গ্রাম বাংলা ডেস্ক: ইসরাইলি ট্যাংকের হামলায় আজ বৃহস্পতিবার সকালে গাজায় আরো ১৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৭১৫-এ।
বর্বর এ হামলায় এখন পর্যন্ততিন সহস্রাধিক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। হতাহতদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। নিহতদের মধ্যে অন্তত ৩০ শতাংশ নারী ও শিশু।
আল জাজিরা টেলিভিশনের অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, গাজায় ইসরাইলি হামলার স্বাধীন তদন্তের পক্ষে ভোট দিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল। বুধবার জেনেভায় এ ভোটাভুটি হয়।
কাউন্সিলের ৪৭ সদস্যের মধ্যে ২৯ সদস্য তদন্তের পক্ষে ভোট দেয়। অনেক ইউরোপীয় রাষ্ট্রসহ ১৭ সদস্য ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে। তবে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি তদন্তের বিপক্ষে ভোট দেয়।
গাজায় যুদ্ধবিরতির ল্েয আন্তর্জাতিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
ইসরাইলের চলমান হামলার প্রেক্ষাপটে এক লাখের বেশি ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
ইসরাইলের দাবি, বুধবার তাদের তিনজন সেনা নিহত হয়েছে। এ নিয়ে ইসরায়েলের ৩২ জন সেনা এবং তিনজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, হামাসের নেতা খালেদ মেসহাল মানবিক যুদ্ধ বিরতি মেনে নিতে সম্মত আছেন। তবে ইসরাইলের সাথে সম্পূর্ণভাবে যুদ্ধবিরতি মেনে নেবেন না যতক্ষণ না ওই অঞ্চল থেকে দীর্ঘ দিনের অবরোধ তুলে নেয়া না হয়।
খালেদ মেসহাল বলেছেন, তাদের দেয়া শর্তগুলো বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত হামাস দীর্ঘস্থায়ী অস্ত্র বিরতির প্রস্তাব নাকচ করবে।
শর্তগুলোর মধ্যে গাজার ওপর থেকে আট বছরের অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেয়া, মিশরের সাথে রাফা সীমান্ত খুলো দেয়া ও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্ত করে দেয়ার দাবিগুলো রয়েছে।
তবে তিনি বলেছেন, হামাস মানবিক অস্ত্র বিরতির পথ বন্ধ করবে না।
তিনি বলেন, আমাদের কয়েক ঘন্টা শান্ত থাকা উচিত। এর মধ্যে যারা আহত হয়েছে তাদের সরিয়ে নিয়ে যায়া এবং ত্রাণ সরবরাহ বাড়ানোর জন্য কাজ করা উচিত।
মেসহাল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান, যেন গাজাতে তারা ওষুধ, জ্বালানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় বস্তু সরবরাহ করে।
বুধবার মিসরের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ঈদ উপলক্ষে মানবিক কারণে সপ্তাহান্তে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে পারে।
ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইসরাইলের সর্বশেষ হামলার সূত্রপাত ৮ জুলাই। ইসরাইলি তিন কিশোরকে সম্প্রতি অপহরণ ও হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই হামলা শুরু হয়। হামাসই ওই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দাবি করে দেশটি। তবে হামাস তা অস্বীকার করেছে।
পরে ফিলিস্তিনি এক কিশোরকে একইভাবে হত্যা ও অপহরণের পর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। এরপর গাজা থেকে রকেট ছোড়া হচ্ছে- এমন দাবি তুলে ‘অপারেশন প্রটেক্টিভ এজ’ শুরু করে ইসরাইল।
এর আগে ২০১২ সালের নভেম্বরে গাজায় অভিযান চালায় ইসরাইল। তখন আট দিনের মাথায় মিসরের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। এবারো মিসর মধ্যস্ততায় এগিয়ে এসেছিলো। কিন্তু সফল হয়নি।