ঢাকা: প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনসহ লেখক-ব্লগারদের হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে সরকারকে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম বেঁধে দিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ।
শুক্রবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে মঞ্চের উদ্যোগে আয়োজিত ‘মুক্তচিন্তার সংহতি সমাবেশ’ থেকে এ আল্টিমেটাম বেঁধে দেওয়া হয়।
সাম্প্রদায়িক হামলায় নিহত মুক্তমনা লেখক অভিজিৎ রায়ের বাবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. অজয় রায়ের সভাপতিত্বে সংহতি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার, ডাকসুর সাবেক ভিপি অধ্যাপক মাহফুজা খানম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, মহিলা পরিষদ সভাপতি আয়শা খানম, নিজেরা করি’র নির্বাহী পরিচালক খুশী কবির, ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, উদীচীর সহ-সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম, নাট্যকার আজাদ আবুল কালাম, শ্রাবণ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী রবীন আহসান, শিল্পী মাহমুদুজ্জামান বাবু প্রমুখ।
ডা. ইমরা এইচ সরকার বলেন, খুনিদের গ্রেফতারের জন্য সরকারকে ১৫ দিন সময় বেঁধে দিচ্ছি। এর মধ্যে কেউ গ্রেফতার না হলে ২০ নভেম্বর সমাবেশের আয়োজন করা হবে। সেখান থেকে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
তিনি ঘোষণা দেন, খুনিদের গ্রেফতার দাবিতে ৯ নভেম্বর বিকেল ৩টায় শাহবাগে সমাবেশ ও আলোর মিছিল হবে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪টায় হবে প্রতিবাদী সংস্কৃতিক সমাবেশ। এরপর ২০ নভেম্বর গণসমাবেশের আয়োজন করা হবে। ১ ডিসেম্বর থেকে পুরো মাসজুড়ে স্কুল ও কলেজে সেমিনার করা হবে।
খুনিদের বিচার চেয়ে আমাদের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে একই কথা বারবার বলতে হয়েছে উল্লেখ করে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র বলেন, কোনো হত্যার প্রতিকার বা বিচার আমরা পাইনি। সরকারের পক্ষ থেকে অনেক আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু খুনিদের গ্রেফতার করা যাচ্ছে না। জঙ্গিরা মনে করছে, তারা আক্রমণ চালাতে পারে। সরকারের নানামুখী বক্তব্যের মাধ্যমে এই আক্রমণকে আরও উৎসাহিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী জঙ্গিবাদী শক্তি দমনের যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসেছিল, বর্তমানে তারা ঠিক উল্টো পথেই চলছে।
জঙ্গি দমনে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে ডা. ইমরান বলেন, সরকারের প্রতি আহ্বান জানাবো, আর তাকিয়ে থাকবেন না, আর কারও ওপর দোষ চাপাবেন না, ঘটনা অস্বীকার করবেন না। এদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিন। সন্ত্রাস ও ধর্মের নামে হত্যাকাণ্ড বাড়ার সুযোগ করে দেবেন না। এদের লাগাম টেনে ধরুন। না হলে জনগণ আপনাদের কখনও ক্ষমা করবে না।
তিনি বলেন, গত কয়েক মাসে আমাদের পাঁচজন সহযোদ্ধাকে হারিয়েছি। এর প্রতিবাদে সমাবেশ, বিক্ষোভসহ বিভিন্ন কর্মসূচি আমরা পালন করেছি। সর্বশেষ দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় আমরা অর্ধদিবস হরতালও পালন করি।
গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র অভিযোগ করেন, সরকার জঙ্গিবাদ দমনে তৎপর নয়। এর বিপরীতে যারা জঙ্গিবাদ দমনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভিন্নমত পোষণ করেন, সরকার তাদের দমনে উৎসাহ নিয়ে কাজ করে।