চট্টগ্রাম: আকরাম খান, মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, নাফিস ইকবাল, আফতাব আহমেদ আর বাংলাদেশের তারকা ব্যাটসম্যান তামিম ইকবালের পর গত বেশ কয়েক বছরে চট্টগ্রাম থেকে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে কোনো ক্রিকেটারকেই দেখা যাচ্ছে না আর। একসময় নাফিস ইকবাল ও তামিম ইকবাল এ দুই ভাই জাতীয় দলের জার্সি গায়ে খেললেও তামিম যখন বাইশ গজের ক্রিজে দ্যুতি ছড়াতে শুরু করেন, ঠিক তখনই ক্রিকেট থেকে হারিয়ে যেতে বসেন তার বড় ভাই নাফিস।
এরপর কিছুদিন ধুমধাড়াক্কা ক্রিকেট খেলে ভারতের এক বির্তকিত লীগ (আইসিএল) খেলে ক্রিকেট থেকেই হারিয়ে গেছেন চট্টগ্রামের আরেক কৃতি ক্রিকেটার আফতাব আহমেদ। সেগুলোও বছর সাতেক আগের ঘটনা। এরপর থেকে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চট্টগ্রামের কোনো ক্রিকেটারকেই আর মাঠ মাতাতে দেখা যায়নি। শুধুমাত্র তামিম ইকবালই লাল সবুজের জার্সি গায়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে চট্টগ্রামের প্রতিনিধিত্ব করছেন। যেন তামিমই চট্টগ্রামের সবেধন নীলমণি!
তবে জাতীয় ক্রিকেট দলে চট্টগ্রামের প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে এবার নতুন মিশন নিয়ে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন তামিম ইকবাল। সেই মিশন সফল করতে তামিম আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে নিজের পিতা সাবেক ফুটবল খেলোয়াড় মরহুম ইকবাল খানের নামে বয়সভিত্তিক তিনটি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
অনুর্ধ্ব ১৩, ১৫ ও ১৭ বয়স ভিত্তিক এই তিনটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করার মধ্যে দিয়ে চট্টগ্রামের প্রতিভাবান ক্রিকেটার খোঁজা হবে। যেটি পরপর তিন বছর টানা চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্য থেকে চট্টগ্রাম থেকে প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের বাছাই করার কাজটি করবেন জাতীয় দলের এই ড্যাশিং ওপেনার।
মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে জাতীয় ক্রিকেট লীগের চট্টগ্রাম বনাম রাজশাহীর মধ্যকার ম্যাচ চলাকালীন উপস্থিত সাংবাদিকদের তামিম ইকবাল তার এ পরিকল্পনার কথা জানান।
২৭ বছর বয়সী বাঁ-হাতি বাংলাদেশের তারকা ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল নিজের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘আমার পর সর্বশেষ চট্টগ্রাম থেকে আর কোনো খেলোয়াড় জাতীয় ক্রিকেট দলে খেলেননি। আগে এক সময় চট্টগ্রামের একাধিক খেলোয়াড় জাতীয় দলের হয়ে খেললেও এখন সেটি মাত্র একজনে এসে দাঁড়িয়েছে। চট্টগ্রামের সেই হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে, জাতীয় দলে চট্টগ্রামের ক্রিকেটারদের প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে আমি বেশ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।’
কী কী পরিকল্পনা নিয়েছেন তামিম? সেগুলো নিজেই জানালেন, ‘আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে আমার বাবা মরহুম ইকবাল খানের নামে তিনটি বয়স ভিত্তিক ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চালু করব। আমার ধারণা অনুর্ধ্ব ১৩, ১৫ ও ১৭- বয়সভিত্তিক এই তিনটি টুর্নামেন্টের মধ্য দিয়ে বেশ কিছু প্রতিভাবান খেলোয়াড় আমরা পাব। যেটি ধারবাহিকভাবে আমি তিন বছর আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তামিম বলেন, ‘পরিকল্পনাটি প্রায় চূড়ান্ত হলেও মাঠ ও স্পন্সর নিয়ে এখনো কথাবার্তা চলছে। প্রাথমিকভাবে সাগরিকা মহিলা কমপ্লেক্স বা দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠে টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য টার্গেট করা হয়েছে। এছাড়া আমি ব্যক্তিগতভাবে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত থাকায় আশা করছি তারাও এই টুর্নামেন্টের স্পন্সর হিসেবে সহযোগিতা করবে। আগামী ৫ জানুয়ারি আমার বাবার মৃত্যুবার্ষিকী। ওই দিন টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা বা উদ্বোধনী ম্যাচ রাখার চিন্তা রয়েছে। এরপর আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে যাবে।’
এসময় অরো উপস্থিত ছিলেন, সাবেক ক্রিকেটার ও কোচ নুরুল আবেদীন নোবেল, কোচ মোমিনুল হক, কোচ মর্তুজা রায়হান মিঠু, সিজেকেএসের ক্রিকেট কমিটির যুগ্ম সম্পাদক শওকত হোসেন প্রমুখ।