট নৌকা নিয়ে মহানন্দা নদী পার হয়ে রেহাইচর গ্রামে অবস্থান গ্রহণ করেন এবং শত্রুদের লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করতে করতে সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। রাতের আঁধার পুরোপুরি কেটে যাওয়ার আগেই পার্শ্ববর্তী একটি বাড়ির জানালা থেকে পাক বাহিনীর ছোড়া একটি বুলেট ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরের কপালে বিদ্ধ হলে ঘটনাস্থলেই তিনি শহীদ হন।

পরের দিন ১৫ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের সাড়াশী অভিযানে পাকিস্তানিরা পিছু হটলে মেজর গিয়াস, লে. রফিক, লে. কাইউম, ডা. মইন উদ্দীন আহমেদ মন্টু ও শাহাজাহান মিয়ার নেতৃত্বে মক্তিযোদ্ধারা দলে দলে শহরে প্রবেশ করলে শত্রুমুক্ত হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ।

মুক্তিযোদ্ধারা উদ্ধার করেন শহীদ ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরের মরদেহ। ওই দিনই বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের অন্তিম ইচ্ছে অনুযায়ী ঐতিহাসিক ছোট সোনামসজিদ চত্বরে তাকে সমাহিত করা হয়।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *