মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লায় পিছিয়ে থাকলেও বাড়ছে তারযুক্ত ‘ফিক্সড ব্রডব্যান্ড’ গ্রাহকের সংখ্যা।
এক মাসেই এ ধরনের ব্যবহারকারী বেড়েছে প্রায় ৪৭ শতাংশ।
টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর শেষে দেশে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (আইএসপি) এবং পাবলিক সুইচড টেলিফোন নেটওয়ার্কের (পিএসটিএন) গ্রাহক সংখ্যা ১৯ লাখ ছাড়িয়েছে।
অগাস্টে এই গ্রাহক সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ। এ হিসাবে এক মাসে গ্রাহক সংখ্যা বেড়েছে ৬ লাখ।
আর ২০১৪ সালের একই সময়ে এই গ্রাহক সংখ্যা ছিল ১২ লাখ ৩২ হাজার, ২০১৩ সালে ছিল ১২ লাখ ২৩ হাজার।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি এম
এ হাকিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তারযুক্ত ফিক্সড ব্রডব্যান্ড প্রকৃত গ্রাহক সংখ্যা বিটিআরসি-এর হিসাবের চেয়ে বেশি হবে। আইএসপিগুলো যদি সঠিক হিসাব দেয় তাহলে এ সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০ লাখের মতো হতে পারে।”
বাসাবাড়িতে তারযুক্ত ফিক্সড ব্রডব্যান্ড গ্রাহক সংখ্যা বাড়ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “লাইসেন্সবিহীন বা অবৈধভাবে এলাকাভিত্তিক যারা ইন্টারনেট ব্যবসা করছে, তাদের যদি নিয়ন্ত্রণ করা গেলে গ্রাহক সংখ্যা আরও বাড়ত এবং ভাল মানের ইন্টারনেট সেবা দেওয়া যেত।”বিটিআরসি-এর হিসাবে মাসে ছয় লাখ গ্রাহক বাড়লেও মোবাইল ইন্টারনেটের তুলনায় এ খাত এখনও অনেক পিছিয়ে।
গত সেপ্টেম্বর শেষ নাগাদ দেশে মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা এক মাসে ১৮ লাখ বেড়ে ৫ কোটি ৪০ লাখ ছাড়িয়েছে। তবে ওয়াইম্যাক্সের গ্রাহক পতনের ধারা অব্যাহত রয়েছে।
এক মাসে ওয়াইম্যাক্স ইন্টারনেটের গ্রাহক ১ লাখ ৬৮ হাজার থেকে ৩ হাজার কমে ১ লাখ ৬৫ হাজার হয়েছে।
গত বছর একই সময়ে এই গ্রাহক সংখ্যা ছিল দুই লাখ ৬২ হাজার, ২০১৩ সালে ছিল দুই লাখ ২৩ হাজার।
এদিকে লাইসেন্সবিহীন বা অবৈধ ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী (আইএসপি) প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সেপ্টেম্বর থেকে অভিযান শুরু করছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।
এসব প্রতিষ্ঠানের বাধার কারণে বিভিন্ন এলাকায় বাসাবাড়িতে সংযোগ দেওয়া যাচ্ছে না বা সংযোগ লাইন নিয়ে যাওয়া যায় না অভিযোগ করে এম এ হাকিম বলেন, সাধারণত সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে যুক্ত বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান (আইআইজি) থেকে আইএসপি হয়ে তারযুক্ত ইন্টারসেবা বাসাবাড়িতে যায়। এ ধরনের সংযোগে নিরবচ্ছিন্ন ও উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা পাওয়ার কথা।
বিটিআরসি-এর হিসাবে বর্তমানে দেশে ৪৯০টি আইএসপি ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে।
আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সংস্থা (আইটিইউ) ও ইউনেসকো প্রকাশিত ‘দ্য স্টেট অব ব্রডব্যান্ড ২০১৫’ শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোবাইল ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারে বিশ্বের ১৮৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৯ তম।এই তালিকায় ভারত ১৫৫ ও পাকিস্তান রয়েছে ১৫৬ তম অবস্থানে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ প্রতি ১০০ জনে তারযুক্ত ফিক্সড/ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারে গত বছরের চেয়ে চার ধাপ এগিয়ে ১৩২তম অবস্থানে উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান (১৩৫), নেপাল (১৩৯), মিয়ানমার (১৫১) ও আফগানিস্তানসহ (১৮৫) ৫৭টি দেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে।
এ দিক দিয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাসাবাড়িতে ইন্টারনেট সংযোগের হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান ১০১তম এবং এর হার ৬ দশমিক ৫ শতাংশ, যা ২০০৪ সালে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ ছিল।