আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও তবে নিষিদ্ধ হচ্ছে সাকিবের বোলিং?

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

দিনভর নাটকীয়তা, উড়ো খবর আর অপেক্ষার পর রাতে ইংল্যান্ড থেকে ভেসে এলো বাংলাদেশ ক্রিকেটে গতকালের সবচেয়ে বড় খবরটা। যেখানে বলা হয়েছে, সাকিব আল হাসানের বোলিং অ্যাকশন অবৈধ। কাউন্টি ক্রিকেটে সারের হয়ে বল করতে গিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল বাংলাদেশি বোলারের বোলিং অ্যাকশন। পরীক্ষা শেষে জানা গেল, সত্যিকার অর্থেই আইসিসির লিগ্যাল ডেলিভারির যোগ্যতা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছেন সাকিব।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ইংলিশ ক্রিকেটের ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় নিষিদ্ধ হচ্ছে সাকিব আল হাসানের বোলিং। বার্মিংহ্যামের লাফবরো বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় ১৫ ডিগ্রির বেশি কনুই বাঁকানোয় এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে সাকিবকে। সেটি থেকে মুক্ত হতে সাবেক এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে আবারও পরীক্ষায় বসতে হবে।

তবে ঘটনা এখানেই শেষ নয়। ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের এই সিদ্ধান্তের ডোমিনো ইফেক্ট আরও বড়। আইসিসির নিয়মের প্যাঁচ বলছে, সাকিবের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারেও পড়বে এর ধাক্কা। বাংলাদেশের জার্সিতেও বোলিং করার ক্ষেত্রে সাকিব আল হাসান পড়বেন বাধার মুখে। ‘আইসিসি রেগুলেশন্স ফর দ্য রিভিউ অব বোলার্স রিপোর্টেড উইথ সাসপেক্ট ইলিগ্যাল বোলিং অ্যাকশনস’ আইনে আটকে যাচ্ছেন সাকিব।

আইনের ১১.৩ ধারায় বলা হয়েছে, ‘একটি জাতীয় ক্রিকেট ফেডারেশন যদি কোনো বোলারকে তাদের নিজস্ব নীতিমালার অধীনে ঘরোয়া ক্রিকেটে নিষিদ্ধ করে এবং সেই নিষেধাজ্ঞা যদি স্বীকৃত পরীক্ষাগারে মানসম্মত বিশ্লেষণ-বিধি অনুযায়ী করা হয়, তাহলে সেই নিষেধাজ্ঞাকে আইসিসি আমলে নেবে এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আরোপ করবে।’

একই অনুচ্ছেদের শেষদিকে বলা হয়েছে, ‘অতিরিক্ত কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া সব জাতীয় ক্রিকেট ফেডারেশন এবং তাদের অধীনস্থ ঘরোয়া ক্রিকেটেও একই নোটিশ স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে। আইসিসি এবং জাতীয় ক্রিকেট ফেডারেশনগুলো সিদ্ধান্ত আরোপ ও কার্যকরের জন্য সব পদক্ষেপ বিধিসম্মতভাবে নেবে।’

যার অর্থ, আগামী দিনগুলোতে সাকিবকে বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজ লিগে নাও দেখা যেতে পারে। এমনটাই যদি হয়, তবে সাকিবের ক্যারিয়ারই প্রায় শেষ বলা চলে। কারণ, চোখের সমস্যার কারণে প্রায় ১ বছর ধরেই সাকিবের ব্যাটে ধার নেই। বোলিংটাই ছিল তার কার্যকরী অস্ত্র। এবার সেই অস্ত্রেও ধরা পড়ল ত্রুটি।

অবশ্য আশার কথা, সাকিব ঘরোয়া আয়োজনে খেলতে পারবেন, সেক্ষেত্রে কোনো সমস্যা থাকছে না। নীতিমালার ১১.৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে, ‘১১.১ ও ১১.৩ অনুচ্ছেদ অনুসারে সাসপেন্ড হওয়া সত্ত্বেও খেলোয়াড়কে নিজ দেশের জাতীয় ক্রিকেট ফেডারেশন নির্দিষ্ট সীমারেখা বজায় রেখে ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় বোলিং চালিয়ে যেতে অনুমতি দিতে পারবে।’

কিন্তু সাকিব আল হাসান আদতে সেই সুযোগ পাবেন কি না তা নিয়েও আছে প্রশ্ন। কারণটা রাজনৈতিক। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে নিজের শেষ টেস্ট খেলতে দেশে আসতে চেয়েছিলেন সাকিব। পারেননি ৫ই আগস্ট পরবর্তী সময়ে তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাওয়া জনরোষের কারণে। বিপিএলে অংশগ্রহণটাও তাই অনিশ্চিত তার জন্য। সবমিলিয়ে অনিশ্চিত হয়ে গেল এই অলরাউন্ডারের ক্যারিয়ারের শেষ অধ্যায়টাও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *