মিয়ানমার ফেরত ৫ কিশোরকে হস্তান্তর জেলা প্রতিনিধি

Slider জাতীয় সারাবিশ্ব

 

2015_12_03_17_45_13_lvnToxJelmVM21VbQDpCG1HxAegPzu_original

 

 

 

 

কক্সবাজার : মিয়ানমার থেকে সপ্তম দফায় ফেরত আনা ৪৮ জনের মধ্যে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ৫ জনকে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির জিম্মায় স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের নিদের্শ দিয়েছেন আদালত। একই সাথে এদের স্বজনদের কাছে পৌঁছানোর পর আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সুশান্ত প্রসাদ চাকমা এ নির্দেশ দেন।

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি কক্সবাজার ইউনিটের কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক আবু হেনা মোস্তফা কামাল বাংলামেইলকে জানান, অপ্রাপ্ত বয়স্ক ৫ শিশুকে আদালতে হাজির করা হলে রেড ক্রিসেন্টের পক্ষে জিম্মা চেয়ে আবেদন করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ নিদের্শনা দেন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে কক্সবাজার সদরের সৈয়দ হোসেনকে এবং রাতের মধ্যেই আরো ৪ জনকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করতে কক্সবাজার থেকে রওনা হবেন রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকরা।

ফেরত আনা কিশোররা হলো- কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও ইউনিয়নের দরগা পাড়ার মকতুল হোসেনের ছেলে সৈয়দ হোসেন (১৭), নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার সন্তোষপাড়ার মতিউর রহমানের ছেলে বিদ্যুৎ হোসেন (১৭), যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার ভেড়ারপানি এলাকার আবু হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ শাওন (১৭), সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর উপজেলার জালালপুর এলাকার সিদ্দিক আলীর ছেলে জয়নাল আবেদীন (১৬) ও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার ইলমদি এলাকার ফজলুল হকের ছেলে মোহাম্মদ সবুজ (১৭)।

অপরদিকে মিয়ানমারের জলসীমা থেকে উদ্ধার হওয়া অভিবাসন প্রত্যাশীর মধ্যে সপ্তম দফায় বুধবার দেশে ফেরত আনা ৪৮ জনের মধ্যে অপর ৪৩ জনকে এখনো কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ বাংলামেইলকে জানান, ফেরত আনা এ ৪৮ জনের মধ্যে ৫ শিশুকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের জন্য আদালতের নিদের্শনা মতে রেড ক্রিসেন্টের জিম্মায় দেয়া হয়েছে। অপর ৪৩ জনকে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে রেখে পাচার হওয়ার তথ্য সংগ্রহের জন্য কাজ চলছে। পুলিশসহ গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন তথ্য সংগ্রহের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে। এ ৪৩ জনকে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহায়তায় শুক্রবার বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ফেরত আনা এ ৪৮ জনকে খাদ্য, চিকিৎসা ও যাতায়ত খরচ সহ মানবিক সহায়তা প্রদান করছে আইওএম।

আইওএম’র ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার আসিফ মুনীর জানান, ফেরত আসাদের মধ্যে ১৩টি জেলার বাসিন্দা রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কক্সবাজারের ১৮ জন। এছাড়া যশোরের ১১ জন, টাঙ্গাইলের ৪ জন, নারায়নগঞ্জের ২ জন, কুষ্টিয়ার ২ জন, বগুড়ার ৩ জন, সিরাজগঞ্জের ৩ জন, খুলনা, নোয়াখালী, নওগাঁ, কিশোরগঞ্জ ও গোপালগঞ্জের ১ জন করে রয়েছে।

মিয়ানমারের জলসীমায় সাগরে জাহাজে ভাসমান অবস্থায় গত ২১ মে ২০৮ জন ও ২৯ মে ৭২৭ জন অভিবাসন প্রত্যাশীকে উদ্ধার করেছিল দেশটির নৌবাহিনী। এরপর প্রথম থেকে উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের বাংলাদেশি নাগরিক বলে দাবি করে আসছিল মিয়ানমার।

পরে উভয় দেশের পররাষ্ট্র দপ্তর তালিকা তৈরি করে যাচাই-বাছাই শেষে বাংলাদেশি হিসেবে শনাক্ত করা ব্যক্তিদের ফেরত আনার প্রক্রিয়া শুরু করে। এর মধ্যে ৮ ও ১৯ জুন, ২২ জুলাই, ১০ ও ২৫ আগষ্ট এবং ১২ অক্টোবর ৬ দফায় বাংলাদেশি হিসেবে শনাক্ত হওয়া ৭২৯ জনকে দেশে ফেরত আনা হয়।

গত ১ ডিসেম্বর মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) মধ্যে পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশি হিসেবে শনাক্ত আরও ৪৮ অভিবাসন প্রত্যাশীকে ফেরত আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সর্বশেষ সপ্তম দফায় এদের ফেরত আনার মধ্য দিয়ে ৭৭৭ জন অভিবাসন প্রত্যাশী বাংলাদেশিকে ফেরত আনা হলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *