ঢাকা: কোনো আসামিকে প্রচার বা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে গণমাধ্যমে হাজির করা হবে না, এমনটিই আশা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। এ কাজ থেকে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যের বিরত রাখতে পুলিশ প্রধান প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জেএমবি’র এক জঙ্গির রায় দেওয়ার সময় বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) এমন পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
তবে ২০০৯ সালে গাজীপুরে বোমাসহ আটক জঙ্গি মামুন ওরফে জাহিদকে বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় কমিয়ে যাবজ্জীবন দণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত আশা প্রকাশ করে বলেন, কোনো আসামিকে প্রচার বা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে আদালতে হাজির করার আগে গণমাধ্যমে উপস্থিত করা থেকে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী যেনো বিরত থাকে, এজন্য পুলিশের মহাপরিদর্শক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবেন।
মামুনের মামলায় তদন্তে উদাসীনতার কারণে, তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পুলিশ মহাপরিদর্শক বিভাগীয় ব্যবস্থা নেবেন আশা হাইকোর্টের।
এছাড়াও এ ঘটনায় তখনকার গাজীপুরের পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বোমা বা গ্রেনেডসহ জাহিদকে হাজির করে সংবাদ সম্মেলন করা, দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ ছিলো বলে অভিহিত করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
২০০৯ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন জেএমবি’র সদস্য মামুনুর রশিদ ওরফে জাহিদকে টঙ্গীর হরতইল গ্রামের একটি ভাড়া বাসা থেকে ৫টি হ্যান্ড গ্রেনেড, ডেটোনেটর ও বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ আটক করে পুলিশ।
পরে গাজীপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার আব্দুল বাতেনের কার্যালয়ে গ্রেনেডসহ মামুনকে সংবাদ সম্মেলনে হাজির করা হয়। সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে টেবিলে থাকা গ্রেনেড মামুন ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। এসময় গ্রেনেড বিস্ফোরণে সাংবাদিক, পুলিশসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।
এ ঘটনায় করা মামলায় ২০১৩ সালে ১৩ মার্চ ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ মামুনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। পরে ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিলের শুনানি শেষে হাইকোর্ট মামুনের মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন সাজা দেন।
আদালতে আসামীপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, এস এম শাহজাহান ও তাজুল ইসলাম।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মনিরুজ্জামান কবীর। আদালতের রায় ও পর্যবেক্ষণের বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন শেখ মনিরুজ্জামান।