ইসরায়েলে চার দিনে ৩৭০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান

Slider সারাবিশ্ব


মধ্যপ্রাচ্যে আঞ্চলিক দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ইরান ও ইসরায়েলের মাঝে টানা চতুর্থ দিনের মতো হামলা-পাল্টা হামলা চলছে। ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় শুক্রবার ইসরায়েলের হামলার মাধ্যমে শুরু হওয়া এই সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যে চরম উত্তেজনা তৈরি করেছে। আঞ্চলিক এই সংঘাতে বিশ্বের পরাশক্তি দেশগুলোও জড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ইরান-ইসরায়েলের চলমান এই সংঘাতের প্রতি মুহূর্তের লাইভ আপডেট জানতে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে থাকুন।

ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে গত চার দিনে অন্তত ৩৭০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং শত শত বিস্ফোরকবাহী ড্রোন নিক্ষেপ করেছে ইরান। এতে ইসরায়েলের অন্তত ৩০টি সামরিক ও বেসামসরিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইরান ও ইসরায়েলের ক্রমবর্ধমান হামলা-পাল্টা হামলার মাঝে প্রতিবেশী ইরানের সঙ্গে সব সীমান্ত অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে পাকিস্তান। সোমবার পাকিস্তানের প্রাদেশিক কর্মকর্তারা ইরানের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার এই তথ্য জানিয়েছেন।

ইরানের রাজধানী তেহরানের বাসিন্দাদের শারীরিকভাবে কোনও ক্ষতি করার ইচ্ছা নেই বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ওই মন্তব্য করেছেন তিনি।

যদিও এর আগে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, ইসরায়েলিদের ওপর ইরানের হামলার জন্য তেহরানের বাসিন্দাদের ‌‌‘‘মূল্য দিতে হবে।’’

তবে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ এক্সে দেওয়া পোস্টে তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘‘তেহরানের বাসিন্দাদের শারীরিকভাবে ক্ষতি করার কোনও ইচ্ছা আমাদের নেই।’’

ইসরায়েল কাৎজ বলেন, ‘‘তারা (তেহরানের বাসিন্দারা) একনায়কতন্ত্রের খেসারত দিতে বাধ্য হবে। যেখানে ইরানি শাসকগোষ্ঠীর সামরিক ও নিরাপত্তা কাঠামোতে আঘাত হানা আমাদের জন্য জরুরি হবে, সেসব এলাকা থেকে তাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হওয়া লাগতে পারে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ইসরায়েলের নাগরিকদের রক্ষার কাজ চালিয়ে যাবো।’’
ইরানের ১২০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার ধ্বংস করার দাবি করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। গত সপ্তাহের শেষ দিকে ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর থেকে এসব লঞ্চার ধ্বংস করা হয়েছে; যা ইরানের মোট ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চারের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর কর্মকর্তা এফি ডেফরিনের বরাত দিয়ে সোমবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ডেফরিন বলেছেন, কেবল রোববার রাতেই ইসরায়েলি বিমান বাহিনী ইরানের ২০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার ধ্বংস করেছে। ধ্বংস করা না হলে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের জন্য কয়েক মিনিটের মধ্যেই এসব লঞ্চার ব্যবহার করা হতো।

তিনি বলেন, ইসরায়েল প্রায় ৫০টি যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ইরানের মধ্যাঞ্চলের ইসফাহান শহরের অন্তত ১০০টি সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে একযোগে হামলা চালিয়েছে। এসব লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র মজুদ কারখানা, লঞ্চার এবং কমান্ড সেন্টার রয়েছে।

ইসরায়েল এবং ইরানের মধ্যে চলমান ব্যাপক সংঘাতের মধ্যেই দক্ষিণ চীন সাগরে নির্ধারিত গন্তব্য বাতিল করে মধ্যপ্রাচ্যের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে যুদ্ধজাহাজ বহনকারী রণতরী ইউএসএস নিমৎজ। আন্তর্জাতিক জাহাজ ট্র্যাকিং সংস্থা মেরিন ট্রাফিকের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) গোয়েন্দা বিভাগের প্রধানসহ চার শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে হত্যার তথ্য নিশ্চিত করেছে ইসরায়েল। সোমবার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

আইডিএফ বলেছে, যুদ্ধবিমান থেকে চালানো ওই হামলায় তেহরানের একটি ভবন লক্ষ্যবস্তু করা হয়। সেখানে একাধিক ইরানি গোয়েন্দা কর্মকর্তা বৈঠকে বসেছিলেন। ওই হামলায় নিহত হয়েছেন আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ কাজেমি, গোয়েন্দা কর্মকর্তা হাসান মোহাকিক, কুদস ফোর্সের গোয়েন্দা প্রধান ও আরেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা।

এর আগে, রোববার ইরানের সরকার কাজেমি, মোহাকিক ও অপর এক গোয়েন্দা কর্মকর্তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে। আইডিএফ বলেছে, ‘‘এই শীর্ষ কর্মকর্তারা ইরানে নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিশ্লেষণ এবং ইসরায়েল, পশ্চিমা দেশসমূহ ও এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিকল্পনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *