লাওয়াছড়া
নিরিবিলি জগতে নৃত্যেরই ছন্দে আপন ভুবনে চল ঘুরে আসি মর্ত্যে। এই নিরিবিলির ছোঁয়া পেতে আমরা যারা শহুরে তাদের অনেক কষ্টই করতে হয় বৈ কি! কাজের ফাঁকে এক মিনিট ওই বুনো লতার দিকে দেখুন না, পুরো অমৃত। তবে পুরো সবুজে হারিয়ে যেতে একটু কষ্ট তো করতে হবেই। বলতে গেলে যারা আমার মতো পাগল তাদের জন্য এক অভয় অরণ্যের কথা বলি- লাওয়াছড়া।।
লাওয়াছড়া বাংলাদেশ এর একমাত্র রেইন ফরেস্ট এবং অন্যতম প্রধান জাতীয় উদ্যান। এটি শ্রীমঙ্গল এবং কমলগঞ্জ উপজেলার দুই সীমান্তের মধ্যবর্তী অঞ্চলে ১২৫০ হেক্টর বনভূমিতে অবস্থিত। ১৯৯৬সালের ৭জুলাই বন্যপ্রাণী আইন (১৯৭৪) এর ধারা মেনে একে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
৪৬০ প্রজাতির বৈচিত্র্যের এর দেখা মিলে এই বন এ। যার মধ্যে রয়েছে ১৬৭ প্রজাতির গাছ, ৪ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ৬ প্রজাতির সরীসৃপ, ২৪৬ প্রজাতির পাখি, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং ১৭ রকমের পোকামাকড়।এছাড়াও রয়েছে পশ্চিমী হুলক উল্লুক যার অল্পসংখ্যকই এখন অবশিষ্ট আছে।
এখানকার তাপমাত্রা ২৬.৮° সে. থেকে ৩৬.১° সে. থাকে (ফেব্রু-জুন) এবং মাঝেমাঝেই বৃষ্টিপাত ঘটে।
কিছু উপজাতির বসতি লক্ষ্য করা যায় এই বন এ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল খাসিয়া, ত্রিপুরি, টিপরা এবং মনিপুরি।
ঢাকা থেকে বাস অথবা ট্রেন এ শ্রীমঙ্গল এবং সেখান থেকে লোকাল বাস কিংবা গাড়ি নিয়ে লাওয়াছড়া। বিকেল ৫টার পর বন এ থাকা নিষেধ। আর এখানে থাকার তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। শুধু রয়েছে বন বিভাগ এর রেস্ট হাউস। তাই শ্রীমঙ্গল এ থাকার ব্যবস্থা করে নেয়াই ভাল।
মানুষ এর চাষাবাদের ইচ্ছা এবুং বনসম্পদ এর প্রতি অবহেলার কারণে দিনে দিনে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে এই অভয় অরণ্য। সকলের এগিয়ে এসে একে রক্ষা করা উচিৎ যাতে আমাদের এত বড় সম্পদ আমরা হারিয়ে না ফেলি এবং হারিয়ে যেতে পাড়ি সবুজের মাঝে। এছাড়া ট্র্যাকিং এর জন্যও ৩০মিনিটের এটি একটি চমৎকার ট্রেইল।
নানা কাজের ফাঁকে সময় করে ঘুরে আসতে পারেন…লাওয়াছড়া।।