চট্টগ্রাম : যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মরদেহ রাউজানের গ্রামের বাড়িতে দাফনের জন্য কবর প্রস্তুত করতে বলেছেন তার স্ত্রী ফরহাত কাদের চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ঢাকার ধানমণ্ডির বাসা থেকে রাউজানের গহিরায় ‘বায়তুল বিলালে’ অবস্থানরত সাকা চৌধুরীর চাচাতো ভাই ফেরদৌস চৌধুরীকে ফোনে সাকাপত্মী এই অনুরোধ করেন। সাকা চৌধুরীর পারিবারিক সূত্র বাংলামেইলকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ধানমণ্ডির বাসায় থাকা ওই সূত্র জানিয়েছে, বুধবার আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে করা সাকা চৌধুরীর রিভিউ আবেদন খারিজ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার সকালে সাত সদস্যের পারিবারিক প্রতিনিধি দল সাকা চৌধুরীর সাথে কারাগারে গিয়ে দেখা করেন। এসময় তারা কারাগার থেকে বের হয়ে গণমাধ্যমের সাথে কোনো কথা বলেননি। তারা সেখান থেকে ধানমণ্ডির বাসায় চলে আসেন। তারা নিকটাত্মীয়দের নিয়ে বাসায় অবস্থান করলেও রায় কিংবা ফাঁসি কার্যকর নিয়ে কোনো কথা বলছেন না। পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যই বিষন্ন মনে চুপচাপ থাকছেন।
এরমধ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপিতে স্বাক্ষর করেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপীল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ। সেই রায়ের কপি রাত সাড়ে ৮টার দিকে পৌঁছে কেন্দ্রীয় কারাগারে। এরপর রাত সাড়ে ১০টার দিকে রিভিউর আদেশ কারা কর্তৃপক্ষ সাকা চৌধুরীকে পড়ে শোনান।
সূত্রটি আরো বলেছে, এর পরপরই ফরহাত কাদের চৌধুরী চট্টগ্রামের রাউজানের গহিরায় অবস্থানকারী সাকা চৌধুরীর চাচাতো ভাই ও চট্টগ্রামের গাড়ি ব্যবসায়ী ফেরদৌস চৌধুরীকে সকালের মধ্যে কবর প্রস্তুত করতে বলেছেন। ফেরদৌসকে করা ফোনে ফরহাত কাদের চৌধুরী বলেছেন, সাকা চৌধুরী তাদের সাথে সাক্ষাৎ করার সময় জানিয়ে দিয়েছেন, রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না তিনি। সে কারণে রায় যেহেতু পড়ে শোনানো হয়েছে, হয়তো তাকে বৃহস্পিতবার মধ্যরাতেই ফাঁসি দিয়ে দিতে পারে। সেজন্য তাদের পারিবারিক কবরস্থানে যেন কবর খনন করে সব প্রস্তুত করে রাখেন। তবে রাতেই খবর খনন করা হচ্ছে কি না সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘উনাদের (সাকা চৌধুরী) পারিবারিক কবরস্থান রয়েছে। কবর প্রস্তুত করার জন্য তেমন কোনো আয়োজন করতে হবে না। লাশ আসার খবর পেলেই সেটি খনন করতে বেশি সময় লাগবে না। আমি সবকিছু দেখে এসেছি।’ তবে রাতেই কবর খনন করা হচ্ছে কি না সেটি জানেন না বলে মন্তব্য করেন এসপি।
অবশ্য ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে অবস্থান করা টিম জানিয়েছে, অতীতে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি কার্যকরের সময় কেন্দ্রীয় কারাগারের বাইরে যে প্রস্তুতি ছিল বৃহস্পতিবার সেই ধরনের কোনো প্রস্তুতি নেই। তবে আইজি প্রিজন, ডিআইজি ঢাকা, ডিআইজি হেডকোয়াটার্স ও ঢাকা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার রাত ১১টার পর রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন বলে সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে সাকা চৌধুরীর মরদেহ রাউজানে প্রবেশ করতে দেবে না বলে আগেই ঘোষণা দিয়েছেন রাউজানের মুক্তিযোদ্ধাসহ প্রগতীশীল লোকজন।