ঢাকা : দীর্ঘদিন ধরে ঋণের সুদহার ‘সিঙ্গেল ডিজিটে’ নামিয়ে আনার দাবি জানিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। বিনিয়োগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিবন্ধকতা ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদহার ক্রমেই ক্রমেই শিথিল হচ্ছে। সর্বশেষ আগস্ট মাসে ঋণের ক্ষেত্রে সুদহার কমে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আগের মাসেও যা ছিল ১১ দশমিক ৪৮ শতাংশ। সুদহারে এ নিম্নমুখি প্রবণতায় ঋণ আমানত ও সুদহারের ব্যবধান (স্প্রেড) আরও কমেছে। অক্টোবর মাস শেষে ঋণ ও আমানতের গড় সুদহার ৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ দাঁড়িয়েছে।
সরকারি ও বেসরকারি অধিকাংশ ব্যাংকগুলোর ঋণ-আমানতের সুদহার ৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। তবে স্প্রেড নির্দেশনা মানছে না বেসরকারি ও বিদেশি ১৯ ব্যাংক। যাদের মধ্যে সর্বোচ্চ সুদহার আছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংকের। যদিও এ হার ৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর নির্দেশনা আছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, অক্টোবর মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো ঋণের ক্ষেত্রে ১০ দশমিক ১৯ শতাংশ হারে সুদ আদায় করেছে। আমানতের বিপরীতে দিয়েছে ৬ দশমিক ৬২ শতাংশ সুদ। স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। বিশেষায়িত ব্যাংকের স্প্রেড মাত্র ২ দশমিক ২৫ শতাংশ, যা ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম। আমানতের বিপরীতে এ ব্যাংকগুলো দিয়েছে ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ সুদ। এ খাতের ব্যাংকগুলোর ঋণের ক্ষেত্রে ভারিত গড় সুদহার ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ দাঁড়িয়েছে। অক্টোবর মাসে বেসরকারি ব্যাংকগুলো ঋণের ক্ষেত্রে ১১ দশমিক ৯৫ শতাংশ হারে সুদ আদায় করেছে। আমানতের বিপরীতে দিয়েছে ৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ সুদ। স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। তবে বিদেশি ব্যাংকগুলোর স্প্রেড এখনো ৫ শতাংশ পয়েন্টের ওপরে আছে। বিদেশি ব্যাংকগুলো আমানতের বিপরীতে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ সুদ দিয়ে ঋণের বিপরীত আদায় করছে ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ সুদ। এ খাতের ব্যাংকগুলোর স্প্রেড সবচেয়ে বেশি ৭ দশমিক ৬ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঋণের সুদের হার কমানোর বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মানছে না ১৯টি বাণিজ্যিক ব্যাংক। এর মধ্যে ১৩টিই বেসরকারি ও ছয়টি বিদেশি ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি স্প্রেড আছে বিদেশি খাতের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের। ব্যাংকটির স্প্রেড ৯ দশমিক ৭১ শতাংশ। এরপর আছে বেসরকারি খাতের ব্র্যাক ব্যাংকের। ব্যাংকটির স্প্রেড ৯ দশমিক ০৬ শতাংশ।