
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর শীর্ষ জুলাই যোদ্ধাদের অনেকের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এজন্য তাদের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
পুলিশ বলছে, হাজার হাজার জুলাই যোদ্ধার নিরাপত্তা ব্যক্তি পর্যায়ে বা আলাদা করে নিশ্চিত করা প্রায় অসম্ভব। তবে হাদির মতো যারা নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছেন, অথবা ‘গান পয়েন্টে’ আছেন, তাদের নিরাপত্তা জোরদারের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) এস এন মো. নজরুল ইসলাম।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর হামলার তদন্ত সংক্রান্ত সর্বশেষ পরিস্থিতি জানাতে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেল সোয়া ৪টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর থেকেই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে ইতোমধ্যে দুজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। এরা হলেন ফয়সাল করিম মাসুদ ও মোহাম্মদ আলমগীর শেখ।
ঘটনার তদন্তে জানা যায়, সন্দেহভাজন ব্যক্তি হেলমেট পরিহিত অবস্থায় ভুক্তভোগী ওসমান হাদিকে খুব কাছ থেকে গুলি করে। ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন ও শনাক্তকৃত সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তারে ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে এবং অভিযান চলমান রয়েছে। সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা যেন সীমান্ত পার না হতে পারে, সেজন্য তাদের পাসপোর্ট সংগ্রহ করে পাসপোর্ট ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। সীমান্তে অতিরিক্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এছাড়া সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে সহযোগিতার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে শেরপুরের নালিতাবাড়ী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সীমান্ত দিয়ে লোক পারাপারের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আমরা দুজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। তাদের নিয়ে আসা হচ্ছে। আর র্যাব মোটরসাইকেলের মালিককে আটক করে থানায় সোপর্দ করেছে।
অস্ত্রের ধরন জানতে চাওয়া হলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ফয়সালকে নভেম্বর মাসে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন ও চাঁদাবাজির মামলা আছে। দুটি মামলায় জামিনে বের হয়ে সে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
নিরাপত্তা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম বলেন, গতকাল ভিপি নূর একটা বক্তব্য দিয়েছেন। জুলাই যোদ্ধা এক হাদি না, হাজারো, লাখো জুলাই যোদ্ধা আছে। এই লাখো জুলাই যোদ্ধার ইন্ডিভিজুয়াল সিকিউরিটি নিশ্চিত করা প্রায় অসম্ভব। তবে সার্বিক সিচুয়েশনটা আমরা সিকিউর করতে হবে। রাষ্ট্রকে সিকিউর করতে হবে। রাজধানীকে সিকিউর করতে হবে। আমরা এই কাজটাই করছি।
তিনি আরও বলেন, এ রকম যারা হাই-প্রোফাইল আছেন, যাদের স্পেসিফিক এই ধরনের সিকিউরিটি থ্রেট আছে, তাদের নিয়ে আমরা অ্যানালাইসিস করছি। খুব কাছাকাছি তাদের জন্য সিকিউরিটি অ্যারেঞ্জমেন্ট করা যায় কি না! অলরেডি এটার প্রক্রিয়া চলছে। যাদেরকে আমরা এরকম হাই থ্রেট মনে করছি, তাদেরকে আমরা পার্সোনাল সিকিউরিটি দেব। তবে সবার জন্য ইন্ডিভিজুয়ালি এভাবে সিকিউরিটি দেওয়া যাবে না। এটা ওভার-অল সিকিউরিটি সিস্টেমকে ডেভেলপ করে আমরা এই সিকিউরিটিটাকে আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছি।
