বিমান ভূপাতিত করার পরের ফোনালাপ

Slider গ্রাম বাংলা টপ নিউজ সারাবিশ্ব

55569_Malaysia
গ্রাম বাংলা ডেস্ক: ইউক্রেনে বিধ্বস্ত মালয়েশীয় এমএইচ১৭ ফ্লাইটের ধ্বংসাবশেষ
ইউক্রেন সীমান্তে মালয়েশিয়ান এমএইচ-১৭ বিমান ভূপাতিত হয়ে ২৯৮ জন নিহতের ঘটনার পরপরই রাশিয়াকে দায়ী করেছিল ইউক্রেন। ঘটনার পর ইউক্রেইনের নিরাপত্তা বাহিনী ইউটিউবে একটি অডিও প্রকাশ করে, যেটি রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাথে কয়েকজন রুশ সেনা কর্মকর্তার টেলি কথোপকথন বলে দাবি করা হয়।
রুশ ভাষার ওই কথোপকথনের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ছোড়া মিসাইলেই মালয়েশীয় বিমানটি বিধ্বস্ত হয় বলে ওই কথোপকথন থেকে ধারণা হয়। তবে এ ফোনালাপের সত্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি বলেও বিবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
রাশিয়ান ভাষায় কথোপকথনের ওই রেকর্ডিংগুলো ইউক্রেনের রাশিয়াপন্থি বিদ্রোহী ও রাশিয়ান ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাদের বলে দাবি করেছে দেশটি। তবে রেকর্ডিংয়ের কণ্ঠগুলো ঠিক কাদের তা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।
অডিও রেকর্ডিংগুলোতে দেখা গেছে, বিমানটি বিধ্বস্ত করার পর ফোনে রাশিয়ান সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উৎফুল্লের সঙ্গে তা জানাচ্ছে বিদ্রোহীরা।

প্রথম ফোনালাপ
এখানে দুটি পুরুষ কণ্ঠ শোনা যায়, যার মধ্যে প্রথমটি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ইগর বেজলার এবং দ্বিতীয়টি রুশ সেনা গোয়েন্দা কর্মকর্তা কর্নেল ভ্যাসিলি গেরানিনের বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবিসির প্রতিবেদনে।
বেজলার : খনির লোকেরা (বিচ্ছিন্নতাবাদীদের একটি গ্রুপের ছদ্মনাম) এই মাত্র একটা বিমান নামিয়েছে। ওটা ইয়ানাকিয়েভোর পেছনে বিধ্বস্ত হয়েছে।
গেরানিন : পাইলট? পাইলটরা কোথায়?
বেজলার : খুঁজে দেখা হচ্ছে। বিমানের ছবিও তোলা হচ্ছে। ওখান খালি ধোঁয়া।
গেরানিন : কতোক্ষণ আগের ঘটনা?
বেজলার : প্রায় ৩০ মিনিট আগে।

দ্বিতীয় ফোনালাপ
এ পর্যায়ে দুটি পুরুষকণ্ঠ শোনা যায়, যার প্রথমজনকে গ্রিক আর দ্বিতীয় ব্যক্তিকে মেজর নামে ডাকা হচ্ছিল ।
গ্রিক : বলুন, মেজর।
মেজর : চেরনুখিনোর ছেলেরা বিমানটা নামাতে পেরেছে।
গ্রিক : কারা নামিয়েছে?
মেজর : চেরনুখিনো রোডব্লক থেকে করেছে। চেরনুখিনোতে আছে কসাকরা।
গ্রিক : হ্যাঁ, মেজর।
মেজর : পেরত্রোপাভলোভস্কায়া কয়লা খনির কাছে আকাশেই বিমানটি অর্ধেক ভেঙে পড়েছে। প্রথম লাশটা পেয়েছি। লোকটা বেসামরিক।
গ্রিক : ওখানে তাহলে কী পাওয়া গেল?
মেজর : আসলে ওটা শতভাগ বেসামরিক বিমান
গ্রিক : অনেক লোক ছিল?
মেজর : ধ্বংসাবশেষ খোলা জায়গা পড়েছে।
গ্রিক : কি ধরনের বিমান ওটা?
মেজর : আমি এখনো জানি না। আমি মূল ধ্বংসাবশেষের কাছে ছিলাম না। হতাহতরা কোথায় পড়েছে শুধু সেটাই প্রথমে দেখেছি। ওখানে বিমানের ভেতরের অংশ, চেয়ার আর লাশ ছড়িয়ে ছটিয়ে আছে।
গ্রিক : আচ্ছা। কোনো অস্ত্রশস্ত্র?
মেজর : কিচ্ছু না। সব সিভিলিয়ানদের জিনিসপত্র। কিছু ওষুধপত্র, তোয়ালে, টয়লেট পেপার- এইসব।
গ্রিক : কোনো কাগজপত্র?
মেজর : হাহ! থমসন ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া একজন ইন্দোনেশীয় ছাত্রের কাগজ পেয়েছি।

তৃতীয় ফোনালাপ
এখানে এক যোদ্ধার সাথে কথা বলেছেন নিকোলাই কোজিতসিন নামের এক কসাক নেতা।
যোদ্ধা : বিমানটা স্নেঝনোয়-তোরেজ এলাকায় বিধ্বস্ত হয়েছে। বেসামরিক বিমান। পড়েছে গ্রাবোভোর কাছে। অনেক নারী আর শিশুর লাশ। কসাকরা ওখানে আছে, ওরাই সব দেখছে।
টিভিতে বলছে, ওটা ইউক্রেইনের এএন-২৬ পরিবহন বিমান। কিন্তু ওরা বলছে, বিমানের গায়ে মালয়েশিয়া এয়ারলাইসন লেখা ছিল। ইউক্রেইনের সীমানায় ওটা কি করতে এসেছিল?
কোজিতসিন : তার মানে হলো, ওটা গুপ্তচর পরিবহন করছিল। এভাবে ওদের এদিকে ওড়া উচিৎ হয়নি। এখানে একটা যুদ্ধ চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *