সক্ষমতা-সক্রিয়তা নেই জঙ্গি দমনে

Slider জাতীয়

 

01_288176

 

 

 

 

 

নানা ঘটনাপ্রবাহে দেশে জঙ্গিদের গোপন মিশন থাকার প্রমাণ মিললেও তা প্রতিরোধে সরকারের কার্যকর কোনো কর্মকাণ্ড নেই বললেই চলে। একদিকে জঙ্গি গ্রেপ্তার হচ্ছে, অন্যদিকে তারা জামিনে বেরিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু জঙ্গিদের জামিন বা মুক্তি ঠেকাতে কোনো তৎপরতা নেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর। নজরদারির অভাবে সহজেই জঙ্গিরা পালিয়ে যাচ্ছে। ছয়টি জঙ্গি সংগঠন নিষিদ্ধ করা হলেও বাকিগুলো নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়া থমকে আছে। জামায়াত-শিবিরের লোকজনও জঙ্গিদের সঙ্গে আঁতাত করছে বলে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয়েছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত ‘জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ এবং প্রতিকার জাতীয় কমিটি’ প্রায় অকেজো। ৬৪ জেলার কমিটিগুলোরও তদারকি নেই। কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কর্মকাণ্ড চালু করতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে অনুমোদন পাওয়ার পরও ‘রহস্যজনক’ কারণে তা শুরু হয়নি। এখনো দেশে ৪৭টি জঙ্গি সংগঠন সক্রিয় আছে বলে জানা গেছে।

এদিকে জঙ্গি দমনে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ আছে খোদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। অনেক জঙ্গি মামলা রয়েছে, যা সাক্ষীর অভাবে দীর্ঘসূত্রতায় পড়েছে। এ ক্ষেত্রে সাক্ষ্য না দেওয়ার বেলায় পুলিশও এগিয়ে আছে, যার কারণে গত পাঁচ বছরে সারা দেশে ৩৪২ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

কয়েকটি উপকমিটি ও টাস্কফোর্স গঠন করেও দেশে জঙ্গিবাদী-উগ্রবাদী গোষ্ঠীর বিস্তার বন্ধ হয়নি। অর্থের লোভে পড়ে নয়, আদর্শগত প্ররোচনায় মাদ্রাসা, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তরুণরা যোগ দিচ্ছে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হিসাবে, গত পাঁচ বছরে বিভিন্ন নিষিদ্ধ সংগঠনের যত সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের অন্তত ৭০ শতাংশ তরুণ ও শিক্ষার্থী। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, পরিবার ও ব্যক্তি পর্যায়ের সচেতনতার অভাবে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে উগ্রপন্থা ছড়িয়ে দিয়ে সফল হয়েছে জঙ্গি সংগঠনগুলো।

দায়িত্বশীলদের এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জঙ্গিবাদবিরোধী সচেতনতা তৈরিতে কাগজে-কলমে সরকারের ব্যাপক কার্যক্রম থাকলেও বাস্তবে তা সুফল বয়ে আনছে না। জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ এবং প্রতিকারের জন্য মসজিদের ইমামদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সচেতনতার কাজে উদ্বুদ্ধ করার কথা। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রশিক্ষণ ও ভাতা গ্রহণ করলেও বেশির ভাগ ইমাম জঙ্গিবাদ বিষয়ে সচেতনতামূলক বয়ান (বক্তব্য) করছেন না। কিছু এলাকায় ইমামদের বিরুদ্ধে উগ্রবাদী বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে। ইমামদের এই প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। কিছু সচেতনতামূলক বইও বিতরণ করছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে প্রশিক্ষিত ইমামরা কী বয়ান দিচ্ছেন, তা দেখছে না কেউ।

সচেতনতামূলক কার্যক্রম বন্ধ : সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সারা দেশে প্রায় দুই লাখ ৬০ হাজার মসজিদ থাকলেও প্রশিক্ষণ দেওয়া গেছে প্রায় এক লাখ ৭০ হাজার ইমামকে। বয়ানসহ জঙ্গিবাদ বিষয়ে সচেতনতা পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব স্থানীয় থানা পুলিশ ও উপজেলা-জেলা প্রশাসনের। জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে গঠিত জাতীয় কমিটি স্থানীয় পর্যায়েও কমিটি গঠন করে দিয়েছে। তবে কমিটি গঠনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ তাদের কার্যক্রম। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা বলছে, ইমামদের সবাই নিরপেক্ষ ধর্মীয় নেতা বলেই জানে। তাই ইমামদের ভুল উসকানিমূলক বক্তব্যে জঙ্গিবাদী মনোভাব বাড়ছে। অনেকেই বিপথগামী হচ্ছে; কথিত জিহাদের নামে যোগ দিচ্ছে নিষিদ্ধ সংগঠনে। দেশে জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে হলে সচেতন ধর্মীয় নেতা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে মসজিদগুলোতে পুলিশ-প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো জরুরি বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।

জানতে চাইলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ও জাতীয় কমিটির সদস্য সামীম মোহাম্মদ আফজাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা ইমামদের ট্রেনিং দিয়ে দিচ্ছি। তবে দেশের দুই লাখ ৬০ হাজার মসজিদে কারা কী বয়ান করছেন, তা দেখা সম্ভব হয় না। আলেমদের শিক্ষায় অনেক ঘাটতি আছে। অনেকেই কোরআন-হাদিসের আলোকে কথা বলেন না। এসব কথিত আলেম দুই যুগ ধরে দেশের জনগণকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। মাদ্রাসা শিক্ষার নামে কোমলমতি শিশুদের শিবিরের সদস্য আর জঙ্গি বানানোর চেষ্টা চলছিল। আমরা এগুলো শনাক্ত করেছি।’ সামীম মোহাম্মদ আফজাল আরো বলেন, ‘আমরা জনগণকে সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করতে পারি। তবে এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য প্রশাসন।’

পুলিশ ও র‌্যাবের এক হিসাবে দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে হিযবুত তাহ্‌রীর, জেএমবি, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, হুজিসহ অন্য সংগঠনগুলোর আটককৃতদের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশই ছিল ছাত্র। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘মগজ ধোলাই করে সফল হচ্ছে জঙ্গিরা। এখন মেধাবী ছাত্রদের টার্গেট করছে তারা। বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ছাত্ররা ধর্মীয় আবেগে সহজেই জঙ্গিদের টোপ গিলছে। তারা মেধাবী ও উচ্চশিক্ষিত হলেও ইসলামের ইতিহাস ও মর্ম সম্পর্কে সচেতন নয়। তারা নিজেদের এই কাজে নিয়োজিত করে সফল মনে করছে। এ ধরনের তৎপরতা নিয়ন্ত্রণের জন্য সচেতনতা বাড়াতে হবে এবং বিশেষায়িত পুলিশ (কাউন্টার টেররিজম) গঠন করতে হবে।’

জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ ও প্রতিকার কমিটির স্থানীয় পর্যায়ের কমিটিগুলো চলছে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে। স্থানীয় পর্যায়ে সচেতনতার কাজ পর্যবেক্ষণ করে ওই কমিটির প্রতি মাসে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠানোর কথা। তবে প্রশিক্ষণ ছাড়া সব কার্যক্রমই চলছে নামমাত্র। জানতে চাইলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক (ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি) মুহাম্মদ তাহের হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রতিটি প্রশিক্ষণেই ইমামদের সচেতনতার বিষয়ে বলা হয়। তাঁরা বয়ানে কোরআন হাদিসের আলোকে কিভাবে বলবেন, তা বইয়ে লেখাও আছে। এসব প্রশিক্ষণ ইমামদের সচেতন করে তুলেছে। এখন কোনো ইমাম জঙ্গি সংগঠনে যুক্ত হচ্ছেন না। তবে তাঁরা কী বয়ান দিচ্ছেন, তা সব সময় আমাদের পক্ষে মনিটর করা সম্ভব নয়।’ কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সারা দেশে আমাদের প্রতিনিধিরা কমিটির মাধ্যমে রিপোর্ট পাঠায়। সেটা নিয়মিত ও পর্যাপ্ত, তা বলব না। এটা লোকাল প্রশাসনেরই দেখার কথা।’

এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের এক শীর্ষ কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেক জেলার এসপিরা একটি নামমাত্র রিপোর্ট দেয়। তবে সেখানে সব তথ্য সন্তোষজনকই থাকে। কারণ একটি থানার ২০-২৫ জন পুলিশের পক্ষে গোটা এলাকার শত শত মসজিদে নজরদারি করা সম্ভব না। এখানে সিভিলের লোকজনের সহায়তা নেই। তাই আমাদের লোকজনও উদাসীন।’

রাজধানীর কিছু মসজিদ এবং দেশের কয়েকটি জেলার মসজিদের মুসল্লি, ইমাম ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশির ভাগ মসজিদে সচেতনতার বয়ান হচ্ছে না। রাজধানীর পশ্চিম নাখালপাড়ার বেলাল মসজিদে জুমার নামাজ পড়েন স্থানীয় বাসিন্দা সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বলেন, “উগ্রবাদ নিয়ে ইমাম সহেব সরাসরি কোনো কথা বলেন না। উল্টো তাঁর সব বয়ানেই ‘ইসলামের জন্য জিহাদ করতে হবে, ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র রুখতে হবে’- এমন কথা থাকে!” ওই মসজিদের ইমাম আলহাজ আজিজুল হক বলেন, ‘জিহাদের ব্যাপারে উৎসাহ জোগানোর মতো বক্তব্য দিই না। জঙ্গিবাদ স্পর্শকাতর বিষয় বলে বয়ানে আনতে সাহস পাই না আমি।’ ইমাম হিসেবে কোনো প্রশিক্ষণ পাননি বলেও জানান আজিজুল হক।

জানতে চাইলে তেজগাঁও থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘জঙ্গিবাদ বিষয়ে আমাদের নজরদারি আছে সবখানেই। তবে প্রশিক্ষিত ইমামরা কী বলছেন, সেটা তদারকির দায়িত্ব আমাদের দেওয়া হয়নি।’

চাঁদপুর জেলার বেশির ভাগ মসজিদেই জঙ্গিবিষয়ক সচেতনতামূলক বয়ান হয় না। তবে নজরদারি আছে বলে দাবি পুলিশের। জেলা পুলিশ সুপার আমীর জাফর বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দপ্তর থেকে নির্দেশনা আছে, ইসলাম ধর্ম ব্যবহার করে কেউ যেন জঙ্গিবাদে উৎসাহ না দিতে পারে। এ বিষয়ে আমরা নজরদারি করি।’

ভোলা জেলার বেশ কিছু মসজিদ ঘুরে জুমার বয়ানে ইসলামের পক্ষে জিহাদের পক্ষে কথা বলতে শোনা গেছে। তবে ইমামদের সচেতনতামূলক বয়ান করতে দেখা যায়নি। বোরহানউদ্দিন উপজেলার কুতুবা মিয়াবাড়ী জামে মসজিদের মুসল্লি সিরাজ তালুকদার বলেন, ‘কখনোই জঙ্গি নিয়ে ইমাম সাহেবকে কিছু বলতে শুনিনি।’ ওই মসজিদের ইমাম এম এ বারী বলেন, ‘আমি কোনো প্রশিক্ষণ পাইনি। কেউ আমাকে কখনো বলেনি যে বয়ানে এসব সচেতনতার কথা বলতে হবে।’ বোরহানউদ্দিন থানার ওসি রতন কৃষ্ণ রায় চৌধুরী বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার জানা নেই। আমাকে আগে জানতে হবে।’

