রমজান আলী রুবেল,শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুরে নান্দিয়া সাঙ্গুন আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার নিলামের টাকা ও মসজিদের ফান্ডের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে কাওরাইদ ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য মাইজুদ্দিন বি.এস.সি-এর বিরুদ্ধে।গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের নান্দিয়া সাঙ্গুন আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার পুরনো ভবন পরিত্যক্ত হওয়ায় সেটি নিলামে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। ২৪শে ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নিলামে অংশগ্রহণকারীরা ২৫ হাজার টাকা করে ৭ জন জামানত প্রদান করেন, নিলাম শেষে পাঁচ জনের টাকা ফেরত দেওয়া হলেও দুইজনের টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি। এ ঘটনার মাদ্রাসার সহকারি সুপার, নিলামের টাকা উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে, শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযুক্ত বিএনপি’র সদস্য মাইজুদ্দিন বি.এস.সি মাদ্রাসার শিক্ষকদের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক সেই জামানতের টাকা ছিনিয়ে নিয়েছেন।অন্যদিকে, স্থানীয় মসজিদের সাধারণ সম্পাদক রাজনৈতিক মামলায় কারাগারে থাকায় মসজিদের ফান্ডে থাকা সাড়ে ছয় লক্ষ টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে মসজিদ কমিটির রেজুলেশন খাতা নিজের দখলে রাখার অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে শুধু তাই নয় মাদ্রাসার গাছ বিক্রি করে আরো ১৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। যদিও মাইজুদ্দিন কোনোভাবেই মসজিদ বা মাদ্রাসা কমিটির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন, তবুও তিনি ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে এসব অনৈতিক কাজ করে চলেছেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। মসজিদ ও মাদ্রাসার ইমাম-শিক্ষকরা মাইজুদ্দিনের কাছে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি নিজেকে মসজিদ-মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা দাবি করেন।
এবিষয়ে, শ্রীপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, নিলামের ডাকে যে টাকা উঠেছে সেটা সত্য আমি নিলামে উপস্থিত ছিলাম মাইজুদ্দিন আমার অফিসে এসে নিলামের টাকা ফেরৎ দিবে বলে বাসায় গিয়ে উল্টো মাদ্রাসার কাছে টাকা পাবেন বলে টাকা আর দেননি।
নান্দিয়া সাঙ্গুন আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার নিলামের টাকা ও গাছ বিক্রির টাকা আত্মসাৎ এর বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন, মাদ্রাসার সহকারী সুপার। মাদ্রাসার টাকা উদ্ধারের জন্য অভিযুক্ত বিএনপি নেতাকে কয়েকবার বলা হয়েছে টাকাটা কয়েকদিন আগে দেয়ার কথা থাকলেও, অভিযুক্ত বিএনপি নেতা দিচ্ছেন না এ বিষয়ে মাদ্রাসার সহকারী সুপারকে বলে দেওয়া হয়েছে,মাদ্রাসার টাকা উদ্ধারের জন্য অভিযুক্ত বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা করে হলেও টাকা উদ্ধার করতে হবে। এ বিষয়ে ইউনো স্যারের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া।
এ ব্যাপারে কাওরাইদ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এমদাদ হোসেন মন্ডল বলেন মাইজুদ্দিন বিএসসি বর্তমানে আমাদের ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য বটে। তবে, সে যদি নান্দিয়া সাঙ্গুন আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় জড়িত থাকে। সেই সাথে বিএনপি’র নাম ভাঙ্গিয়ে কোনো প্রকারের অন্যায় অপরাধের সাথে জড়িত থাকে। দল তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
শ্রীপুর উপজেলার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আক্তারুল আলম মাস্টার বলেন,মাইজুদ্দিন বিএসসি নান্দিয়া সাঙ্গুন আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় জড়িত আছে কিনা তা আমার জানা নেই। দলীয়ভাবে তদন্ত করে দলীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। স্থানীয়রা জানান, মাইজুদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত। মসজিদ ও মাদ্রাসার সম্পদ আত্মসাৎ করার বিষয়টি অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। তারা প্রশাসনের কাছে এর সুষ্ঠু তদন্ত ও আইনি ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন।
এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এলাকাবাসী। নান্দিয়া সাঙ্গুন আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষকরাও এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং তারা মাইজুদ্দিনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাইজুদ্দিন বলেন,আমার নামে আনিত অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট আমি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার। ঘটনা পুনরায় যাতে না ঘটে, সে বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন এলাকাবাসী।