ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ অভিযোগ করেছেন, ‘সরকার মিডিয়ার মাধ্যমে প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে বিএনপিকে জঙ্গি বানানোর চেষ্টা করছে । বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করার ষড়যন্ত্র চলছে। দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সরকারের এসব নীতি ভবিষ্যতে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে।’
শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন মওদুদ। ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়।
মওদুদ আরো বলেন, ‘গণতান্ত্রিক শক্তি নিশ্চিহ্ন করার চিন্তা করলে জঙ্গিরা মাথাছাড়া দিয়ে উঠবে। বর্তমানে দেশে-বিদেশি হত্যাকাণ্ডসহ সব নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির জন্য সরকার দায়ী। আমরা সরকারকে দায়ী করতে চাই।’
সাম্প্রতিক সময়ে ব্লগার হত্যাকাণ্ড, পুলিশ হত্যাকাণ্ড, ধর্মযাজকের ওপর হামলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘এতে আন্তর্জাতিক সমর্থন পাওয়ার জন্য সরকারের দুরভিসন্ধি রয়েছে। এই পথ পরিহারের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।’
মওদুদ বলেন, ‘জিয়াউর রহমান যে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন। সে গণতন্ত্র আমরা হারিয়ে ফেলেছি। জিয়াউর রহমানের আদর্শে উদ্ভুদ্ধ হয়ে সেই গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।’
৭ নভেম্বরের আলোচনা সভা ১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রসঙ্গে অনুষ্ঠানে দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য হান্নান শাহ বলেন, ‘৭ নভেম্বরের আলোচনা সভা ১৪ তারিখে করলে আমার খারাপ লাগে। আমি বিব্রত। কোনো কারণ পেলে আমরা অযুহাত দিয়ে বসে থাকি। ডান হাত বাম হাত থাকতে আমরা অযুহাত দেখাই।’
১৯৭৫ সালে ৭ নভেম্বর নিয়ে জাসদ একটি মিথ্যার সঙ্গে আরেকটি মিথ্যাকে মিশ্রণ করছে অভিযোগ করে তিনি প্রশ্ন রাখেন, জাসদ আর কত মিথ্যাচার করবে?
বিএনপির এই অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা পরিষদের কোনো নেতাকে দেখা যায়নি। স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন মাত্র তিনজন আর সহ-সভাপতি ছিলেন দুজন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দলের মুখপাত্রের দায়িত্বে থাকা আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন এবং সহ-দপ্তর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম।
অনুষ্ঠানে দর্শক সারির সামনে ছিলেন- সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, মহিলা দলের সভাপতি নুরে আরা সাফা, সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, যুব দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ক ম মোজ্জাম্মেল হক, ওলামা দলের সভাপতি এম এ মালেক, সাবেক এমপি হেলেন জেরিন খান, শাম্মী আক্তার, ছাত্র দলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শহীদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।
সরকারের কঠোর সমালোচনা করে হান্নান শাহ বলেন, ‘বিনা বিচারে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। ক্রসফায়ারের নামে মানুষ খুন করা হচ্ছে। সরকারের এসব কর্মকাণ্ড সবাই জানে।’
কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল নোমানের সভাপতিত্বে এতে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. মুস্তাহিদুর রহমান, কল্যাণ পার্টির সভাপতি সৈয়দ মুহাম্মদ বীর প্রতিক, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দিন খোকন, যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।