কারাগারেও তৎপরতা : সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কঠোর নজরদারি না থাকায় দেশজুড়ে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে জঙ্গিরা। নিজেদের সংগঠিত করতে অনেক জঙ্গি নেতা কারাগার থেকেই নির্দেশনা দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কারাগার থেকে পাঠানো চিঠিতে সাংকেতিক নাম ও ভাষার ব্যবহার করা হচ্ছে। সারা দেশে হামলার পরিকল্পনার ছক সামনে রেখে কর্মী সংগ্রহ করার পাঁয়তারা চলছে। জঙ্গিরা এখন অনলাইনের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। অনেকে ফেসবুকে তথ্য আদান-প্রদান করছে। কয়েক বছরের ব্যবধানে সরকার হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশ (হুজিবি), জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি), জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ (জেএমজেবি), শাহাদাত-ই-আল হিকমা, হিযবুত তাহ্‌রীর, আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকে (এটিবি) নিষিদ্ধ করেছে। তার পরও তাদের কর্মকাণ্ড থেমে থাকছে না। যাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে অনেকেই জামিনে বের হয়ে লাপাত্তা হয়ে যাচ্ছে। গত ১০ বছরে দেশের বিভিন্ন আদালত থেকে জামিন নিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছে ১৮৭ জঙ্গি। তারা কোথায় আছে সে তথ্য নেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কালের কণ্ঠকে বলেন, জঙ্গিদের প্রতিরোধ করতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও এখনো তাদের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি, তা সত্য। তার পরও জঙ্গিদের বড় ধরনের নাশকতা বা বিশৃঙ্খলা চালানোর শক্তি নেই। আরো কিছু সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা আছে। একটি মহল সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে জঙ্গিদের অর্থ দিয়ে সহায়তা করছে। মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সেলটিকে আরো সক্রিয় করার চেষ্টা চলছে। তা ছাড়া কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কর্মকাণ্ড শুরু করার ব্যাপারে আলোচনা চলছে।

কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কাজ শুরু হয়নি : ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানান, জঙ্গিদের কর্মকাণ্ড মনিটর করতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কাউন্টার টেররিজম ইউনিটটি চালু করতে মন্ত্রণালয়কে বারবার অনুরোধ করা হচ্ছে। এ ইউনিটটি চালু হলে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের তৎপরতা অনেকাংশই কমে আসবে।

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি ন্যাশনাল পুলিশ ব্যুরো অব কাউন্টার টেররিজম ইউনিট গঠন করতে বছরখানেক আগে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে অনুমোদন পাওয়ার পরও রহস্যজনক কারণে এর কর্মকাণ্ড চালু হয়নি। এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ‘হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ফোর্স’ নামের বিশেষায়িত বাহিনীর মতোই এই ইউনিট গঠন করা হবে। ২০০৯ সালের ১৫ নভেম্বর ইউনিটটি গঠন করতে পুলিশ সদর দপ্তর একটি প্রস্তাব পাঠায় মন্ত্রণালয়ে। আশা করি, আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে এর কর্মকাণ্ড চালুর ব্যাপারে ইতিবাচক ফল আসবে।

প্রতিরোধ কমিটি প্রায় অকেজো : জঙ্গিদের কর্মকাণ্ড নজরদারি করতে ২০০৯ সালে ১৭ সদস্যবিশিষ্ট ‘জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ এবং প্রতিকার জাতীয় কমিটি’ গঠন করা হয়। এ কমিটিতে সদস্য হিসেবে সংশ্লিষ্ট ১০ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশ প্রধান, র‌্যাব প্রধান, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রধান ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক রয়েছেন। কিন্তু তাঁদের কর্মকাণ্ড নেই বললেই চলে। প্রতিটি জেলায় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের দিয়ে গঠিত কমিটির সঙ্গে মাসে অন্তত একবার করে বৈঠক করার কথা; কিন্তু তা হয় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *