স্যার বলে কথা বলতে হবে, বললেন ফাঁড়ির পুলিশ!

Slider গ্রাম বাংলা


ছবি: আওয়ামীলীগ আমলে বাড়িয়া ইউনিয়নে একাধিক হিন্দু-মুসলিম পরিবারের জমিতে জোর করে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন হাবিব-রতন সিন্ডিকেট।

গাজীপুর: স্যার না বলায় গাজীপুর সদর ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম এক নাগরিকের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে গেছেন। একই সঙ্গে মহল্লায় শালিস দরবার করার আগে তার অনুমতি নিতে বলেছেন। সকল কাজে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যানকে সহযোগিতা করার জন্য হুমকিও দিয়েছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

গাজীপুর সদর উপজেলার জয়দেবপুর থানাধীন সদর পুলিশ ফাঁড়িতে( আমতলী) এই ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী কুমুন গ্রামের নুরুল হক নুরু অভিযোগ করেন, তিনি অনেক আগে থেকেই মহল্লায় টুকটাক পারিবারিক শালিস দরবার করেন। অন্যায়ের প্রতিবাদ করা নিয়ে স্থানীয় বাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা হাবিবুর রহমানের সাথে তার দীর্ঘ দিনের বিরোধ। সম্প্রতি একটি ঘটনায় ৬ জুলাই নুরু পুলিশ ফাঁড়িতে যায়। সেখানে সদর ফাঁড়িতে প্রবেশ করার পর ফাঁড়ির ইনচার্জ তাকে সালাম দেয়ার পর স্যার না বলার কারণ জিজ্ঞেস করেন। নুরু স্যার বলবেন কেন জানতে চাইলে পুলিশ অফিসার জাহাঙ্গীর আলম তার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, স্যার বলে কথা বলতে হবে। এলাকায় কোন শালিস দরবার করার আগে তার অনুমতি নিতে হবে। আর চেয়ারম্যানের কাজে সহযোগিতা করতে হবে, বিরোধতিা করা যাবে না। এই সব বলে তাকে ধমক দিয়ে ফাঁড়ি থেকে বের করে দেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সদর পুলিশ ফাঁড়ির অধীন বাড়িয়া ইউনিয়ন মাদকের আঁখড়া। দৈনিক লাখ লাখ টাকার মাদক প্রকাশ্যে বিক্রি হয়। মাদক, জমি দখল, চাাঁদাবাজী সহ নানা ধরণের অপরাধ এখানে নিত্যদিনের ঘটনা। অপরাধপ্রবণ বাড়িয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব। তিনি বাড়িয়া ইউনিয়নের আওয়ামীলীগে সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তার পিএস রতন মিয়া সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির ঘনিষ্টজন। হাবিব ও রতন মিলে এলাকায় একটি ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। তারা অসংখ্য হিন্দু-মুসলিম পরিবারের ধানের জমিতে নিজেদের প্রয়োজনে ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে বাঁধ নির্মান করে আওয়ামীলীগের সময় মাছের খামার করেন। বর্তমান সময়ে এই বাঁধ ভাঙার সরকারী নির্দশ থাকলেও অজ্ঞাত কারণে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ইতোমধ্যে একাধিক মামলার আসামী চেয়ারম্যান হাবিব গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগ করলেও রহস্যজনক কারণে চেয়ারম্যান পদে বহাল আছেন । বাড়িয়া ইউনিয়নে অপরাধ অণুসন্ধানে গিয়ে একাধিক সাংবাদিক মারধরের স্বীকার হলেও হাবিব চেয়ারম্যানের কিছুই হয়নি। যারাই হাবিবের অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করেন তাদেরকেই পুলিশ দিয়ে হয়রানী করার ভীতি বাড়িয়া ইউনিয়নে স্থায়ী হৃমকি হয়ে আছে। যখন যে পুলিশই আমতলী ফাঁড়ির ইনচার্জ হয়ে আসে, প্রথম রাতের পরই সে হাবিব-রতন সিন্ডিকেটের রক্ষক হয়ে যায়। ফলে বর্তমানে হাবিব-রতন সিন্ডিকেটের পাহারাদার সদর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম হাবিবের প্রতিপক্ষ নুরুল হক নুরুর প্রতি এই আচরণ করে হাবিবের সম্রাজ্য নিরাপদ করছেন বলে স্থানীয়দের ধারণা।

এই বিষয়ে চেয়ারম্যান হাবিব ও রতনের সঙ্গে যোগযোগ করে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সদর ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, তিনি কোন নাগরিককে স্যার বলতে বাধ্য করেননি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *