রাজধানীর গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে এক নারী রোগীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে ওই হাসপাতালের চাকরিচ্যুত ব্রাদার (স্টাফ নার্স) সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
পাশাপাশি আগামী ৭ ডিসেম্বর তাকে আদালতে হাজির করতেও পুলিশের গুলশান জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) ও গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ এ আদেশ দেন।
রুলে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অভিযুক্ত সাইফুলের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছ। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, পুলিশের আইজি, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, ডিএমপি কমিশনার, গুলশানের ডিসি ও এসি এবং গুলশান থানার ওসিকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষে আদালতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, বৃহস্পতিবার একটি জাতীয় দৈনিকে ‘ইউনাইটেড হাসপাতালে নারী রোগীকে যৌন নিপীড়ন’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলেও এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রচারিত হয়। ওই প্রতিবেদন নজরে এলে আদালত বৃহস্পতিবারই স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দেন।
জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউনাইটেড হাসপাতালের আইসিইউতে এক নারী রোগীকে যৌন নিপীড়নের চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। যৌন নিপীড়নের অভিযোগে হাসপাতালের সাইফুল ইসলাম নামে ব্রাদারকে (স্টাফ নার্স) চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাইফুলের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি।
কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সোমবার (৩০ নভেম্বর) ঘটনাটি ঘটলেও বুধবার (২ ডিসেম্বর) বিষয়টি জানাজানি হয়। এর মধ্যে মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) সাইফুলকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চাকরিচ্যুত করে।
রোগীর বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি (নারী) অজ্ঞান ছিলেন। হঠাৎ জ্ঞান ফিরলে তিনি অভিযুক্ত ব্রাদারের হাতে নিপীড়িত হওয়ার বিষয়টি টের পান। পরে তিনি ওই ব্রাদারের মাধ্যমেই অন্য নার্সদের ডাকার চেষ্টা করেন। প্রায় আধা ঘণ্টা পর নার্স আসেন। নার্স এসে তার (রোগী) কাছে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং তার স্বামীকে না জানাতে অনুরোধ করেন। এক পর্যায়ে ওই নারী স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও তাকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি।
ওই নারীর স্বামী বলেন, প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর তিনি স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারেন। অভিযুক্ত ওই ব্রাদার সাইফুলকে পুলিশে সোপর্দ করার জন্য বলেন। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রহস্যজনক কারণে সাইফুলকে পুলিশে দিতে রাজি হয়নি। বুধবার ওই রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরেছেন।