গাজীপুর: গাজীপুরের টঙ্গীর মাজার বস্তিতে ঝুট নামানোকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অনন্ত ২০ জন আহত হয়েছে। তার মধ্যে ৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকীদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
আজ বুধবার (১৮ জুন) সকাল থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে।
টঙ্গী সরকারি হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ ইসরাত জাহান বলেন, একই ঘটনায় ১৭ জন আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। তার মধ্যে ৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
টঙ্গী সরকারী হাসপাতালে ভর্তি ৩ জন হলেন৷ সোহেল(৩৪), আবু সাইদ(৩৩) ও আনিস (৪১)। চিকিৎসা নিয়ে চলে যাওয়া আহতরা হলেন,ফাহিম(২১)৷ ইয়াসিন(২০), আসাদ(২০), ইয়াসিন মিয়া(১৮), হানিফ (২৫)৷ শুভ(১৯)৷ রানা(১৮), হাসান(২৪), সবুজ (২৮), লিটন(৩৬), ফেরদৌস (২৫), সজিব(২০), আলমগীর(২৫), উজ্জ্বল রাজ(৩৭), কাউসার(২৮)। বাকীদের নাম পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়রা জানায়, পিমকি অ্যাপারেলস লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানে আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে মোটর শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ওমর ফারুক সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের চাচা মতিউর রহমান মতির আশ্রয়ে ঝুট ব্যবসা করেন। ৫ আগষ্টের পর আওয়ামীলীগ পালিয়ে গেলে টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রাশেদুল ইসলাম কিরণ এই প্রতিষ্ঠানে লিখিত চুক্তিনামা করে ঝুট ব্যবসা করেন। সম্প্রতি টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির বর্তমান সভাপতি সরকার জাভেদ আহমেদ সুমনের পরিচয়ে ৪০/৫০ জন লোক বাঁধা দেয়। দুই পক্ষই ঝুট নিতে কারখানায় প্রবেশ করলে কর্তৃপক্ষ সবাইকে বের করে দেয়। এসময় উত্তেজনা তৈরী হলে কর্তৃপক্ষ ঝুটের মাল দেয়া বন্ধ করে দেয়। অত:পর দুই পক্ষ কারখানার সামনে মুখোমুখি অবস্থান নেয়। বিকেলে তাদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কারখানার সামনে গিয়ে দেখা যায়, বিবদমান দুই পক্ষ কারখানার দুই দিকে বিপরীতমুখি অবস্থানে রয়েছে। দুই পক্ষের মহড়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির বর্তমান সভাপতি সরকার জাভেদ আহমেদ সুমন বলেন, ওমর ফারকের নামে ডিড। তাকে ব্যবসা করতে বাঁধা দেয়া হচ্ছে। মাল আনতে গিয়ে কিরণের লোকজন হামলা করে ৮/১০ জনকে মারধর করে ৬ লাখ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে গেছে।
টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সভাপতি রাশেদুল ইসলাম কিরণ বলেন, আমার নামে ডিড( চুক্তি নামা)। আমি ব্যবসা করছি। কিন্তু আজ সুমন সরকারের লোকজন বাঁধা দিচ্ছেন। আমার কেউ হামলা বা ছিনতাই করেনি। সুমন সরকারের অভিযোগ মিথ্যা। বরং আমার ১০/১২ জন কর্মী আহত হয়েছে বলে দাবী তার।
পিমকি অ্যাপারেলস লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক, (জিএম) মাকসুূুদুর রহমান বলেন, অনেক ডিড হয়েছে। ৫ আগষ্টের পর রাশেদুল ইসলাম কিরণ ডিড করে ঝুটে নেন। গতকাল (১৭ জুন) সুমন সরকারের রেফারেন্সে জনৈক ওমর ফারুক নামে এক জনের নামে নতুন ডিড হয়। আজ ওমর ফারুকের লোকজন মাল নিতে আসলে কিরণের পক্ষ বাঁধা দেয়। এরপর আমরা কাউকেই মাল দিচ্ছি না। এটা নিয়ে আমরা সমস্যায় আছি।
টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান বলেন, যার নামে ডিড সে ব্যবসা করবে। ঝুট নিয়ে ঝামেলা সহ্য করা হবে না। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন মারধর ও ছিনতাইয়ের ঘটনা জানিনা। অভিযোগ দিলে মামলা হবে।