রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক রাতে দুই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, পুড়ে গেছে হাসপাতাল

Slider চট্টগ্রাম


কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক রাতে পৃথক স্থানে ৫ ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) ভোর আনুমানিক ৫টার দিকে উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের মধুরছড়া ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি ব্লকের একটি হাসপাতালে আগুনের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিস ও ব্লকের বাসিন্দাদের প্রায় আড়াই ঘণ্টার সমন্বিত প্রচেষ্টায় সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও হাসপাতালটি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং পুড়ে গেছে মূল্যবান চিকিৎসা সামগ্রী।

২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার থেকে নতুন করে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর আগমন ঘটলে ওবাট হেলথ পোস্ট নামে হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করে দাতব্য সংস্থা ওবাট হেলপারস ইউএসএ। বর্তমানে হিউম্যান ইন্টারন্যাশনাল ইউএসএ নামে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার অনুদানে ওবাট হেলপারস বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রটি ক্যাম্প প্রশাসনের সহায়তায় পরিচালনা করছে।

ওবাটের হেলথ কো-অর্ডিনেটর ডা. মাহামুদুল হাসান সিদ্দিকী রাশেদ বলেন, আকস্মিক অগ্নিকাণ্ডে পুরো হাসপাতালটি পুড়ে গেছে। কীভাবে আগুন লেগেছে তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। এই হেলথপোস্ট থেকে আশপাশের রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর উপকারভোগীরা বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা পেয়ে থাকেন।

মালয়েশিয়া হাসপাতাল নামে রোহিঙ্গাদের মাঝে ব্যাপক পরিচিত এই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের এমন পরিণতিতে আশাহত হয়েছেন আশ্রিত অনেক রোহিঙ্গা। মোহাম্মদ রফিক নামে ব্লকের এক রোহিঙ্গা বলেন, এই হাসপাতালটি ক্যাম্পের আশ্রয়জীবনে আমার পরিবারের ভরসাস্থল হয়ে উঠেছিল। পুড়ে গেছে দেখে খারাপ লাগছে, কারণ এখান থেকে আমরা নিয়মিত চিকিৎসা নিতাম।

ধারণা করা হচ্ছে, এই অগ্নিকাণ্ডে আনুমানিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। উখিয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ডলার ত্রিপুরা জানান, ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতায় কাজ করছে, কেউ আহত নেই। কীভাবে আগুন লেগেছে, তা পরে বলা যাবে।

এর আগে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে কুতুপালং নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বি ব্লকে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুড়ে যায় ৫টি ঘর।

গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর কুতুপালং ১ ডব্লিউ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সহস্রাধিক ঘর পুড়ে যায় এবং নিহত হয় একজন। শীতের মৌসুমে আকস্মিকভাবে বারবার এমন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *