দিনাজপুর: জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও এবং ইতালির নাগরিক সিজার তাভেল্লা খুনের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার আরেক ইতালীকে গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা। আহতের নাম ডা. পিয়েরো (৫০)।
বুধবার সকাল ৮টার দিকে দিনাজপুরের শহরে মির্জাপুর বিআরটিসি বাস ডিপো এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতকে গুরুতর অবস্থায় দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ (দিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিপুল সংখ্যক র্যাব ও পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে।
জানা গেছে, তিনি দিনাজপুর শহরস্ত শুইহারি ক্যাথলিক মিশন চার্চের ফাদার।
স্থানীয়রা জানান, পাদ্রী পিয়েরো বাস ডিপোর পাশে ‘দি লেক্রসি মিশন’ বাংলাদেশ নামে একটি ক্যাথলিক মিশনে থাকতেন। পেশায় চিকিৎসক পিয়েরো সকালে সুইহারি ক্যাথলিক চার্চ থেকে বাইসাইকেলে করে শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। বিআরটিসি বাস ডিপোর সামনে পৌঁছালে তিন মোটরসাইকেল আরোহী তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে দ্রুত পালিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে পিয়েরো রাস্তায় পড়ে যান। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
ইতিমধ্যে হাসপাতালে পরিদর্শনে জেলা প্রশাসক মো. খায়রুল আলম, পুলিশ সুপার রুহুল আমীন, প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ বেশ কিছু বিদেশি নাগরিক।
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের কর্তব্যরত সার্জিক্যাল বিভাগের প্রধান চিকিসক ডা. পার্থ সারথি রায় জানান, পিয়ারোর পিছন থেকে একটি গুলি গলার সামান্য অংশ ভেদ করে বেড়িয়ে যায়।
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের চিকিৎসক জিল্লুর রহমান জানান, বর্তমানে তিনি আশঙ্কামুক্ত। তবে তাকে ২৪ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। রংপুর মেডিকেলে স্থানান্তর করা হবে কি-না তা নিয়ে বৈঠক চলছে।
কোলোয়ালি থানার ওসি একেএম খালেকুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দুর্বৃত্তদের ধরতে প্রশাসন অভিযান শুরু করেছে।
প্রসঙ্গত, গত ৩ অক্টোবর রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার আলুটারী এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে খুন হন জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও। এ ঘটনায় ওই দিন বিকেলে পুলিশের পরিচয়ে সাদাপোশাকে বিএনপি নেতা রাশেদ-উন-নবী খান বিপ্লব ও কুনিও’র ব্যবসায়িক অংশীদার হুমায়ুন কবীর হীরাসহ সাত জনকে আটক করে পুলিশ।
অন্যদিকে, গত ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশান-২ এর ৯০ নম্বর সড়কে জগিং করার সময় দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন ইতালীয় নাগরিক ও নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা আইসিসিওবিডির কর্মকর্তা সিজার তাভেল্লা।
এ ঘটনার পরপরই প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, আটক তিন জন সন্দেহভাজন স্বীকারোক্তিতে ‘বড় ভাই’ এর নির্দেশনা ও পরিকল্পনার কথা বলেছে। এই বড় ভাই নিয়ে নানা জল্পনা কল্পনার পর স্বয়ং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান যে তিনি হলেন বিএনপি নেতা সাবেক কমিশনার এমএ কাইয়ুম। তিনি বেশ কিছু দিন থেকে মালয়েশিয়াতে অবস্থান করছেন। সেখান থেকেই সব নির্দেশনা দিয়ে বিদেশি খুন করিয়েছেন বলে মন্ত্রীর দাবি।