
গাজীপুর: আবু সাঈদ এবং ওয়াসিম আকরামসহ জুলাই আগস্টের ঐতিহাসিক গণ অভ্যুত্থানের সকল শহীদের স্মরণে গাজীপুর মহানগর ছাত্রদলের উদ্যোগে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। আজ বিকাল ৩ টায় গাজীপুর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি এইচ এম আবু জাফর।
তিনি বলেন গত বছর ১৬ জুলাই খুনি ফ্যাসিস্ট হাসিনার পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ, ছাত্রদল নেতা চট্টগ্রামের ওয়াসিম আকরাম শহীদ হন।আবু সাঈদ ও ওয়াসিমের শাহাদাতের মধ্য দিয়ে অরাজনৈতিক কোটা সংস্কার আন্দোলন গণ অভ্যুত্থানে রুপ নেয়।আন্দোলন অগ্নি স্ফুলিঙ্গের ন্যায় ছড়িয়ে পড়ে, ২০০০ এর অধিক মানুষ শহীদ হন এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে খুনি ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়, একটা নতুন বাংলাদেশের জন্ম হয়।আমরা চব্বিশের শহীদদের স্মরণের মাধ্যমে তাদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই,তাদের অবদান আমরা কখনো ভুলবনা। নতুন বাংলাদেশে একটা গোষ্ঠী গণঅভ্যুত্থানের ক্রেডিট নিয়ে দেশের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করছে। আমরা মনে করি গণ অভ্যুত্থান কোন একক দলের সম্পত্তি নয়,গণ অভ্যুত্থান বাংলাদেশের আপামর জনতার।একক দল হিসেবে চব্বিশের গণ অভ্যুত্থানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ছাত্রদল। ছাত্রদলের ১৪২ জন নেতাকর্মী শাহাদাত বরণ করেছেন। সুতরাং ছাত্রদলকে বাদ দিয়ে গণ অভ্যুত্থানের ইতিহাস অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।একটি গুপ্ত সংগঠন গণ অভ্যুত্থানের ক্রেডিট এককভাবে নিতে চায় অথচ তাদের সভাপতি নিজে আন্দোলনে অংশগ্রহণ না করে সব্জি কিনেছে। গণঅভ্যুত্থানের মহান শহীদদের নিয়ে সরকার বিভক্তি ও বৈষম্যমূলক আচরণ করেছে। পাঠ্যপুস্তকে ওয়াসিম আকরাম এর নাম সংযুক্ত করেনি শুধুমাত্র ছাত্রদলের কর্মী বলে যা দু:খজনক। আমরা এই ঘটনার নিন্দা জানাই এবং ভবিষ্যতে যাতে সকল শহীদের সমান মর্যাদা নিশ্চিত করার দাবি জানাই।
মিটফোর্ডে দুই ব্যবসায়ীর ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে সোহাগ হত্যাকাণ্ডের দায় বিএনপির উপর চাপানোর জন্য একটা গুপ্ত বাহিনী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন এই ছাত্রনেতা। তিনি বলেন মিটফোর্ডের ঘটনায় যারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার অপচেষ্টা করেছে, তাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে পুলিশের তদন্তের মাধ্যমে। এই ঘটনায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান কে জড়িয়ে যারা কুরুচিপূর্ণ স্লোগান দিয়েছে তাদের হুশিয়ার করে তিনি বলেন ভবিষ্যতে আর কখনো তারেক রহমান কে নিয়ে এ ধরনের শিষ্টাচার বহির্ভূত স্লোগান দিলে তাদের প্রতিহত করবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
পি আর পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসন করতে চায় জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি সহ ধর্মভিত্তিক পীর ব্যবসায়ীরা।অনেক পীর আছে যাদের মুরিদ আছে ভোটার নাই তারাই পি আর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়। ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের জন্য ওয়াসিম সাঈদ সহ ২০০০ ভাই জীবন দেয়নি। ৩১ দফার ভিত্তিতে একটি সাম্য মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের বাংলাদেশ বিনির্মানে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের কাজ করার আহবান জানান এই ছাত্রনেতা। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কোনো কাজ করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে হুশিয়ার করেন তিনি।
গাজীপুর মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রোহানুজ্জামান শুক্কুর এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মিরণের সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম সম্পাদক এনামুল হক এনাম, গাজীপুর মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র সহ সভাপতি সাইফুল ইসলাম শামীম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক মাহফুজুর রহমান খান, দপ্তর সম্পাদক বোরহান উদ্দিন, সহ দপ্তর সম্পাদক মোবারক হোসেন রাসেল।

