চট্টগ্রাম : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ওরফে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের দায়ে দেয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকরের পর তার লাশ চট্টগ্রামের রাউজানে দাফন করতে দেবে না রাউজানবাসী। রাউজানের গহিরা ইউনিয়নের বাসিন্দা এলাকার ত্রাস কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরীর হাতে মুক্তিযুদ্ধাকালীন সময় ও মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে নির্যাতিত জনতাই এখন তার লাশ রাউজানে প্রবেশ করতে দেবে না বলে জানিয়েছে।
গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ সাকার রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেন। আজ বা কালের মধ্যেই রিভিউ খারিজের পূর্নাঙ্গ রায়ের কপি প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। এরপর পরই সরকারি সিদ্ধান্তে সাকা চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হবে। ইতোমধ্যে সাকা চৌধুরীর পরিবারের সাত সদস্য ঢাকা কারাগারে তার সাথে দেখা করে এসেছেন। আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক ও রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলমও সহসাই ফঁসি কার্যকরের ইঙ্গিত দিয়েছেন। সাকার ফাঁসি কার্যকরের বিষয়টি যতই ঘনিয়ে আসছে রাউজানের ‘কলঙ্ক’ সাকা চৌধুরীর লাশ দাফনের বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসছে।
রাউজানের গহিরা ইউনিয়নের বাসিন্দা সাবেক স্পিকার ও মুসলীম লীগ নেতা ফজলুল কাদের চৌধুরী ওরফে ফকা চৌধুরীর প্রথম সন্তান সাকা চৌধুরী। এনডিপি গঠন করলেও পরবর্তীতে এরশাদের জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে মন্ত্রী হন। পরবর্তীতে বিএনপিতে যোগ দিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সংসদ বিষয়ক উপদেষ্ঠার দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি গত ২০০৮ সালের নির্বাচনে রাঙ্গুনিয়া ও ফটিকছড়ি থেকে নির্বাচন করে রাঙ্গুনিয়ায় হারলেও ফটিকছড়ি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাতি হন। এরপর ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়ে কারান্তরীণ রয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী এ সদস্য। নানা অশোভন আচরণের কারণে যিনি নিজ দলেও সমালোচিত। রাউজানের পাশাপাশি সাকা চৌধুরীর নগরীর গুডস হিলে মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এনে নির্যাতন চালানো হতো বলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে।
সাকার লাশ রাউজানে প্রতিহত করার গুনঞ্জন সম্পর্কে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবে পৌর মেয়র শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বেবী বাংলামেইলকে বলেন, ‘কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী জীবিত থাকতেও এখানকার মুক্তিকামী মানুষকে নির্যাতন করার পাশাপাশি আমাদের কলঙ্কিত করেছে। এখন সর্বোচ্চ আদালতের বিচারে যখন তার মৃতুদণ্ড কার্যকর হচ্ছে তাতে করে আমরা কিছুটা হলেও কলঙ্কমুক্ত হতে যাচ্ছি। যদি এই যুদ্ধাপরাধীর লাশ রাউজানের মাটিতে নির্যাতিত জনতাই প্রবেশ করতে দেবেনা বলে এই ধরণের আলাপ-আলোচনা রাউজানের মানুষের মধ্যে শুনা যাচ্ছে।’ যদিও এটি উপজেলা আওয়ামী লীগের নয় বলে মন্তব্য করেন এ আওয়ামী লীগ নেতা।
একই সময়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাকা চৌধুরীর হাতে ৮০ দশকে নির্যাতিত রাউজানের বাসিন্দা দেবাশীষ পালিত বাংলামেইলকে বলেন, ‘রাউজান তথা চট্টগ্রামের এক সময়ের আতঙ্ক সাকা চৌধুরীর ফাঁসির রায়ের মধ্য দিয়ে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সফল সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে। তবে তার হাতে যুদ্ধের সময় এবং যুদ্ধের পরবর্তী সময়েও এখাকার প্রগতিশীল লোকজন নানাভাবে নির্যাতিত হয়েছে। সেকারণে যুদ্ধাপরাধের দায়ে তার মৃত্যুদণ্ড হলেও তার হাতে নির্যাতিত জনতাই রাগে ক্ষোভে ঘৃণায় মৃত সাকা চৌধুরীকেও প্রতিহত করতে পারে। জনতা প্রতিরোধ গড়ে তোললে তখন তো কেউ কিছুই করতে পারবে না।’ তবে এই ধরণের দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নেই বলে জানান দেবাশীষ পালিতও।
রাউজান উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও পৌর সভার প্যানেল মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ বাংলামেইলকে বলেন, ‘দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর আমরা রাউজানবাসী সাকা চৌধুরীর ফাঁসির রায় কার্যকরের মাধ্যমে কলঙ্কমুক্ত হতে যাচ্ছি। কুখ্যাত এই যুদ্ধাপরাধীর লাশ রাউজানে দাফন করে রাউজানের মাটিকে আর নষ্ট করতে দেবেনা এখানকার ছাত্র সমাজ। জনগণই সাকার লাশ রাউজানে প্রবেশ করতে দেবেনা।’
রাউজান মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাংগঠনিক কমান্ডার নুরুল আজিম বাংলামেইলকে বলেন, ‘১৯৭১ সালে সাকা চৌধুরী তার দোসরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জয়ী হয়েছি। তবে তাকে আমরা বারবার মারতে চেয়েও সেটি পারিনি। তবে স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর হলেও জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা জীবিত থাকতে এই্ কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীর গলায় ফাঁসির রশি দেখতে পাচ্ছি। এটাই আমাদের অনেক বড় সান্তনা। এই যুদ্ধাপরাধীর দাফন যদি রাউজানে দেয়া হয় তাহলে তার হাতে নির্যাতিত শহীদদের আত্মা কষ্ট পাবে। তাই আমরা মুক্তিযোদ্ধারা সাকা চৌধুরীর লাশ প্রতিহত করব।’ তার এই সিদ্ধান্তের সাথে একাত্মতা জানিয়েছেন রাউজান উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আবু জাফর চৌধুরীও।
তবে যুদ্ধাপরাধীর বিচার নিয়ে নান সময়ে বিভিন্ন মানববন্ধন ও সভা সমাবেশে সরব দেখা গেলেও রাউজান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক এহসানুল হক চৌধুরী বাবুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এখন জুমার নামাজ পড়তে যাচ্ছি। এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারব না। সাকা চৌধুরীর ফাঁসি হলে তখন আমি সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রতিক্রিয়া জানাব।’
সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ ২৩টি অভিযোগ দাখিল করেছিলেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। এর মধ্যে নয়টি অভিযোগ প্রমাণিত হয় ট্রাইব্যুনালে। প্রমাণিত অভিযোগগুলোর মধ্যে ৩, ৫, ৬ ও ৮ নম্বর অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত। বাকি পাঁচটি অভিযোগের ২, ৪ ও ৭ নম্বর অভিযোগে ২০ বছর করে ৬০ বছর এবং দুটি অভিযোগে পাঁচ বছর করে ১০ বছরসহ সর্বমোট ৭০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সাকার বিরুদ্ধে অন্য ১৪টি অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে এসব অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়া হয়। এর মধ্যে ছয়টি অভিযোগের বিষয়ে প্রসিকিউশন কোনো সাক্ষ্য হাজির করতে পারেনি। ট্রাইব্যুনালের দেওয়া দণ্ডের মধ্যে আপিল বিভাগ ৭ নম্বর অভিযোগে ২০ বছরের কারাদণ্ড বাতিল করে খালাস দেন সাকা চৌধুরীকে। এতে তার কারাদণ্ডের মেয়াদ কমে দাঁড়িয়েছে ৫০ বছর।
সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রমাণিত অভিযোগগুলো হচ্ছে :
২ নম্বর অভিযোগ (প্রমাণিত) : প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে আনা ২ নম্বর অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর নেতৃত্বে পাকিস্তানি সৈন্যরা চট্টগ্রামের রাউজানের গহিরা গ্রামে হিন্দু অধ্যুষিত পাড়ায় অভিযান চালিয়ে ওই এলাকার শতাধিক ব্যক্তিকে হিন্দু ডাক্তার মাখন লাল শর্মার বাড়িতে জড়ো করেন। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর উপস্থিতিতে পাকিস্তানি সৈন্যরা সেখানে তাঁদের ব্রাশফায়ার করে হত্যা করেন। এ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ২০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
৩ নম্বর অভিযোগ (প্রমাণিত) : প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে আনা ৩ নম্বর অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর নির্দেশে পাকিস্তানি সৈন্যরা রাউজানের গহিরা শ্রী কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মালিক নূতন চন্দ্র সিংহকে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এ সময় নিজে নূতন চন্দ্র সিংহকে গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সাকাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
৪ নম্বর অভিযোগ (প্রমাণিত) : প্রসিকিউশনের ৪ নম্বর অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ৩ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী পাকিস্তানি সৈন্যদের সঙ্গে নিয়ে হিন্দু অধ্যুষিত জগৎমল্লপাড়ায় অভিযান চালান। এ সময় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর দুই সহযোগীর ডাকে সেখানকার হিন্দু নর-নারী কিরণ বিকাশ চৌধুরীর বাড়ির আঙিনায় জড়ো হয়। সেখানে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর উপস্থিতিতে তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়। এতে ৩২ জন নারী-পুরুষ মারা যান। এ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ২০ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়।
৫ নম্বর অভিযোগ (প্রমাণিত) : প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে আনা পঞ্চম অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল দুপুর ১টার দিকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী তার অনুসারীদের নিয়ে চট্টগ্রাম জেলার রাউজানের সুলতানপুর গ্রামে হামলা চালান। সেনাসদস্যরা বণিকপাড়ায় প্রবেশ করে ধর্মীয় বিদ্বেষপ্রসূত হয়ে অভিযান চালিয়ে নেপাল চন্দ্র ধর, মনীন্দ্র লাল ধর, উপেন্দ্র লাল ধর ও অনিল বরণ ধরকে গুলি করে। এতে প্রথম তিনজন শহীদ ও শেষের জন আহত হন। হত্যাকাণ্ড শেষে বাড়িঘরে আগুন দিয়ে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও তার বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরী তাদের অনুসারী ও পাকিস্তানি সৈন্যদের নিয়ে সুলতানপুর গ্রাম ত্যাগ করেন। এ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
৬ নম্বর অভিযোগ (প্রমাণিত) : এ অভিযোগে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধকালীন ১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল বিকেল ৪টায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর উপস্থিতিতে রাউজানের ঊনসত্তরপাড়ায় ক্ষীতিশ মহাজনের বাড়ির পেছনে পুকুরপাড়ে শান্তি মিটিংয়ের নামে হিন্দু নর-নারীদের একত্রিত করে পাকিস্তানি সৈন্যরা ব্রাশফায়ারে হত্যা করে। এ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
৮ নম্বর অভিযোগ (প্রমাণিত) : এ অভিযোগে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধকালীন ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মোজাফফর আহম্মদ ও তার ছেলে শেখ আলমগীরসহ পরিবারের কয়েকজন সদস্য প্রাইভেটকারযোগে চট্টগ্রামের রাউজান থেকে চট্টগ্রামে শহরে আসছিলেন। পথে হাটহাজারী থানার খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি তিন রাস্তার মোড়ে পৌঁছামাত্র সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সঙ্গে থাকা পাকিস্তানি সৈন্যরা শেখ মোজাফফর আহম্মেদ ও তার ছেলে শেখ আলমগীরকে গাড়ি থেকে নামিয়ে স্থানীয় পাকিস্তানি সেনাক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাদের আর উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
১৭ নম্বর অভিযোগ (প্রমাণিত) : ১৯৭১ সালের ৫ জুলাই সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম জেলার কোতোয়ালি থানার হাজারী লেনের জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পোড়োবাড়ী থেকে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক নিজাম উদ্দিন আহম্মেদ, সিরাজ ও ওয়াহেদ ওরফে ঝুনু পাগলাকে অপহরণ করে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর গুডসহিলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দেড় ঘণ্টা তাদের শারীরিক নির্যাতন করা হয়। পরে ওই দিন রাত ১১/১২টার দিকে নিজাম উদ্দিন ও সিরাজকে চট্টগ্রাম কারাগারে নিয়ে গিয়ে কারারুদ্ধ করা হয়। সেখানে তাঁরা দেশ স্বাধীন হওয়ার আগ পর্যন্ত বন্দি ছিলেন। এ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
১৮ নম্বর অভিযোগ (প্রমাণিত) : ১৯৭১ সালের জুলাই মাসে তৃতীয় সপ্তাহে একদিন ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরীর অনুসারীরা চট্টগ্রাম জেলার চান্দগাঁও থানার মোহারা গ্রামে আবদুল মোতালেব চৌধুরীর বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে তারা সালেহ উদ্দিনকে অপহরণ করেন। এর পর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গাড়িতে নিয়ে তাকে গুডসহিল নির্যাতন সেলে নেওয়া হয়। সেখানে বাড়ির বারান্দায় ইজিচেয়ারে বসে থাকা সাকা চৌধুরীর বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরী এবং ছোট ভাই গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন। ওই সময় সালেহ উদ্দিনকে উদ্দেশ করে ফজলুল কাদের চৌধুরী জানতে চান, তিনি সালেহ উদ্দিন কি না? এ সময় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এগিয়ে গিয়ে সালেহ উদ্দিনের বাঁ গালে সজোরে একটি চড় মারেন। এ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়।
গতাকালের বিভিউ খারিজের মধ্য দিয়ে শেষ হলো এই শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর মামলার আইনি লড়াই। তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রায় কার্যকরের বিষয়টিও চূড়ান্ত ধাপে পৌঁছাল। সর্বশেষ ধাপে এখন কেবলমাত্র রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন তারা। প্রাণভিক্ষা না চাইলে বা চাওয়ার পর আবেদন নাকচ হলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে আর কোনো বাধা থাকবে না।