বাংলাদেশ গণতন্ত্রের নতুন সংজ্ঞা তৈরি করেছে

Slider বাধ ভাঙ্গা মত
1449151232
বাংলাদেশে ব্যতিক্রমী গণতন্ত্র চলছে। যেখানে শুধু একটি সুরেই কথা বলা যাবে। বাংলাদেশ গণতন্ত্রের নতুন সংজ্ঞা তৈরি করেছে যেটা কেউ জানেও না এবং বুঝেও না। সংসদের ভেতরে ও বাইরে বিরোধী দলের কোনো আওয়াজ নেই বলে জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী ব্যারিস্টার সারা হোসেন।
আজ বৃহস্পতিবার এক সাক্ষাৎকারে সারা হোসেন বলেন, গণতান্ত্রিক পরিবেশের পূর্বশর্তই হচ্ছে যেখানে নানান মত প্রকাশ করা সম্ভব।
তিনি বলেন, মার্কিন কংগ্রেস ও ইউরোপীয় পার্লামেন্ট বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যে উদ্বেগ জানিয়েছে আমাদের দেশের অনেক মানুষই এ সমস্যার মধ্যে রয়েছে। পরিস্থিতির কারণে অনেকে একথা বলতে পারছে না।
সারা হোসেন বলেন, এ বিষয়ে সোচ্চার থাকার কথা দেশের মানবাধিকার কমিশনের, আদালতের। কিন্তু আমরা কতটুকুই বা তাদের থেকে দিকনির্দেশনা পাচ্ছি। এসব বিষয় নিয়ে সোচ্চার হওয়ার কথা আমাদের সংসদের নিজেরই। কারণ এ সরকার ভাবছেন তারা সংবিধান অনুযায়ী চলছেন।
তিনি বলেন, মানুষের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার সুরক্ষা করার দায়িত্ব সংসদের নেয়া উচিত। সেটা না করে সংসদের অভিজ্ঞ সংসদ সদস্যরা নিজেরাই অন্যদের হুমকি দিচ্ছে কথা বলার জন্য। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যম আর কতটুকু স্বাধীনতা ভোগ করবে? সবার গলা টিপে ধরলে হয়তো কেউ কিছু বলবে না। কিন্তু গলাটিপে নাগরিক অধিকার সুরক্ষা করা যাবে না।
সারা হোসেন বলেন, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কি বলা যাবে আর কি বলা যাবে না তা আইনে বলা আছে। এই আইনকানুনগুলোকে স্বেচ্ছাচারীভাবে আরোপ করা হচ্ছে। টেলিভিশন চ্যানেলের মালিককে আটকে রাখা হচ্ছে মাসের পর মাস। কোনো রেহাই নেই। অথচ তাকে জামিন না দেয়ারও কোনো কারণ নেই।
সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী বলেন, পত্র-পত্রিকা ও চ্যানেলগুলোতে এক ধরনের সেলফ সেন্সরশিপ চলছে। কখন কে কিসের মধ্যে পড়তে পারে এ ভয়ে অনেকে অনেক কিছু লিখছে না। এগুলো প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলছে না। কিন্তু কারো সঙ্গে কথা বললে স্বীকার করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে তো প্রকাশ্যে বন্ধ করা হয়েছে। শুরুতে বলা হলো নিরাপত্তার কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করা হয়েছে। তখন অধিকাংশ মানুষই ভেবেছিল নিরাপত্তার কারণে সাময়িকভাবে বন্ধ করাই যেতে পারে। কিন্তু এতদিনের জন্য কেন বন্ধ করা হয়েছে তার কোন যৌক্তিকতা নেই।
তিনি বলেন, আমাদের সংবিধান অনুযায়ী বাকস্বাধীনতা কখনও কখনও রুদ্ধ করা যায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে। শুধু আইনের কোনো রক্ষাকবচ দিয়ে। আইনি যে বাধাটা দেয়া হবে সেটা অবশ্যই যৌক্তিক হতে হবে। এর বাইরে কিছু করা যাবে না। আমাদের দেশে এখন আইন ছাড়া আড়াল থেকে হুমকি ধমকি দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে বাকস্বাধীনতা বন্ধ করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *