বর্তমান সরকারের স্বৈরাচারী আচরণের কারণে জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, মওলানা ভাসানী ছিলেন আমাদের জাতীয় স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা এবং দেশে জাতীয় সংকটে মুক্তির দিশারী। সাম্রাজ্যবাদ, আধিপত্যবাদ, উপনিবেশবাদ বিরোধী দীর্ঘ সংগ্রামে তিনি জীবদ্দশায় আপসহীন নেতৃত্ব দিয়েছেন। বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে উপমহাদেশের নিপীড়িত-নির্যাতিত কৃষক-শ্রমিক মেহনতি মজলুম জনগণের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামে শোষকের বিরুদ্ধে মওলানা ভাসানী নির্ভীক ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিয়েছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, পাকিস্তানি গণবিরোধী দু:শাসনের বিরুদ্ধে তিনি সম্মুখভাগে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং ৫০ দশকেই উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার, স্বাধিকার এবং এক পর্যায়ে স্বাধীনতা ছাড়া কোন বিকল্প নেই। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদে থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনা তথা গণতন্ত্র, মৌলিক-মানবাধিকারসহ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা প্রশ্নেও কোন আপস করেননি। খালেদা জিয়া বলেন, আমাদের দেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও মানুষের মৌলিক-মানবাধিকার যখন হুমকির সম্মুখীণ হয় তখন মওলানা ভাসানী আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস হন। তার শেখানো পথ অনুসরণ করে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও মানবতার শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে আমাদের চিরদিন সাহস জোগাবে। তিনি বলেন, আজ দেশে এক নব্য স্বৈরাচার ক্ষমতায় বসে আছে। দেশে আজ গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার, মৌলিক অধিকার ধুলোয় লুণ্ঠিত। মানুষের ভোটের অধিকার হরণকারী বর্তমান সরকার গায়ের জোরে তাদের অপশাসন বজায় রেখেছে। জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া দেশ পরিচালনাকারী এ সরকারের শাসনামলে আজ শুধুই গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকারগুলোই বিপন্ন হয়ে পড়েনি-জাতীয় নিরাপত্তাও হুমকির সম্মুখীণ হয়ে পড়েছে। আগ্রাসী শক্তির আগ্রাসী হুমকির মুখে রয়েছে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। জাতির এই সংকটের মুহূর্তে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর প্রদর্শিত পথই দেশের মানুষকে শক্তি ও সাহস জোগাবে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিতে এবং অপশাসন, অপরাজনীতিকে জনগণের ইচ্ছাধীনে পরাস্ত করতে।