তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে ইমরুল কায়েসের ৭৬ রানের সুবাদে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৪১ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হয় বাংলাদেশ সময় দুপুর ১ টায়।
এদিন দলীয় ৩২ রানে বাংলাদেশ দলের প্রথম উইকেটের পতন ঘটে। অষ্টম ওভারের প্রথম বলে পানিয়াঙ্গারার গুড লেন্থের বলে সামনের পায়ে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন তামিম। বল কিছুটা আউট সুইং করে ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটরক্ষকের হাতে চলে যায়। ফেরার আগে ২৯ বলে ১৯ করেন এই বাঁহাতি ওপেনার। গত ম্যাচে করেছিলেন ৪০ করেছিলেন তিনি।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে টাইগাররা। তামিমের পর ১৬ বলে ৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন ওয়ানডাউনে নামা লিটন দাস। আউট হওয়ার দুই ওভার আগে অফসাইডে সরে হাঁটু গেড়ে নান্দনিক ছয় মারেন লিটন। এরপর থেকে তার ভেতর লেগে খেলার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। কিন্তু ১১তম ওভারের শেষ বলে নিয়ন্ত্রণহীন ব্যাট চালানোর খেসারত দিতে হয় প্রথম ম্যাচে শূন্য রানে ফেরা লিটনকে। পানিয়াঙ্গারার অফসাইডের শট বলে টেনে পুল করতে চেয়েছিলেন তিনি।
যে বলে তিনি পুল করতে যান, ওই ধরনের বলে উপর কাট করলে বাউন্ডারি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। লেগ সাইডে তো নয়ই, অফ সাইডে খেলতে গেলেও বিপদ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। লিটন লেগে খেলতে যেয়েই বিপদ ডাকেন। বল ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষক চাকাভার হাতে। আর রিয়াদ (৪) থার্ডম্যানে ঠেলতে যেয়ে কানায় লাগান।
১৮ ওভারের ভেতর তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। ২৮তম ওভারের তৃতীয় বলে ক্রেমারকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে কভার দিয়ে উড়িয়ে মারতে যান মুশফিক। কিন্তু বল ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় থার্ডম্যানে। ওখানে ছিলেন জংউই। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ লুফে নেন তিনি। মুশফিক করেন ২১ রান।
এদিন দারুণ খেলতে থাকা ইমরুল কায়েস ৭৬ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরেন। ৮৮টি বল মোকাবেলা করার পর উইলিয়ামসের এক ডেলিভারি উঠে এসে ফুলটস বানিয়ে খেলতে যান। বাঁহাতি স্পিনার বুঝতে পেরে বল কিছুটা অফসাইডে টেনে দেন। তাতেই ইমরুল টাইমিং হারান। বল যায় লংঅফে দাঁড়ানো ক্রেমারের হাতে। ফিরতে হয় ইমরুলকে।
ইমরুলের পর সাজঘরে ফেরেন সাব্বির রহমান। ৪২তম ওভারের প্রথম ডেলিভারি জংউই অফস্ট্যাম্পের অনেকটা বাইরে দিয়েছিলেন। সাব্বির বলের লাইনে পা না নিয়েই ব্যাট চালিয়ে দেন। বল কানায় লেগে চলে যায় উইকেটের পেছনে। তা লুফে নিতে এতটুকু ভুল করেননি চাকাভা। সাব্বির করেন ৩৩ রান। সাব্বিরের পর মাশরাফি ১৩, নাসির হোসেন ৪১, আরাফাত সানি ৩ রানে সাজঘরে ফেরেন।
এই সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৪৫ রানে জিতে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। দেশের মাটিতে সর্বশেষ চার ওয়ানডে সিরিজে অপরাজিত রয়েছে টাইগাররা।
বিশ্বকাপের আগে এই জিম্বাবুয়েকে হারিয়েই শুরু টানা সিরিজ জয়ের যাত্রা। এরপর পাকিস্তান হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা মাশরাফি বাহিনীর কাছে হার স্বীকার করে দেশে ফিরেছে।
অন্যদিকে জিম্বাবুয়ে দল বেশ কয়েক মাস ধরে ছন্দে নেই। সম্প্রতি তারা আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশ আফগানিস্তানের কাছে সিরিজ হেরেছে।
আজ উভয় দলেই একটি করে পরিবর্তন এসেছে। সাকিবের বদলে দলে ঢুকেছেন ইমরুল কায়েস। অন্যদিকে ইনজুরিতে পড়া মুতুম্বামির বদলে জিম্বাবুয়ে দলে ঢুকেছে চাকাভা।
বাংলাদেশ স্কোয়াড: তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, মাশরাফি মুর্তজা (অধিনায়ক), আরাফাত সানি, মুস্তাফিজুর রহমান।