লোহিত সাগরে জাহাজে হামলা, গোলাগুলি চলছে

Slider সারাবিশ্ব


ইয়েমেনের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল লাগোয়া লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক এক জাহাজে হামলা হয়েছে। ব্রিটেনের সমুদ্র নিরাপত্তাবিষয়ক সংস্থা মেরিটাইম ট্রেড অপারেশন এজেন্সি (ইউকেএমটিও) বলেছে, রোববার লোহিত সাগরে ওই জাহাজ লক্ষ্য করে অন্তত আটটি ছোট নৌকা থেকে গুলি এবং রকেটচালিত গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছে।

সংস্থাটি বলেছে, এই ঘটনায় জাহাজে থাকা সশস্ত্র নিরাপত্তাকর্মীরা পাল্টা গুলি চালিয়েছেন এবং এখনও জাহাজে গুলি-পাল্টা গুলি চলছে। তবে এই হামলার দায় তাৎক্ষণিকভাবে কেউ স্বীকার করেনি।

চলতি বছরের এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ের পর থেকে ওই অঞ্চলে এটিই এ ধরনের প্রথম হামলার ঘটনা। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ এবং সম্প্রতি ১২ দিনের ইরান-ইসরায়েল সংঘাত ও যুক্তরাষ্ট্রের ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর মাঝেই রোববার লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ আক্রান্ত হওয়ার খবর এলো।

ব্রিটেনের সমুদ্র নিরাপত্তাবিষয়ক সংস্থা ইউকেএমটিওও অ্যামব্রে বলেছে, ইয়েমেনের হোদাইদা বন্দর থেকে ৫১ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে রোববারের এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে ব্রিটিশ এই দুই সংস্থা আক্রান্ত জাহাজের নাম প্রকাশ করেনি।

ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত শতাধিক সামুদ্রিক হামলা চালিয়েছে। গোষ্ঠীটি বলেছে, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে এই হামলা চালাচ্ছে তারা।

গাজা যুদ্ধকালীন লোহিত সাগর ও এডেন উপকূলে অন্তত দুটি জাহাজ ডুবিয়ে দিয়েছে হুথিরা। পাশাপাশি পশ্চিমা একটি জাহাজ ছিনতাই ও অন্তত চারজন নাবিককে হত্যা করেছে ইয়েমেনের এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী। হুথিদের হামলায় সমুদ্রপথের বৈশ্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্মক ব্যাহত হয়েছে। অনেক কোম্পানি বিকল্প রুট ব্যবহার করে পণ্য পরিবহনে বাধ্য হওয়ায় খরচও বেড়ে গেছে। হুথিদের ক্রমবর্ধমান হামলার জবাবে যুক্তরাষ্ট্রও গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা বৃদ্ধি করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত মে মাসে ইয়েমেনে হুথিদের ওপর বিমান হামলা বন্ধ করার ঘোষণা দেন। ওই সময় তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক পথে হামলা বন্ধ করতে রাজি হয়েছে হুথি বিদ্রোহীরা।

চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র এবং হুথি—কোনও পক্ষই একে অপরকে লক্ষ্য করবে না বলে শর্ত দেওয়া হয়েছে। এমনকি লোহিত সাগর ও বাব আল-মান্দাব প্রণালীতেও হামলা বন্ধ রাখার শর্ত মেনে নিয়ে হুথিরা। সেই সময় এক বিবৃতিতে হুথিদের সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছিল ওমান।

তবে গত জুনে হুথিরা হুমকি দিয়ে জানায়, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি হামলায় যুক্তরাষ্ট্র যদি অংশ নেয়, তাহলে তারা লোহিত সাগরে মার্কিন জাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানাবে। যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় গত মাসে হামলা চালানোর পর হুথিরা সেই হুমকি বাস্তবায়ন করবে কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়।

সূত্র: রয়টার্স।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *