শিশু ধর্ষণকারীর লিঙ্গচ্ছেদে আইনের সুপারিশ মাদ্রাজ হাইকোর্টের

নারী ও শিশু সারাবিশ্ব
rape_169773
ধর্ষণকাণ্ডে জেরবার ভারতে শিশু নির্যাতনকারীদের জন্য এবার কঠোর এক শাস্তির সুপারিশ করলেন আদালত। শিশু ধর্ষণকারীদের আইনের হাত থেকে পার পাওয়া ঠেকাতে লিঙ্গচ্ছেদের সুপারিশ করেছেন মাদ্রাজ হাইর্কোট।
তামিলনাড়ুর এক কিশোরের উপর যৌননির্যাতনের মামলার রায় দেওয়ার সময় রোববার কঠোর এই শাস্তির সুপারিশ করেন মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি এন কিরুবাকারান।
বিচারপতি বলেন, ‘দিনের পর দিন বেড়ে চলা শিশু ধর্ষণের ভয়াবহতা দেখেও আদালত নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করতে পারে না। প্রথাগত আইন কাঙ্ক্ষিত ও ইতিবাচক ফল দিতে যথেষ্ট কঠোর নয়। লিঙ্গচ্ছেদের পরামর্শ বর্বর মনে হতে পারে, তবে বর্বর অপরাধের শাস্তি সুনিশ্চিতভাবেই বর্বর মডেলের হওয়া উচিত। অনেকেই হয়তো এ বিষয়ে একমত নন। তবে সবাইকে সমাজের কঠিন বাস্তবতাটি বুঝতে হবে এবং এধরনের শাস্তির সুপারিশকে সাধুবাদ জানাতে হবে।’
রায় দেওয়ার সময় বিচারপতি কিরুবাকারান শিশু ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় শাস্তির হার উল্লেখ করেন। এতে দেখা যায়, শিশু ধর্ষণে অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার মাত্র ২ দশমিক ৪ শতাংশ; আর ২০০৮ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ভারতে এই অপরাধ বেড়েছে ৪০০ শতাংশ।
বিচারপতি বলেন, ‘শিশুধর্ষণের ক্ষেত্রে লিঙ্গচ্ছেদ একটি অতিরিক্ত শাস্তি হিসেবে গণ্য হবে। এই শাস্তি শিশু নির্যাতনের ঘটনা কমাতে জাদুকরি ফল দিবে বলে নিশ্চিত এই আদালত।’
পোল্যান্ড, রাশিয়া, এস্তোনিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডা, ওরেগন, টেক্সাস, ওয়াশিংটনসহ ৯টি প্রদেশে শিশু ধর্ষণের শাস্তি লিঙ্গচ্ছেদ। এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ায় এ শাস্তি প্রচলিত হয়। এসব দেশে কঠোর এই শাস্তি প্রচলনের পর শিশু যৌননির্যাতনের ঘটনা অনেক কমেছে বলে উল্লেখ করেন বিচারপতি।
শিশু নির্যাতনকারীদের এ ধরনের শাস্তির সুপারিশ ভারতে এবরাই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে নয়া দিল্লিতে মেডিকেল কলেজ পড়ুয়া তরুণী নির্ভয়া ধর্ষণ পরবর্তী সময়ে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতাও এ ধরনের আইন করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
রোববার বিচারপতি তার পর্যবেক্ষণে আরও বলেন, ‘এমন শাস্তির সুপারিশ হয়তো সমালোচিত হবে; একে বর্বর, পশ্চাৎমুখীন, প্রস্তর যুগের ও অমানবিক বলে আখ্যা দিবেন অনেকে। মানবাধিকার কর্মীরা এর সমালোচনা করবেন। কিন্তু যারা লিঙ্গচ্ছেদের মতো আইনের বিরোধীতা করেন তারা শুধু অপরাধীদের মানবাধিকার নিয়েই উদ্বিগ্ন। ভুক্তভোগিদের শারিরীক, মানসিক ট্রমা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন নন। এসব মানবাধিকার কর্মীদের উচিত প্রথমে সেই ভুক্তভোগিদের বাড়ি গিয়ে সহমর্মিতা দেখানো এবং কঠিন ওই সময় কাটিয়ে উঠতে তাদের সাহায্য করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *